কারোর কিছু চাই গো চাই?
বৌমা কি চাও শুনতে পাই?
ছিটের কাপড় চিকন লেস্
ফ্যান্সি জিনিস ছুচের কেস্
আল্তা সিঁদুর কুন্তলীন
কাঁচের চুড়ি বোতাম পিন?
আমার কাছে ওসব নাই,
কারোর কিছু চাই গো চাই?
কারোর কিছু চাই গো চাই?
আপনি কি চান কর্তামশাই?
পকেট বই কি খেলার তাস
চুলের কলপ জুতোর ব্রাশ্
কলম কালি গঁদের তুলি
নস্যি চুরুট সুর্তি গুলি ?
ওসব আমার কিছুই নাই,
কারোর কিছু চাই গো চাই?
কেন সব কুকুরগুলো
কেন সব কুকুরগুলো খামাখা চ্যাঁচায় রাতে?
কেন বল দাঁতের পোকা থাকে না ফোক্লা দাঁতে?
পৃথিবীর চ্যাপ্টা মাথা কেন সে কাদের দোষ?-
এস ভাই চিন্তা করি দুজনে ছায়ায় বসে।
খোকা ঘুমায়
কোন্খানে কোন সুদূর দেশে কোন মায়ের বুকে,
কাদের খোকা মিষ্টি এমন ঘুমোয় মনের সুখ?
অজানা কোন দেশে সেথা কোন্খানে তার ঘর?
কোন্ সমুদ্র কত নদী কত দেশের পর?
কেমন সুরে কি বলে মা ঘুমপাড়ানি গানে
খোকার চোখে নিত্যি সেথা ঘুমটি ডেকে আনে?
ঘুমপাড়ানি মাসীপিসী তাদেরও কি থাকে?
‘মটি দিয়ে যাওগো’ ব’লে মা কি তাদের ডাকে?
শেয়াল আসে বেগুন খেতে, বর্গি আসে দেশে?
ঘুমের সাথে মিষ্টি মধুর মায়ের সুরটি মেশে?
খোকা জানে মায়ের মুখটি সবার চেয়ে ভালো
সবার মিষ্টি মায়ের হাসি, মায়ের চোখের আলো।
স্বপন মাঝে ছায়ার মত মায়ের মুখটি ভাসে,
তাইতে খোকা ঘুমের ঘোরে আপন মনে হাসে।
খোকার ভাবনা
মোমের পুতুল লোমের পুতুল আগ্লে ধরে হাতে
তবুও কেন হাব্লা ছেলের মন ওঠে না তাতে?
একলা জেগে একমনেতে চুপ্টি করে বসে
আন্মনা সে কিসের তরে আঙুলখানি চোষে?
নাইকো হাসি নাইকো খেলা নাইকো মুখে কথা,
আজ সকালে হাব্লাবাবুর মন গিয়েছে কোথা?
ভাব্ছে বুঝি দুধের বোতল আস্ছে নাকো কেন?
কিংবা ভাবে মায়ের কিসে হচ্ছে দেরী হেন।
ভাব্ছে এবার দুধ খাবে না, কেবল খাবে মুড়ি,
দাদার সাথে কোঁমর বেঁধে করবে হুড়োহুড়ি
ফেল্বে ছুঁড়ে চামচটাকে পাশের বাড়ির চালে,
না হয় তেড়ে কামড়ে দেবে দুষ্ট দাদুর গালে।
কিংবা ভাবে একটা কিছু ঠুক্তে যদি পেতো-
পুতুলটাকে করত ঠুকে এক্কেবারে থেঁতো।
ছুটি
ঘুচবে জ্বালা পুঁথির পালা ভাবছি সারাক্ষণ-
পোড়া স্কুলের পড়ার পরে আর কি বসে মন?
দশটা থেকেই নষ্ট খেলা, ঘন্টা হতেই শুরু
প্রাণটা করে ‘পালাই পালাই’ মনটা উডু উড়–-
পড়ার কথা খাতায়, পাতায়, মাথায় নাহি ঢোকে!
মন চলে না মুখ চলে যায় আবোলতাবোল ব’কে!
কানটা ঘোরে কোন মুলুকে হুশ থাকে না তার,
এ কান দিয়ে ঢুকলে কথা, ও কান দিয়ে পার।
চোখ থাকে না আর কিছুতেই, কেবল দেখে ঘড়ি ;
বোর্ড আঁকা অঙ্ক ঠেকে আঁচড়কাটা খড়ি।
কল্পনাটা স্বপ্নে চ’ড়ে ছুটছে মাঠে ঘাটে-
আর কি রে মন বাঁধন মানে? ফিরতে কি চায় পাঠে?
