• আমাদের সম্পর্কে
  • যোগাযোগ
  • গোপনীয়তা নীতি
মঙ্গলবার, জুন 10, 2025
  • Login
BnBoi.Com
  • বাংলাদেশী লেখক
    • অতুলচন্দ্র গুপ্ত
    • অভিজিৎ রায়
    • আখতারুজ্জামান ইলিয়াস
    • আনিসুল হক
    • আবু ইসহাক
    • আবু রুশদ
    • আবুল আসাদ
    • আবুল খায়ের মুসলেহউদ্দিন
    • আবুল বাশার
    • আরজ আলী মাতুব্বর
    • আল মাহমুদ
    • আসাদ চৌধুরী
    • আহমদ ছফা
    • আহমদ শরীফ
    • ইমদাদুল হক মিলন
    • উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী
    • কাসেম বিন আবুবাকার
    • জসীম উদ্দীন
    • তসলিমা নাসরিন
    • দাউদ হায়দার
    • দীনেশচন্দ্র সেন
    • নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়
    • নিমাই ভট্টাচার্য
    • প্রফুল্ল রায়
    • প্রমথ চৌধুরী
    • ময়ূখ চৌধুরী
    • মহাদেব সাহা
    • মাহমুদুল হক
    • মুহম্মদ জাফর ইকবাল
    • হুমায়ূন আহমেদ
  • ইন্ডিয়ান লেখক
    • অক্ষয়কুমার মৈত্রেয়
    • অতুল সুর
    • অদ্রীশ বর্ধন
    • অনির্বাণ বন্দ্যোপাধ্যায়
    • অনীশ দেব
    • অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর
    • অমিয়ভূষণ মজুমদার
    • আশাপূর্ণা দেবী
    • আশুতোষ মুখোপাধ্যায়
    • ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর
    • কাজী নজরুল ইসলাম
    • ক্ষিতিমোহন সেন
    • তারাদাস বন্দ্যোপাধ্যায়
    • তারাশংকর বন্দ্যোপাধ্যায়
    • দেবীপ্রসাদ চট্টোপাধ্যায়
    • নারায়ণ সান্যাল
    • নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী
    • নীহাররঞ্জন গুপ্ত
    • পাঁচকড়ি দে
    • পূর্ণেন্দু পত্রী
    • বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
    • বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
    • বিমল মিত্র
    • মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়
    • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
    • সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
    • হেমেন্দ্রকুমার রায়
  • বিভাগসমূহ
    • আত্মজীবনী
    • ইতিহাস
    • উপন্যাস
    • কবিতা
    • কল্পকাহিনী
    • কাব্যগ্রন্থ
    • খেলাধুলার বই
    • গল্পের বই
    • গোয়েন্দা কাহিনী
    • ছোট গল্প
    • জীবনী
    • দর্শন
    • ধর্মীয় বই
    • নাটকের বই
    • প্রবন্ধ
    • বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী
    • বৈজ্ঞানিক বই
    • ভূতের গল্প
    • মুক্তিযুদ্ধের-বই
    • রহস্যময় গল্পের বই
    • রোমাঞ্চকর গল্প
    • রোম্যান্টিক গল্পের বই
    • শিক্ষামূলক বই
    • সমগ্র
  • সিরিজ বই
    • মিসির আলী সমগ্র
    • হিমু সিরিজ
No Result
View All Result
  • বাংলাদেশী লেখক
    • অতুলচন্দ্র গুপ্ত
    • অভিজিৎ রায়
    • আখতারুজ্জামান ইলিয়াস
    • আনিসুল হক
    • আবু ইসহাক
    • আবু রুশদ
    • আবুল আসাদ
    • আবুল খায়ের মুসলেহউদ্দিন
    • আবুল বাশার
    • আরজ আলী মাতুব্বর
    • আল মাহমুদ
    • আসাদ চৌধুরী
    • আহমদ ছফা
    • আহমদ শরীফ
    • ইমদাদুল হক মিলন
    • উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী
    • কাসেম বিন আবুবাকার
    • জসীম উদ্দীন
    • তসলিমা নাসরিন
    • দাউদ হায়দার
    • দীনেশচন্দ্র সেন
    • নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়
    • নিমাই ভট্টাচার্য
    • প্রফুল্ল রায়
    • প্রমথ চৌধুরী
