ইরন, ত্রালুস, শুমান্তি এবং নিশি পৃথিবীতে আবার তাদের জীবন শুরু করেছে। পৃথিবীর হিসেবে তারা তিন–চার দিনের জন্য অনুপস্থিত ছিল, আবার জীবন শুরু করার কোনো সমস্যা হয় নি। ত্রানুস এবং মান্তি সৌরশক্তির একটি কারখানায় কাজ নিয়েছে। পরিচয়হীন দুজন মানুষের রেজিস্ট্রেশনের জন্য কিছু কাঠখড় পোড়াতে হয়েছে, কিন্তু যেটুকু সমস্যা হওয়ার কথা ছিল সেটুকু হয় নি। কারণটি এখনো কারো জানা নেই। ত্ৰালুস এবং শুমান্তি আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো ঘোষণা করে নি, কিন্তু ইরন মোটামুটি নিশ্চিত তারা জীবনের সঙ্গী হিসেবে একজন আরেকজনকেই বেছে নেবে।
ইরন আবার তার গবেষণা কেন্দ্রে যোগ দিয়েছে। তার যেসব কাজ পুরোপুরি ব্যর্থতা বলে পরিচিত হয়েছিল হঠাৎ করে সেগুলো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কাজ বলে বিবেচিত হচ্ছে। ওয়ার্মহোলের ওপর তার গবেষণাটি কেন্দ্রীয় বিজ্ঞান একাডেমি অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে নিয়েছে। গবেষণাটি পরীক্ষা করে দেখার জন্য প্রয়োজনীয় ইউনিট বরাদ্দ করা হবে বলে অনুমান করা হচ্ছে।
ইরন প্রজেক্ট আপসিলন নিয়ে তথ্য কেন্দ্রে একটু খোঁজ নেওয়ার চেষ্টা করেছিল কিন্তু বিশেষ কোনো তথ্য পায় নি। তবে বিজ্ঞান একাডেমিকে প্রতারণা করে একটি অনৈতিক বেআইনি এবং মহাকাশ অভিযান পরিচালনা করার জন্য মহাকাশ কেন্দ্রের দুজন বড় কর্মকর্তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে একটি বুলেটিন চোখে পড়েছে। একজন বৃদ্ধ এবং অন্য একজন মধ্যবয়স্ক কর্মকর্তা ঠিক কী ধরনের অনৈতিক অভিযান পরিচালনা করেছে সে সম্পর্কে কিছু লেখা হয় নি, কিন্তু ইরন মোটামুটি নিঃসন্দেহ তারা প্রজেক্ট আপসিলনের সঙ্গে জড়িত। ব্যাপারটি নিয়ে একটি তথ্য–অনুসন্ধান কমিটি কাজ শুরু করেছে। ইরন লাল তারকাযুক্ত একটি চিঠি পেয়েছে যেখানে তার কাছ থেকে সহযোগিতা আহ্বান করা হয়েছে। ইরন তথ্য–অনুসন্ধান কমিটিকে জানিয়েছে তাদেরকে সহযোগিতা করার মতো কোনো তথ্য তার জানা নেই।
ইরন সম্ভবত পুরো ব্যাপারটি প্রকাশ করে দিত কিন্তু একটি বিশেষ কারণে সেটি গোপন রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কারণটির সাথে নিশির একটি ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে।
পৃথিবীতে ফিরে আসার কিছুদিন পর ইরন নিশির সাথে দেখা করতে গিয়েছিল। তাকে দেখে নিশি অত্যন্ত খুশি হয়ে ছুটে এসেছিল। ইরন তার জন্য উপহার হিসেবে জেড পাথরের তৈরি হরিণের একটি ছোট মূর্তি এনেছিল। পকেট থেকে বের করে সে যখন মূর্তিটা নিশির দিকে এগিয়ে দিল, নিশির চোখ বিস্ময়ে বিস্ফারিত হয়ে যায়। ইস্! কী সুন্দর বলে মূর্তিটা নেওয়ার জন্য নিশি তার হাত বাড়িয়ে দিল।
ইরন চমকে উঠল। কারণ নিশি তার যে হাতটি বাড়িয়ে দিয়েছে সেটি ছিল তার ডান হাত।