বাবলি মাথাটা একটা ঝাঁকুনি দিয়ে অনির্দিষ্ট চোখে একবার তাকিয়ে হঠাৎ বলল, তখন বেল বটমের কথা কী বলছিলেন?
মনে মনে হাসল বাবর। বাবলি ঠিকই বুঝতে পেরেছে। তাই প্রসঙ্গ পরিবর্তন করতে চাইছে। বাবর আরো কিছুক্ষণ নিঃশব্দে খেলা করল বাবলির আঙুল নিয়ে। তার কড়ে আঙুলটা আলতো করে মুচড়ে দিল। কেমন লাল হয়ে উঠল আঙুলটা এক পলকের জন্যে।
লাগছে বাবলি?
বাবলি মাথা নেড়ে জানাল–না। তখন আবার এমনি করে দিল বাবর।
বললেন না, বেল বটমের কথা?
বাবর সন্তৰ্পণে হাত রাখল, বাবলির ঊরুর ওপর। তারপর এক চিমটি পাজামা তুলে সে বলল, এর নাম বেল বটম পাজামা?
বাবলি মাথা নাড়াল–হ্যাঁ।
বেল বটমের বাংলা জান?
নাতো।
মানে, যার নিচ দিকটা ঘন্টার মত।
গোল ঘন্টা?
হ্যাঁ।
বলতে বলতে বাবর করতল দিয়ে বাবলির হাঁটুর নিচে গোঁড়ালি পর্যন্ত স্পর্শ করে বলল, এই পাজামার নিচের দিকটা চওড়া তো, অনেকটা ঘন্টার মত, তাই বেল বটম বলে।
জানি।
কিন্তু ইংরেজিতে বটমের আরেকটা মানে আছে।
কী?
বলেই বাবলি লজ্জায় চোখ নামিয়ে ফেলল। এক মুহূর্তে অর্থটা তার মনে পড়ে গেছে। আর সে জানতে চায় না। কিন্তু বাবর ততক্ষণে তার পেছনে করতল দিয়ে ব্রাশ করতে করতে বলছে, বটম মানে এটা। বাংলায় একটা সুন্দর শব্দ আছে। নি-ত-ম্ব। মানে বটম। তাই বলছিলাম, বেল বটম বলতে একটু লজ্জা করে না তোমাদের?
কোনো উত্তর দিতে পারল না বাবলি। নিঃসাড় নিষ্পন্দ হয়ে বসে রইল। কিন্তু হাত আর সরিয়ে নিচ্ছে না বাবর। অনেকক্ষণ। অথচ ওঠাও যাচ্ছে না।
বাবর তার পেছনে দুটো মৃদু চাপড় দিয়ে বলল, তুমি খুব সুন্দর হয়েছ। বলে সে তাকে কাছে টানল। মুরগির তুলতুলে একটা বাচ্চার মত বাবলি তার বুকের মধ্যে পড়ে হাঁফাতে লাগল চোখ বুজে। এইটুকু কাছে পাওয়া যতটা শক্ত হবে বলে বাবর ভেবেছিল তার চেয়ে সহজে হয়ে গেল। বহুবার বাবর এটা দেখেছে, আসলে একটু সাহস করলেই হয়, হয়ে যায়, তবু বারবার, প্রথম বার, এত কঠিন মনে হয়, যেন এর চেয়ে বাঘের বাসায় যাওয়া অনেক সোজা।
বাবর তাকে চুপচাপ বুকে নিয়ে শুয়ে রইল। এতটুকু নিজেকে সে নড়াল না। বাবলি অনেকক্ষণ পড়ে থেকে বলল, এখন যাই।
না। আরো একটু থাক।তোমাকে একটু দেখি। বলে সে তার মুখ তুলে ধরল। খুব আস্তে একটা চুমো দিল তার চোখে। বলল, চোখ বুজে থাক।
চোখ বুজেই ছিল বাবলি, কিন্তু এই কথা শুনে চোখ মেলে তাকিয়ে রইল বাবরের হাতের ওপর দিয়ে। সেইভাবে থাকতে থাকতে কী হলো তার, হঠাৎ বাবলি বাবরকে ঠোঁটে দ্রুত একটা চুমো দিয়ে বুকের মধ্যে মুখ লুকাল।
বাবর বলল, ভয় কী? আমি তো তোমার। এখন থেকে তোমারই। সব সময়ের জন্যে।
এবার বাবরই তাকে চুমো দিল, দীর্ঘক্ষণ ধরে পাতলা দুটি ঠোঁট সে সুখাদ্যের মত খেল। তারপর কামিজের একটা বোতাম খুলে বাবলিকে উপুড় করে তার পিঠে ঠোঁট রাখল। ঠোঁটে সুড়সুড়ি দিতে লাগল বাবলির পিঠের প্রায় অদৃশ্য পশমগুলো।
বাবলি বলল, যাই।
না, থাক। তোমার পিঠে তিল আছে?
