যেই না ওপাশ থেকে হ্যালো শোনা গেছে, সেই তিনি ফোনটা নিয়ে ছেলের সঙ্গে যে ভাষায় আলাপ শুরু করলেন, তার বাংলাটা খানিকটা এইরকম, ‘ওহে অলপ্পেয়ে অকালকুষ্মাণ্ড, ভোপালে গিয়ে দিব্য ফূর্তিতে আছো, বলি বুড়ো বাপ মা কেমন আছে তার খোঁজপত্তর কি একেবারেই নিতে নেই, অ্যাঁ? ওহে জাম্বুবান, এবার যদি ক্রেডিট কার্ডের বিল বেশি আসে… ‘, ঝট করে ফোনটা কেড়ে নিতে বাধ্য হলাম, কারণ ওটিপি বেশিক্ষণ লাইভ থাকে না।
ওপাশ থেকে পুত্ররত্নটি কাঁপাকাঁপা গলায় ওটিপি আউড়ালেন, আমি টাইপালাম।
পেমেন্ট সাক্সেসফুল।
এইবার সেখান থেকে দোকানিকে পেমেন্ট পাঠানো। পেটিএমের ডিসপ্লে লাগানো ছিলো, বার স্ক্যনার ওয়ালা। দশ সেকেণ্ডের বেশি লাগলো না একশো সত্তর টাকা পে করতে।
ভদ্রলোক পেমেন্ট কাউন্টারের দিকে যেতে যেতে বিড়বিড় করতে লাগলেন, ‘বুড়ির সকাল থেকে খিদে পেয়েছে, এখানে সব দেশোদ্ধার হচ্ছে হুঁহ…যত্তসব…আগাপাছতলা চাবুক চালালে দুদিনে সব সিধে….’
কোণায় জড়সড়ভাবে দাঁড়িয়ে থাকা ছোটখাটো চেহারার বৃদ্ধাকে দেখিইনি এতক্ষণ!
বুড়ো মিনিটখানেকের মধ্যে কুপন নিয়ে বেরিয়ে এসে খুবই উদারস্বরে ধন্যবাদ জানালেন, ‘থ্যাংস ইয়ং ম্যান, আসলে আমরা একটু ওল্ড তো, এইসব নতুন কায়দাকানুন শিখতে….’
আমি স্বভাবমতো দন্ত বিকশিত করে বল্লুম, ‘নো ইস্যুজ স্যার, ওয়ান ডে আই”ল বিকাম অ্যাজ ওল্ড অ্যাজ ইউ। হোপ সামওয়ান উইল হেল্প মি দেন দ্য ওয়ে আই হেল্পড ইয়ু টুডে।’
ভদ্রলোক থমকে তাকালেন, তারপর পিঠ চাপড়ে গিন্নির হাত ধরে ডেলিভারি কাউন্টারের দিকে এগোতে থাকলেন।
যে বলে পুরুষ মানুষের চোখ ছলছল করে না, তাকে হাতের কাছে পাই একবার!