সাজিয়াছ যোগী বলো কার লাগি
যোগিয়া — ঝাঁপতাল
সাজিয়াছ যোগী
বলো কার লাগি
তরুণ বিবাগি॥
হেরো তব পায়ে
কাঁদিছে লুটায়ে
নিখিলের পিয়া
তবে প্রেম মাগি
তরুণ বিবাগি॥
ফাল্গুনে কাঁদে
দুয়ারে বিষাদে
খোলো দ্বার খোলো!
যোগী, যোগ ভোলো!
এত গীতহাসি
সব আজি বাসি,
উদাসী গো জাগো!
নব অনুরাগে
জাগো অনুরাগী
তরুণ বিবাগি॥
স্মরণ-পারের ওগো প্রিয়, তোমায় আমি চিনি যেন
দরবারি কানাড়া — যৎ
স্মরণ-পারের ওগো প্রিয়, তোমায় আমি চিনি যেন।
তোমার চাঁদে চিনি আমি, তুমি আমার তারায় চেন॥
নতুন পরিচয়ের লাগি
তারায় তারায় থাকি জাগি,
বারে বারে মিলন মাগি
বারে বারে হারাই হেন॥
নতুন চোখের প্রদীপ জ্বালি চেয়ে আছি নিরিবিলি,
খোলো প্রিয় তোমার ধরার বাতায়নের ঝিলি-মিলি।
নিবাও নিবু-নিবু বাতি,
ডাকে নতুন তারার সাথি,
ওগো আমার দিবস রাতি
কাঁদে বিদায়-কাঁদন কেন॥
হাজার তারার হার হয়ে গো দুলি আকাশ-বীণার গলে
ছায়ানট — কাওয়ালি
হাজার তারার হার হয়ে গো
দুলি আকাশ-বীণার গলে।
তমাল-ডালে ঝুলাই ঝুলাই
নাচাই শিখী কদম-তলে॥
‘বউ কথা কও’ বলে পাখি
করে যখন ডাকাডাকি,
ব্যথার বুকে চরণ রাখি
নামি বধূর নয়ন-জলে॥
ভয়ংকরের কঠিন আঁখি
আঁখির জলে করুণ করি,
নিঙারি নিঙারি চলি
আকাশ-বধূর নীলাম্বরী।
লুটাই নদীর বালুতটে,
সাধ করে যাই বধূর ঘটে,
সিনান-ঘাটের শিলাপটে
ঝরি চরণ-ছোঁয়ার ছলে॥
হৃদয় যত নিষেধ হানে নয়ন ততই কাঁদে
জয়জয়ন্তী — একতালা
হৃদয় যত নিষেধ হানে নয়ন ততই কাঁদে।
দূরে যত পলাতে চাই নিকট ততই বাঁধে॥
স্বপন-শেষে বিদায়-বেলায়
অলক কাহার জড়ায় গো পায়,
বিধুর কপোল স্মরণ আনায়
ভোরের করুণ চাঁদে॥
বাহির আমার পিছল হল কাহার চোখের জলে।
স্মরণ ততই বারণ জানায় চরণ যত চলে।
পার হতে চাই মরণ-নদী
দাঁড়ায় কে গো দুয়ার রোধি,
আমায় ওগো বে-দরদি,
ফেলিলে কোন্ ফাঁদে॥