হ্যাঁ।
একটা চুমো দিই তিলে? বাবলি কিছু বলল না। বাবরকে তার ইচ্ছে রাখতে দিল। বাবর মুখ তুলে জিজ্ঞেস করল, আরো তিল আছে?
হ্যাঁ।
দুটো বোতাম একসঙ্গে খুলে ফেলল বাবর। প্ৰায় কোমর পর্যন্ত দেখা যাচ্ছে।
কই আর তো দেখছি না?
বাবলি চুপ করে রইল।
কই, আর তিল কই? তুমি বললে যে আছে?
এখানে নেই।
তাহলে সামনে?
বলে বাবর তাকে সামনে ফেরাতে চেষ্টা করল। কিন্তু উপুড় হয়ে শক্ত করে নিজেকে ফেলে রাখল বাবলি। মাথা নেড়ে মুখে শুধু বলল, না।
তখন জোর করে তাকে ফেরাল বাবর। ফেরাতেই শাদা কাচুলির ভেতরে অপুষ্ট একজোড়া স্তন কেঁপে উঠল। বাবর তাদের আবরণ সরিয়ে সেখানে মুখ রেখে ধীরে ধীরে আরোহণ করতে লাগল যেন ছিপছিপে একটা পেয়ারা গাছে। যখন সম্পূর্ণ সে পেল তাকে তার নিচে, সে চুপ করে রইল। নিঃশব্দে স্ফীত হতে লাগল। কিন্তু আজ নয়। প্রথম দিনে নয়। বাবর সময় নিতে ভালবাসে। সময় নেবার পর যখন পাওয়া যায়। তখন আর সময় নেয় না। তখন তার মনে হয় ঝাঁপিয়ে পড়ে এবং নিঃশেষ হয়ে ফিরে আসে।
শেষ একটা চুমো দিয়ে এবার বাবর নিজেই বলল, বাড়ি যাও, কেমন?
বাবলি উঠে বসে বোতাম লাগাল কামিজের। কোনো কথা বলল না। বাথরুমে গেল। ফিরে যখন এলো, মুখ সাবান দিয়ে ধুয়েছে, একটু পাউডার দিয়েছে। কিন্তু মুখে একটা নতুন ছাপ। কেমন এলানো, মন্থর, নিঃশব্দ। সে বেরিয়ে আসতেই বাবর একটু হেসে বলল, পৌঁছে দেব?
না। আমি নিজেই যেতে পারব।
রিকশা ডাকিয়ে দি।
আমি নিয়ে নেব।
যাবার সময় আমাকে একটা চুমু দিয়ে যাও।
বাবলি চুপ করে রইল।
এসো।
বাবলি নড়ল না। তাকিয়ে রইল আপলক চোখে বাবরের দিকে।
এসো বাবলি।
বাবলি হঠাৎ এসে বাবরের কানের কাছে মুখ রাখল আলতো করে। তারপর সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে চুপ করে রইল খানিকক্ষণ। দরোজার দিকে যেতে যেতে শুধু বলল, আপনার তো কোনো ক্ষতি নেই। ক্ষতি শুধু আমার।
ঘড়ির দিকে তাকিয়ে বাবর চমকে উঠল। পাঁচটা বাজে।
০৪. মিসেস নাফিস
মিসেস নাফিস বললেন, যাহোক আসা হলো তাহলে?
আপনি কী ভেবেছিলেন?
সত্যি বলব না মিথ্যে? আপনি যা বলবেন তা-ই আমি সত্যি বলে মেনে নেব।
যদি সত্যি বলি, ভেবেছিলাম। আপনি আসবেন না। আর আপনি যে আসবেন, সেটা মিথ্যে মনে হচ্ছিল।
বাবর হাসল, টাইয়ের নট ঠিক করল আন্দাজে, বিরল হয়ে আসা চুলের ভেতর হাত চালাল খানিক, হাসল আবার, একটা সিগারেট বের করল এবং বলল, আমি তো এলাম। বলে সিগারেট ধরাল। তারপর হঠাৎ জিগ্যেস করল, আপনি কখনো সিগারেট খেয়েছেন?