    • ময়ূখ চৌধুরী
    • মহাদেব সাহা
    • মাহমুদুল হক
    • মুহম্মদ জাফর ইকবাল
    • হুমায়ূন আহমেদ
  • ইন্ডিয়ান লেখক
    • অক্ষয়কুমার মৈত্রেয়
    • অতুল সুর
    • অদ্রীশ বর্ধন
    • অনির্বাণ বন্দ্যোপাধ্যায়
    • অনীশ দেব
    • অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর
    • অমিয়ভূষণ মজুমদার
    • আশাপূর্ণা দেবী
    • আশুতোষ মুখোপাধ্যায়
    • ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর
    • কাজী নজরুল ইসলাম
    • ক্ষিতিমোহন সেন
    • তারাদাস বন্দ্যোপাধ্যায়
    • তারাশংকর বন্দ্যোপাধ্যায়
    • দেবীপ্রসাদ চট্টোপাধ্যায়
    • নারায়ণ সান্যাল
    • নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী
    • নীহাররঞ্জন গুপ্ত
    • পাঁচকড়ি দে
    • পূর্ণেন্দু পত্রী
    • বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
    • বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
    • বিমল মিত্র
    • মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়
    • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
    • সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
    • হেমেন্দ্রকুমার রায়
  • বিভাগসমূহ
    • আত্মজীবনী
    • ইতিহাস
    • উপন্যাস
    • কবিতা
    • কল্পকাহিনী
    • কাব্যগ্রন্থ
    • খেলাধুলার বই
    • গল্পের বই
    • গোয়েন্দা কাহিনী
    • ছোট গল্প
    • জীবনী
    • দর্শন
    • ধর্মীয় বই
    • নাটকের বই
    • প্রবন্ধ
    • বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী
    • বৈজ্ঞানিক বই
    • ভূতের গল্প
    • মুক্তিযুদ্ধের-বই
    • রহস্যময় গল্পের বই
    • রোমাঞ্চকর গল্প
    • রোম্যান্টিক গল্পের বই
    • শিক্ষামূলক বই
    • সমগ্র
  • সিরিজ বই
    • মিসির আলী সমগ্র
    • হিমু সিরিজ
No Result
View All Result
BnBoi.Com
No Result
View All Result

চিলেকোঠার সেপাই (উপন্যাস) – আখতারুজ্জামান ইলিয়াস

Chilekothar Sepai by Akhteruzzaman Elias

আনোয়ারের মাথায় ভেতরকাল বিন্যাস ফের এলোমেলো হয়ে পড়ে। খয়বার গাজীর মুখ ও একটানা সংলাপ ক্রমেই ঝাপশা হয়, প্রতি পদক্ষেপে তার সঙ্গে দূরত্ব বাড়ে। হাটতে হাটতে সে বারবার জালাল মাস্টারকে দ্যাখে। নিজেই একটা সমাধান দেওয়ার চেষ্টা করে, আচ্ছা, আমিও যদি চেন্টুর সঙ্গে থাকি?
এ্যাঁ?
ধরেন আপনি আর আমি যদি চেন্টুকে নিয়ে আসি? এতে কাজ হবে না? জালালউদ্দিন জবাব দেয় না জেলা বোর্ডের রাস্তার ২ দিকে ধান জমি। ধান কাটা হয়ে গেছে, ন্যাড়া মাঠ শরীর এলিয়ে রোদ পোহায়। একটু দূরে আলুর জমি। একনাগাড়ে কয়েক বিঘা জমিতে আলুর চাষ করা হয়েছে, ৩/৪ জন কিষান আলুর জমিতে কাজ করে, তাদের মাথার পেছনে ও পিঠে আৰ্দ্ৰতাশূন্য রোদ পিছলে পিছলে পড়ে। জালাল মাস্টার চোখের ওপর হাত রেখে রোড আড়াল করে ওদের মধ্যে কাউকে খুঁজছে। সে জোরে হাক দেয়, ক্যারে, করমালি আছে? জবাব আসে, নাই।’-আনোয়ারের দিকে মনোযোগী না হয়ে জালাল মাস্টারের তখন আর উপায় থাকে না। এসব ছেলেদের নিয়ে মুশকিল,—শহরে জন্ম, শহরে মানুষ, এখানকার সমস্যা এরা বুঝবে কোথেকে? চেংটুও থাকবে, খয়বার গাজীও থাকবে, জালাল মাস্টার সেখানে স্পষ্টভাবে চেংটুর পক্ষ নিয়ে কথা বলবে-একি হতে পারে? এতোবড়ো মানী মানুষটাকে কি ছোটো করা যায়? চেংটুকে বিশ্বাস করা মুশকিল, কি বলতে যে কি বলে ফেলবে, তখন তার ধকল সামলাবে কে? জালাল মাস্টার সংক্ষেপে বলে, চেংটু যাবো না। ছোড়া ভারি বেয়াদব!’
