শরাবন তহুরা
নার্গিস-বাগমে বাহার কী আগমে ভরা দিল দাগমে –
কাঁহা মেরি পিয়ারা, আও আও পিয়ারা।
দুরু দুরু ছাতিয়া ক্যায়সে এ রাতিয়া কাটুঁ বিনু সাথিয়া
ঘাবরায়ে জিয়ারা, তড়পত জিয়ারা।
দরদে দিল জোর, রঙিলা কওসর
শরাবন তহুরা লাও সাকি লাও ভর,
পিয়ালা তু ধর দে, মস্তানা কর দে, সব দিল ভর দে
দরদ মে ইয়ারা – সঙ্গ দিল ইয়ারা।
জিগর কা খুন নেহি, ডরো মত সাকিয়া,
আঙ্গুরী-লোহুয়ো, – ক্যাঁও ভিঙ্গা আঁখিয়া?
গিয়া পিয়া আতা নেহি মত কহো সহেলি,
ছোড়ো হাত – পিয়ালা য়ো ভর দে তু পহেলি!
মত মাচা গওগা, বসন্তমে বাহবা ম্যায় সে ক্যা তৌবা?
আহা গোলনিয়ারা সখি গোলনিয়ারা –
শরাব কা নূর সে রৌশন কর দে দুনিয়া আঁধিয়ারা
দুনিয়া আঁধিয়ারা দুনিয়া আঁধিয়ারা।
শেষের ডাক
মরণ-রথের চাকার ধ্বনি ওই রে আমার কানে আসে।
পুবের হাওয়া তাই নেমেছে পারুল বনে দীঘল শ্বাসে।
ব্যথার কুসুম গুলঞ্চ ফুল
মালঞ্চে আজ তাই শোকাকুল,
গোরস্থানের মাটির বাসে তাই আমার আজ প্রাণ উদাসে।
অঙ্গ আসে অবশ হয়ে নেতিয়ে-পড়া অলস ঘুমে
সাগর-পারের বিদেশিনীর হিম-ছোঁওয়া যার নয়ন চুমে।
হৃদয়-কাঁদা নিদয় কথা
আকাশ-ভেজা বিদায়-ব্যথা
লুটায় গো মোর ভুবন ভরি বাঁধন ছেঁড়ার কাঁদন ত্রাসে।
মোর কাফনের কর্পূর-বাস ভরপুর আজ দিগবলয়ে,
বনের শাখা লুটিয়ে কাঁদে হরিণটি তার হারার ভয়ে।
ফিরে-পাওয়া লক্ষ্মী বৃথাই
নয়ন-জলে বক্ষ তিতায়
ওগো এ কোন্ জাদুর মায়ায় আমার দু-চোখ শুধু জলে ভাসে।
আজ আকাশ-সীমায় শব্দ শুনি অচিন কাদের আসা যাওয়ার,
তাই মনে হয় এই যেন শেষ আমার সকল দাবি দাওয়ার।
আজ কেহ নাই পথের সাথি,
সামনে শুধু নিবিড় রাতি
আমায় দূরের মানুষ ডাক দিয়েছে রাখবে কে আর বাঁধন পাশে।
সোহাগ
গুলশন কো চুম চুম কহতে বুলবুল,
রুখসারা সে বে-দরদি বোরকা খুল!
হাঁসতি হ্যায় বোস্তাঁ,
মস্ত্ হো যা দোস্তাঁ,
শিরি শিরাজি সে যা বেহোশ জাঁ।
সব কুছ আজ রঙিন হ্যায় সব কুছ মশগুল,
হাঁস্তি হ্যায় গুল হো কর দোজখ বিলকুল
হা রে আশেক
মাশুক কি চমনোঁ মে ফুলতা নেই দোবারা ফুল
ফুল ফুল ফুল॥
স্নেহ-পরশ
আমি এদেশ হতে বিদায় যেদিন নেব প্রিয়তম,
কাঁদবে এ বুক সঙ্গীহারা কপোতিনী সম –
তখন মুকুরপাশে একলা গেহে
আমারই এই সকল দেহে
চুমব আমি চুমব নিজেই অসীম স্নেহে গো!
আহা পরশ তোমার জাগছে যে গো এই সে দেহে মম,
কম সরস-হরষ সম।
তখন তুমি নাইবা – প্রিয় – নাইবা রলে কাছে,
জানব আমার এই সে দেহে এই সে দেহে গো
তোমার বাহুর বুকের শরম-ছোঁয়ার আকুল কাঁপন আছে –
মদির অধীর পুলক নাচে!
তখন নাইবা আমার রইল মনে
কোনখানে মোর দেহের বনে
জড়িয়েছিলে লতার মতন আলিঙ্গনে গো!
আমি চুমোয় চুমোয় ডুবাব এই সকল দেহ মম –
ওগো শ্রাবণ-প্লাবন সম।
স্মরণে
আজ নতুন করে পড়ল মনে মনের মতনে
এই শাঙন সাঁঝের ভেজা হাওয়ায়, বারির পতনে।
কার কথা আজ তড়িৎ-শিখায়
জাগিয়ে গেল আগুন লিখায়,
ভোলা যে মোর দায় হল হায়
বুকের রতনে।
এই শাঙন সাঁঝের ভেজা হাওয়ায়, বারির পতনে।
আজ উতল ঝড়ের কাতরানিতে গুমরে ওঠে বুক
নিবিড় ব্যথায় মূক হয়ে যায় মুখর আমার মুখ।
জলো হাওয়ার ঝাপটা লেগে
অনেক কথা উঠল জেগে
পরান আমার বেড়ায় মেগে
একটু যতনে।
এই শাঙন সাঁঝের ভেজা হাওয়ায়, বারির পতনে।
হোলি
আয় লো সই খেলব খেলা
ফাগের ফাজিল পিচকিরিতে।
আজ শ্যামে জোর করব ঘায়েল
হোরির সুরের গিটকিরিতে।
বসন ভূষণ ফেল লো খুলে,
দে দোল দে দোদুল দুলে,
কর লালে লাল কালার কালো
আবির হাসির টিটকিরিতে॥