বৃহস্পতিবার, মে 15, 2025
  • Login
BnBoi.Com
No Result
View All Result
No Result
View All Result
BnBoi.Com
No Result
View All Result

প্রীতি উপহার – লুৎফর রহমান

Priti Upohar by Lutfor Rahman

কুলসুম : এই স্বামী সেবায় রমণীরা আনন্দ বোধ করেন। এতে আদৌ তার কষ্ট হয় না। তাদের প্রেমে ও মধুর ব্যবহারে সংসার স্বর্গে পরিণত হয়। যে সমস্ত রমণী স্বামীকে ভালবাসে না, তারাই স্বামীর সেবা করা বা স্বামীকে সুখ দিতে কষ্টবোধ করে। আমি তোমার ভাইকে গরমকালে ঘুম না আসা পর্যন্ত বাতাস দিয়ে থাকি। এতে আমার আনন্দ ছাড়া কষ্ট হয় না। এতে আমার সম্মানও নষ্ট হয় না।

হালিমা হাসিয়া জিজ্ঞাসা করিল-বটে? আচ্ছা, স্বামীকে রাত্রিকালে ঘুম হতে জাগান কি ভালো?

কুলসুম : আবশ্যক থাকলে তাতে দোষ নাই। ধীরে ধীরে মিষ্টি কথায় স্বামীকে জাগালে স্বামী বিরক্ত হন না বরং সুখী হন। যদি বোঝা যায় স্বামী জাগতে ইচ্ছুক নন, তা হলে ঘুমাতে না দিয়ে উপায় কি? অবশ্য স্বামীর এরূপ ব্যবহার স্ত্রীর মনে কষ্ট হতে পারে তা স্বামীরই বিবেচনা করা উচিত।

হালিমা : স্বামী যদি স্ত্রীকে জাগান?

কুলসুম : তা হলে স্ত্রী আদৌ বিরক্ত প্রকাশ করবে না বরং সুখী হয়েছে এইরূপ ভাব দেখাবে। সাবধান, কখনও স্বামীর সোহাগের প্রতি তাচ্ছিল্য প্রকাশ করো না–তাতে রমণী জীবনে সমূহ বিপদ ঘটতে পারে। স্বামীর সকল আদর মাথা পেতে নেবে। বস্তুত স্ত্রী এমন কোনো কথা বলবে না বা এমন কোনো ব্যবহারের পরিচয় দেবে না যাতে মনে হতে পারে স্ত্রী স্বামীর প্রতি তত আসক্ত নয়।

হালিমা : ভিতরে ভালবাসা রইল, বাইরে তার পরিচয় না দিলাম। নিষ্ঠুর কথা বলে বা অবজ্ঞা ভরা ব্যবহার করে ভিতরে প্রেম পোষণ করলে কি ক্ষতি? গভীর প্রণয় ভিতরেই থাকে। বাইরে তার সাড়া পাওয়া যায় না।

কুলসুম : এটা পাগলের কথা। যে প্রেমের কোনো সাড়া পাওয়া যায় না, সে প্রেমের কোনো মূল্য নাই। কাজের মধ্যেই প্রেমের পরিচয়। ভিতরে প্রেম আছে কাজে তার পরিচয় নাই, এরূপ প্রেম দিয়ে কী লাভ? নারীর পক্ষে নিষ্ঠুর কথা বলা বা অবজ্ঞাপূর্ণ ব্যবহার করা বড়ই বিপজ্জনক। এতে নারীর কপাল পুড়ে যায়। সে নিজ হাতে নিজের বিপদ টেনে আনে। কখনও কোনো নারী এরূপ করবে না। মুখে হাসি সহানুভূতিপূর্ণ কুশল জিজ্ঞাসা, মধুর আলাপ, সরস রসিকতা, প্রীতিপূর্ণ ব্যবহার নারীর ভূষণ। মায়ের মতো গভীর ভালবাসা এ জগতে কার?-মাতা সন্তানকে বাচালতা কথা দিয়ে সোহাগ করেন তা জান? নারী কথা ও ব্যবহারের ভিতর দিযে সর্বদা স্বামীর প্রতি ভালবাসার পরিচয় দিবে।

হলিমা : শুনেছি, স্বামী স্ত্রীকে চুম্বন করে থাকেন, স্ত্রীও স্বামীকে চুম্বন করে থাকেন। এটা বড়ই জঘন্য কাজ, কেমন?

কুলসুম : আশ্চর্য! কে বললে জঘন্য! স্বামী স্ত্রীতে চুম্বনের বিনিময়ে কারো মনে কোনো অবিশ্বাস আসতে পারে না। চুম্বন বিনিময় অতি উত্তম প্রথা। স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে কেউ কারো উপর বিরক্ত হলে চুম্বনে তা দূর হয়। ভদ্রলোকে ভদ্রলোকে যেমন আলাপ করে বা হামেশা কুশল জিজ্ঞাসা করে পরস্পরের সদ্ভাব সঞ্জীবিত করে রাখেন, স্বামী স্ত্রীর মধ্যেও তাই। তবে স্বামী-স্ত্রীর চুম্বন বিনিময় কাজটি গোপনে হওয়া চাই।

হালিমা : স্ত্রীও কি স্বামীকে চুম্বন করবে?