আমরা যদি ভালো করে বুঝিয়ে বলি?
‘দ্যাখা যাক!

চিলেকোঠার সেপাই – ১৫

আনোয়ারদের বাড়ির বাইরে কাঁঠালতলায় কাঠের বেঞ্চ। বেঞ্চের পাশে মাটিতে হাঁটু ভেঙ্গে বসে নাদু পরামাণিক হুকাটানছিলো। ধোঁয়ায় ধোঁয়ায় তার দাড়ি অরো এবড়োখেবড়ো এবং এলোমেলো হয়ে গেছে। ওদের দুজনের দিকে একবার তাকিয়ে সে ফের হুকা টানে এবং বেশি ধোঁয়া গলগল করে বেরিয়ে ওর মুখকে ক্রমে অস্পষ্ট ও নির্বিকার করে ফেলে। অথচ নাদু কিন্তু এদেরই প্রতীক্ষা করছিলো অনেকক্ষণ ধরে।
আনোয়ার জিগ্যেস করে, আপনি এখনো অপেক্ষা করছেন? নাদু তার দিকে তাকায়। ধোঁয়ামুক্ত হলে নাদুর লাল ও ভোতা চোখের রঙ স্পষ্ট হয়, কিন্তু তাতেও তার ব্যাকুলতা ফোটে না।
কাঁঠালতলায় পশ্চিমে ভাঙা দালানের স্তুপের আড়ালে লুকোচুরি খেলা স্থগিত রেখে বড়োচাচার ছোটো মেয়ে রোজী এসে বলে, আনু ভাই, নাশতা খাবেন না? আম্মা ডাকে।
বেঞ্চে বসতে বসতে জালাল মাস্টার বলে, যাও তোমার চাচীর সাথে সাক্ষাৎ করা আসো। ভেতর বাড়ির দিকে যেতে যেতে আনোয়ার নাদুর মৃদুকণ্ঠ শুনতে পায়, কি কয়।

বিকালবেলা বোঝা যায় যে, নাদুর মেজো ছেলেটা একটু বেয়াদবই বটে। ছেঁড়া বাপের স্বভাব তো পায়ইনি, কিন্তু খয়বার গাজী সম্পর্কে মাঝে মাঝে মন্তব্য যা করে তাতে তার বাপ তো
বটেই, জালাল মাস্টারেরই বুক কেঁপে ওঠে। শেষ পর্যন্ত আনোয়ারকে দেখিয়ে জালাল মাস্টার বলে, এই চ্যাংড়ার পরামর্শে কর্ণপাত করবি তো? কথা কম কলে কি হয়, ঢাকাত যতো আন্দোলন হবা নাগছে, যতো সংগ্রাম—সব কয়টার সাথে আছে। তুই খালি পুটি মাছের লাকান লক্ষঝলপ করিস, এই চ্যাংড়াকে দাখ তো! কথাবার্তা শুন্যা বোঝা যায় যে, ঢাকা থেকে একজন নেতা মানুষের আগমন হছে?
আনোয়ার কোন আন্দোলনের নেতা নয়, কিন্তু জালাল মাস্টারের কথার প্রতিবাদ করলে বেচারা একটু বিব্রত হতে পারে। চেন্টু আনোয়ারের দিকে একবার তাকায়, চেন্টুর চোখ বেশ স্বচ্ছ, রাগ কি ঘৃণা থেকে সেগুলো মুক্ত। কিন্তু অন্যদিকে তাকিয়ে কথা বলতে শুরু করামাত্র তার চোখজোড়া ছোটো হয়ে যায়, আস্তে আস্তে সে বলে, ‘খয়বার গাজী হামাক ঘরত তুলা বন্দুক বার করবো। দোনলা, একনলা, আইফেল, পিস্তল-ব্যামাক কয়টা তাই শান দিয়া খুছে, হামাগোরে উপরে একচেটি নিবো। ঐ খুনীর সর্দারের কাছ যায় কোন শালা? হামি অর ভাত খাই, নাউই হামাক জর্ম দিছে? আর কাছে হামার কিসের ঠ্যাকা?