পড়ার চাপে ছঁটফটিয়ে আর কিরে দিন চলে?
ঝুপ্ করে মন ঝাঁপ দিয়ে পড়্ ছুটির বন্যাজলে।
ছুটি
ছুটি! ছুটি! ছুটি!
মনের খুশি রয়না মনে হেসেই লুটোপুটি।
ঘুচল এবার পড়ার তাড়া অঙ্ক কাটাকুটি
দেখ্ব না আর পন্ডিতের ঐ রক্ত আঁখি দুটি।
আর যাব না স্কুলের পানে নিত্য গুটি গুটি
এখন থেকে কেবল খেলা কেবল ছুটোছুটি।
পাড়ার লোকের ঘুম ছুটিয়ে আয়রে সবাই জুটি
গ্রীষ্মকালের দুপুর রোদে গাছের ডালে উঠি
আয়রে সবাই হল্লা ক’রে হরেক মজা লুটি
একদিন নয় দুই দিন নয় দুই দুই মাস ছুটি।
ছোটে হনহন
চলে হন্ হন্ ছোটে পন্ পন্
ঘোরে বন্ বন্ কাজে ঠন্ ঠন্
বায়ু শন্ শন্ শীতে কন্ কন্
কাশি খন্ খন্ ফোঁড়া টন্ টন্
মাছি ভন্ ভন্ থালা ঝন্ ঝন্
টিক্-টিক্-টিক
টিক্-টিক্ চলে ঘড়ি টিক্-টিক্,টিক্,
একটা ইঁদুর এল সে সময়ে ঠিক্!
ঘড়ি দেখে এক লাফে তাহাতে চড়িল,
টং করে অমনি ঘড়ি বাজিয়া উঠিল।
অমনি ইঁদুর ভায়া লেজ গুটাইয়া,
ঘড়ির উপর থেকে পড়ে লাফাইয়া!
ছুটিয়া পালায়ে গেল আর না আসিল
টিক্-টিক্-টিক্- ঘড়ি চলিতে লাগিল!
টুকরো ছড়া
তিন বুড়ো পন্ডিত টাকচুড়ো নগরে
চ’ড়ে এক গামলায় পাড়ি দেয় সাগরে।
গাম্লাতে ছেঁদা আগে কেউ দেখনি,
গানখানি তাই মোর থেমে গেল এখনি।।
ম্যাও ম্যাও হুলোদাদা, তোমার যে দেখা নাই?
গেছিলাম রাজপুরী রানীমার সাথে ভাই!
“তাই নাকি? বেশ বেশ, কি দেখেছ সেখানে?”
দেখেছি ইদুর এক রানীমার উঠানে।।”
গাধাটার বুদ্ধি দেখ!- চাঁট মেরে সে নিজের গালে,
কে মেরেছে দেখবে বলে চড়তে গেছে ঘরের চালে।
ছোট ছোট ছেলেগুলো কিসে হয় তৈরি,
-কিসে হয় তৈরি,
কাদা আর কয়লা ধুলো মাটি ময়লা,
এই দিয়ে ছেলেগুলো তৈরি।
ছোট ছোট মেয়ে গুলি কিসে হয় তৈরি।
কিসে হয় তৈরি?
ক্ষীর ননী চিনি আর ভাল যাহা দুনিয়ার
মেয়েগুলি তাই দিয়ে তৈরি।।
রং হল চিঁড়েতন সব গেল ঘুলিয়ে,
গাধা যায় মামাবাড়ি টাকে হাত বুলিয়ে।
বেড়াল মরে বিষম খেয়ে, চাঁদের ধরল মাথা
হঠাৎ দেখি ঘর বাড়ি সব ময়দা দিয়ে গাঁথা।।
ঢপ ঢপ ঢাক ঢোল
ঢপ্ ঢপ্ ঢাক ঢোল ভপ্ ভপ্ বাঁশি
ঝন্ ঝন্ করতাল্ ঠন্ ঠন্ কাঁসি।
ধুমধাম বাপ্ বাপ্ ভয়ে ভ্যাবাচ্যাকা
বাবুদের ছেলেটার দাঁত গেছে দেখা।।
দাদা গো দাদা
দাদা গো দাদা, সত্যি তোমার সুরগুলো খুব খেলে!
এম্নি মিঠে – ঠিক যেন কেউ গুড় দিয়েছে ঢেলে!
দাদা গো দাদা, এমন খাসা কণ্ঠ কোথায় পেলে?
এই খেলে যা ! গান শোনাতে আমার কাছেই এলে?
দাদা গো দাদা, পায়ে পড়ি তোর ভয় পেয়ে যায় ছেলে-
গাইবে যদি ঐখেনে গাও, ঐ দিকে মুখ মেলে।]