কুলসুম : স্ত্রী স্বামীকে বেশি চুম্বন করবে। এতে দোষ নেই। স্বামী স্ত্রীর উপর রেগে থাকলে স্ত্রীর চুম্বন তা দূর করতে সক্ষম। চুম্বন জিনিসটি ভালবাসার বহিঃপ্রকাশ ছাড়া তো আর কিছুই নয়। বিলাতে তো রাস্তাঘাটেই বন্ধুতে বন্ধুতে চুম্বনের বিনিময় হয়।

হালিমা : এরূপ করলে স্বামী স্ত্রীকে বেহায়া মনে করতে পারেন।

কুলসুম : কেন? স্ত্রী কি রক্ষিতা যে তার এত লজ্জা? যে পুরুষ মুখে নারীকে সমকক্ষ মনে করে অথচ কার্যের বেলায় তাকে সকল দাবি বুঝিয়ে দেয় না, সে পুরুষের মূল্য কী? স্ত্রী পুরুষের চেয়ে কিছুতেই ছোট নয়–তার ব্যক্তিত্ব ও স্বাধীনতা আছে। পুরুষের যদি সোহাগ করার অধিকার থাকে, নারীরও তা আছে।

হালিমা : স্বামী যখন বাহির হতে আসেন তখন কী করতে হবে?

কুলসুম : উঠে দরজার কাছে যাবে এবং মৃদু হাস্যে সাদর অভ্যর্থনা করবে।

.

পঞ্চম পরিচ্ছেদ

বর্ষাকাল–সমস্ত মাঠখানি বন্যা প্লাবিত। শ্যামল সজীব শৈবালে পরিষ্কার জলরাশি অপূর্ব শ্রী ধারণ করিয়াছে।

আবদুল গণি, তাঁহার মা, হালিমা ও ভাবি সাহেবাদের লইয়া শহরে বেড়াইতে যাইতেছেন। জোছনার স্নিগ্ধ অমিয় বিশ্বে আনন্দের ধারা ঢালিতেছিল। মৃদু মধুর মলয় হিল্লোল জীবনকে পুলকিত পূর্ণ করিতেছিল।

নৌকার ছাদের উপর বসিয়া হালিমা ও কুলসুম কথা বলিতেছিলেন। দূরে জল বিস্তারের উপর চাহিয়া চাহিয়া তাঁহারা নাতিউচ্চ স্বরে কথা কহিতেছিলেন।

দীর্ঘ ওড়না তাহাদের গায়ে। ঘোমটা টানিয়া দিয়া অসঙ্কোচে তাঁহারা প্রকৃতির মহিমা ভোগ করিতেছিলেন।

হালিমা জিজ্ঞাসা করিল-ভাবি, বিশৃঙ্খলা জিনিসটা আমি আদৌ ভালবাসি নে।

কুলসুম : কারণ বিশৃঙ্খলা জিনিসটা আদৌ ভালো নয়। মনের উন্নতির সঙ্গে সঙ্গে সকল বিষয়ে শৃঙ্খলা এবং পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা রক্ষা করবার ঝোঁক তো হবেই। কথায়, মনে, ব্যবহারে, কাজে-কর্মে,-সব জায়গায় পরিষ্কার হওয়াই ভালো লোকের কাজ।

হালিমা : বিশৃঙখলাকে ঘৃণা করলেও বিশৃঙ্খলা এসে পড়ে।

কুলসুম : সকাল বেলা উঠেই টপ করে ঘরখানি ঝাট দেওয়া চাই তার পর স্নান শেষ করে নামাজ পড়ে জিনিস-পত্রগুলি গুছিয়ে রাখবে। বিছানাপত্র অযত্নে পোঁটলার মতো ফেলে রাখবে না। ছেলেরা বিছানায় পেশাব করলে সে বিছানা ঊষাকালেই বাইরে সরিয়ে রাখতে হয়। দুপুর বেলা পর্যন্ত সেগুলি ঘরের মধ্যে রাখবে না। এতে মন খারাপ হয়, অসুখ-পীড়ার পথ তৈরি হয়। কাপড়-চোপড়, বই-খাতা দোয়াত-কলম, আরশী-চিরুনী সব ঠিকমতো রাখবে। সপ্তাহে যদি একবার মাত্র শৃঙ্খলার দিকে মন দাও, তা হলে শৃঙ্খলা কোনোকালে রক্ষা করতে পারবে না। সকাল, দুপুর, সন্ধ্যায়, দিনের মধ্যে তিনবার করে দেখবে, জিনিসপত্র যথাস্থানে আছে কি না। পথে কোন জিনিস কাকেও রাখতে দেখলে তৎক্ষণাৎ বিরক্তি প্রকাশ করবে। শৃঙখলা রাখবার জন্য সব সময় সজাগ থাকবে। বিশৃঙ্খলা ভালবাস

Page 6 of 61
Prev1...567...61Next
Previous Post

পথহারা – লুৎফর রহমান

Next Post

বাসর উপহার – লুৎফর রহমান

Next Post

বাসর উপহার - লুৎফর রহমান

মহা জীবন - লুৎফর রহমান

মন্তব্য করুন জবাব বাতিল

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

সাম্প্রতিক প্রকাশনাসমূহ

  • তিন গোয়েন্দা ভলিউম ১১৫: ভূমিকম্প – শামসুদ্দীন নওয়াব
  • তিন গোয়েন্দা ভলিউম ১১৮: বিভীষিকার প্রহর – রকিব হাসান
  • তিন গোয়েন্দা ভলিউম ১১৭: বড়দিনের ছুটি – রকিব হাসান
  • তিন গোয়েন্দা ভলিউম ১১৭: আলাস্কা অভিযান – রকিব হাসান
  • তিন গোয়েন্দা ভলিউম ১১৭: আমিই কিশোর – রকিব হাসান

বিভাগসমূহ

© 2023 BnBoi - All Right Reserved

No Result
View All Result

© 2023 BnBoi - All Right Reserved

Welcome Back!

Login to your account below

Forgotten Password?

Retrieve your password

Please enter your username or email address to reset your password.

Log In