জালাল মাস্টার রাগ করে, শালা মূৰ্খ কোথাকার! গণ্ডমূর্খ। অশিক্ষিত ভূত। কুবাক্য না কলে শালার মুখ থাকা বায়ু নির্গত হয় না!
নাদুর সেই ঔদাসীন্য কেটে গেছে, মাঝে মাঝে লাফ দিয়ে ছেলের কাছে যায়, চিৎকার করে বলে, আজ তোরই একদিন, কি হামারই একদিন হামি নিজে তোক জবো করমু। মুন্সি লাগবো না, আল্লাহু আকবার কয়া তোর গলাত ছুরি দিমু! একটু হাপাবার পর ফের শক্তিসঞ্চয় করে সে চূড়ান্ত সংকল্প ঘোষণা করে, তোক জবো না করা আজ হামি মুখোত ভাত তুলমু না!
চেংটু জিগ্যেস করে, ভাত তোমার ঘরোতে উথলাচ্ছে? হামাক জবো করলে মিয়ারা তোমাক ভাগের ধান বেশি দিবো? আনোয়ারের পরিবারের প্রতি কটাক্ষ করায় নাদুর পক্ষে রাগ সামলানো আর সম্ভব হয় না। লাফিয়ে এসে ছেলের কাকড়া চুলের ঝুঁটি ধরে ধরে কাকায়। তার নিজের রুক্ষ দাড়ি, বড়ো মোটা নাক ও ভোতা লাল চোখজোড়ায় ছোটোবড়ো ঢেউ উঠতে থাকে। চেন্টু কিছুক্ষণ সহ্য করে, তারপর সামান্য একটু চেষ্টাতেই বাপের মুঠি থেকে নিজের কেশরাশি মুক্ত করে। মাথা ঝাকিয়ে চুল পেছনে ফেলে বাপকে সে ধমক দেয়, অতো নাফ পাড়ো কিসক? পিঠত বিষ সুলক্যা উঠবো না? ঘরোত তোমার মালিস করার তাল আছে এক ছটাক? অতো নাফ পাড়ো কিসক?
চেংটুর এই উক্তিতে তার বাবার পিঠের ডানদিককার ব্যাথার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। অনেকদিনের ব্যথা। বহুকাল আগে গোয়ালঘরে ধোঁয়া দিতে গিয়ে ধোঁয়া না দিয়ে নাদু ঘুমিয়ে পড়ায় আনোয়ারের দাদাজীর খুব রাগ হয়েছিলো। সে কি আজকের কথা? নাদুর বয়স তখন ১০/১১ বছর, মিয়াদের বাড়িতে ফাই ফরমাস খাটে, কিষানদের পান্তা নিয়ে ভাত নিয়ে জমিতে যায়, সকালবেলা গোয়াল থেকে গোরু-বাছুর বার করে, সন্ধ্যাবেলা গোয়ালঘরে ধোঁয়া দেয়। তো সেদিন বড়োমিয়ার বড়ো মেয়ের বিয়ে কি পানচিনির উৎসব। সারাটা দিন সবারই খুব ছোটাছুটির মধ্যে কাটে। সন্ধ্যার পর গোয়ালঘরে ধোঁয়া দিতে গেছে নাদু। গোয়ালঘরের পাশেই একটা পীতরাজ গাছের কাটা গুড়ি। আগুন-ধূপের মালসা পাশে রেখে ঐ কাঠের গুড়ির পাশে শুয়ে নাদু ঘুমিয়ে পড়ে। ঐ সময় ওখানে বড়োমিয়ার যাওয়ার কথা নয়। কেন গিয়েছিলো আল্লাই জানে! মনে হয় মেয়ের জন্যে আড়ালে একটু চোখের পানি ফেলার জন্যে জায়গাটা নিরাপদ ছিলো। গোয়ালঘরে মশার কামড়ে ছটফট-করা গোরুদের দেখে বড়োমিয়া আর সহ্য করতে পারেনি। তার কাঠের খড়ম-পরা পা দিয়ে নাদুর পিঠে বড়োমিয়া এ্যাঁয়সা ১লাথি দিয়েছিলো যে, মাস দুয়েক সে আর পিঠ তুলতে পারেনি। আজ বুড়ো হয়ে মরতে বসেছে নাদু, তার সেই ব্যথা আজো তাকে ছেড়ে গেলো না। একটু আঘাত পেলে, পূর্ণিমায় অমাবস্যায়, অসময়ে বৃষ্টি হলে কি শীত পড়লে ব্যথাটা উসকে ওঠে। এ ঘটনা এখানকার প্রায় সবাই জানে। বড়োমিয়া নিজেও ২/১ বার বলেছে। আর নাদুর খুব প্রিয় প্রসঙ্গের মধ্যে এটি ১টি। ঘটনাটি বেশ রসিয়ে রসিয়ে বলতো, নিন্দের মধ্যে খাব দেখবা নাগছি। কি? না, পাতারের মদ্যে গোরু খুঁজা বেড়াই। ধলা বকনাখান গো, বড়োমিয়ার খুব হাউসের বকনা, সেই বকনাক আর পাই না। ঘড়ি বাদ দেখি, পাতারের উত্তরে মস্ত বড়ো পিপুল গাছটার তলাত খাড়া হয় আছি,-ঝড় নাই, পানি নাই, মোটা একখান পিপুলের ডাল ভাঙা পড়লো হামার পিঠোত। ইটা কি বাবা চ্যাতন পায়া দেখি কোটে পাতার? কোটে পিপুলের ডাল? বড়োমিয়ার বোলআলা খড়মখান পিঠের উপরে। ঘটনাটা সে এমনভাবে বলতো যেন ঘুম ভাঙার পরেও সে স্বপ্লের মধ্যেই ছিলো। এই ব্যথাটিকে নাদু কতোদিন থেকে পুষে আসছে। মিছে কথা বলে লাভ কি? ব্যথাটাকে মূলধন করে বড়োমিয়ার করুণা সে কম আদায় করেনি। এই ব্যথা সারাবার জন্যে বড়োমিয়ার খরচ হয়েছে মেলা, কিন্তু বড়ো কথা হলো এই যে, ব্যথাটা ছিলো বড়োমিয়া ও তার মধ্যেকার সম্পর্কের প্রকাশ। যখনি তার ছটাইয়ের প্রশ্ন আসতে কিংবা ভিটা থেকে উচ্ছেদের সম্ভাবনা দ্যাখ্যা দিতো কি তার কাছ থেকে বর্গাজমি ছড়িয়ে নেওয়ার কথা উঠতো নাদু তখন উসকে তুলতো এই ব্যথাটিকে। বড়োমিয়া আস্তে আস্তে বলতো, থাকা কতোদিনের চাকর অর বাপও কাম করা গেছে। থাকা আহা, নাদুর দেহে বড়োমিয়ার এই চিরস্থায়ী স্পর্শ কি যেন তেন সম্পর্ক হলো? বড়োমিয়া মারা গেলে লাশের পাশে বসে নাদু কাঁদতে কাঁদতে বিলাপ করছিলো, তোমার নথি হামার পিঠোতেই থাকলো গো বড়োমিয়া, তুমি কেটে চলা গেলা
কিন্তু এই লাথির মর্যাদা চেন্টু বুঝবে কোথেকে? বাপের হাতের রেঞ্জের বাইরে দাঁড়িয়ে সে বলে, পিঠতো ভাঙছে একজন, এখন বাকি আছে বুকখান। তুমি গাজীগোরে ঘরত যাও, খয়বার মিয়ার পাও আছে দুইখান, বুকখানা পাতা দিও, খাম করা দিবো বলতে বলতে সে চারদিকে একবার তাকায়, তারপর অপেক্ষাকৃত নিচু গলায় বলে, নথিগুড়ি যা খাবার চাও তাড়াতাড়ি খায় আসো। কুনদিন যায়া শুনবা ব্যাটার দুটা ঠাই ভাঙা দিছে, তখন নাথি দিবো কি দিয়া?
আশেপাশের সবাই একেবারে চুপ। জালাল মাস্টার এই নীরবতা ভাঙে, চেন্টু, মুখ সামলা। বিবেচনা করা কথা কোস! তোর ভাগ্যে কি যে আছে চিন্তা করলেও ভয় লাগে।
এর মধ্যে লোকও জমে গেছে। বেশির ভাগ চাষাভূষা মানুষ, মিয়াবাড়ির আলুর জমির কাজ সেরে কিংবা ধান মাড়াইয়ের কাজ করতে এসে জমায়েত হয়েছে। মিয়াবাড়ির ছেলে আছে কয়েকজন। এদের কেউ কেউ স্কুলে পড়ে। চাষা বা ভদ্রলোক সবাই চুপ করে জালাল মাস্টারের সতর্কবাণী শোনে। কঁঠালতলার পশ্চিমে ভাঙা দালানের স্তুপে বসেছে কয়েকজন। শীতের বেলা দেখতে দেখতে গুটিয়ে যাচ্ছে। একটু দূরের শিমুলগাছের ওপর থেকে ছাইরঙের ১টি ডানা যেন গাঢ় হতে হতে এগিয়ে আসছে এদিকে। দালানের ভাঙা শ্বপ রঙ পাল্টায়।
চেন্টু জবাব দেয়, মুখ সামলাবার হুকুম দিবেন আপনে কয়জনোক? হামি একলা মুখ সামলালে কাম হবো? ডাকাত-মারাচর তাই ভরা ফালাছে গোরু দিয়্যা, এতো গোরু গাজীর ব্যাটা পালো কোটে?
ছাইরঙ আরো গাঢ় হয়। মস্ত জোড়াদিঘির ওপারে মরিচের জমি, ছাইরঙের পাতলা অন্ধকারে পাকা মরিচের টকটকে লাল রঙ, হঠাৎ করে তাকালে, ছাইয়ের ভেতরকার আগুনের মতো ঝাণ্টা মারে। এদিকে ছেলের কথাবার্তা শুনে নাদু মাথায় হাত দেয়। অনেকক্ষণ পর স্বগতোক্তি করে, উগল্যান কথা কওয়া হয় না বাপ, মুখখান তোর বড়ো দুষমন ছেলেকে বাচাবার উদ্দেশ্যে সে চেষ্টা করে গাজীদের দোষক্ষালণের, গাজীগোরে বাথান কি আজকার? কতো ছোটো থাকতে হামরাই দেখছি, যমুনার এই চর, ঐ চর ব্যামাকই গাজীগোরে দখলে। কতো বাথান, কতো গোরু, কতো মোষ দেখছি মাটির ঠিলা ভরা দুধ আসছে। হামরাই তো দেখছি।
তার সমর্থনে আরেকজন কিষান বলে, গাজীগোরে বাথান ভরা গোরু মোষ কি গুনা শ্যাষ করা গেছে?
কিন্তু চেন্টু বলে, উগল্যান কথা থোও গো! আগে কার কি আছিলো হামরা কবার পারি না। এখন ডাকাত-মারা চরত যায়া দ্যাখো, ব্যামাক এই অঞ্চলের গোরু। গেরস্থের গোরুবাছুর সব আটকা রাখছে। চালান হয় পুবে, যমুনার ঐ পার। মাদারগঞ্জের হাটোত বেচা হয়। ডাকাত-মারা চর দখল করছে কেডা, তোমরা জানো না?
কথা বলতে বলতে চেংটু কখন যেন উঠে পড়েছে দালানের ভাঙা গুপে। আনোয়ার এবার ভালো করে তার দিকে দেখলো। আনোয়ারের দাদাজী মারা যাওয়ার ৩ বছর আগে এই বৈঠকখানা দালানে চিড় ধরে, নতুন করে তৈরি করার জন্য গোটা দালান ভেঙে ফেলা হয়। সেই বছর তার মৃত্যু হলো। এরপর আর কিছু করা হয়নি। চেন্টু সেই স্তুপের উঁচু চূড়ায় দিব্যি পা ঝুলিয়ে বসেছে। সন্ধ্যার আবছা অন্ধকারে তার মুখ অস্পষ্ট।

চিলেকোঠার সেপাই – ১৬

বুড়ো হয় গেলেন, তাও আপনের ইশ হলো না জামাই মানুষ, জামায়ের লাকান থাকেন। কোটে কেটা মার খালো, কোটে কেটা কার সাথে ঝগড়া-বিবাদ করে-সোগলির প্যাগনা কি আপনার ঘাড়তই তোলা লাগবো? তোমাক কই বাপু, সারাটা জেবন মানুষটা হামাক জুল্যা পুড়া কিছু খুলো না!
হ্যারিকেনের লালচে হলদে আলোয় কৈ মাছের কাটা বাছতে বাছতে আনোয়ার জালাল মাস্টারের বৌয়ের সংলাপ শোনে। জালাল মাস্টারকেও শুনতে হয়। তার স্ত্রীর বাক্যে সম্বোধন করা হয়েছে ২জনকেই। ভাত খেতে আনোয়ারের ভালোই লাগছে। লতায় পাতায় জড়ানা দূর সম্পর্কের এই ফুফুটা তার রাধে ভালো। তার কথা শুনতে শুনতে মনে হয় অন্যের জিভে সুখ দেওয়ার ব্যবস্থা করে নিজের জিভের সুখ ফুফু উসুল করে অন্যভাবে। জিভটা তার ভয়ানক সচল, ঘণ্টা খানেক হলো ফুফু তার সামনে আসছে, যাচ্ছে,-এর মধ্যে একনাগাড়ে ৫ মিনিটও বিরতি দেয়নি। আবার জালাউদ্দিনকেও আনোয়ার কখনো এতোটা বাকবিমুখ দাখেনি। স্বামীর এই নীরবতায় জালালউদিনের স্ত্রীর উৎসাহ মাঝে মাঝে বাড়ে, তখন তার কথা বেরিয়ে আসে তীব্র বেগে। আবার স্বামীর ঔদাসীন্যে মাঝে মাঝে তার রাগ হয়, তাতেও কথার বেগ বাড়ে।
‘খয়বার গাজীর সাথে আপনে সামাল দিব্যার পারবেন? এ্যাঁ, তুমিই কও তো বাবা? তাই বলে শয়ে শয়ে বিঘা জমির মালিক, যমুনার চর যেটি যা উঠবো ব্যামাক নিবো তাই। তাক আঁটো করবার চান আপনে? কোটে বলে মহারাজ আর কোটে কলাগাছ। আপনার সাহসটা এ্যাঁনা বেশি, বুদ্ধিটা যদি তার এক আনাও থাকলোনি তো—।’
জালাল মাস্টার আস্তে করে বলে, ‘খয়বার গাজীক আঁটো করে কেটা? সকল গ্রামবাসীকে আষ্টেপৃষ্ঠে বন্ধন করার জন্যে তিনি অস্থির তার সাথে আমার কিসের কলহ? কিসের বিবাদ? –
বিবাদ আপনে পাকান আসমানের মধ্যে আপনে টেকির পাড় দিবার চান।-বাবা, মাছ আরেকটা দেই? আনোয়ারের পাতে আরেকটা পাবদা মাছ দিয়ে ফুফু তার অসমাপ্ত বক্তব্য সম্পূর্ণ করার উদ্যোগ নেয়, এই চেংটু ছোড়া গোলামের পয়দা গোলাম, এটা অতো লাফ পাড়ে কিসক? খয়বার গাজী এ্যাঁর পিছে লাগছে, এটাক শ্যাম্ব না করা তাই ছাড়বো? গাজীর ব্যাটার ভয়ে তার বাপ, তার জন্মদাতা বাপ তাক জায়গা দেয় না, সেই চেংটুক আপনে ঘরত তোলেন। এই সোস্বাদ পালে খয়বার গাজী আপনার কি দশা করবো তা জানেন?
জালালউদ্দিন একটু হাসি মুখ করে, মোসাম্মৎ রহিমা খাতুন, তোমার প্রথম কর্তব্য নিজের অজ্ঞতা দূর করা। না দেখ্যা, না শুন্যা, খালি আন্দাজে কথাবার্তা কলে বিবেচনার পরিচয় দেওয়া হয় না।
নাম ধরে ডাকায় রহিমা খাতুন লজ্জামিশ্ৰিত সুখে ও রাগে স্বামীকে ধমকায়, বুড়া হলেন আপনার আক্কেল হলো না। চ্যাংড়া প্যাংড়ার সামনে কি কয় না কয়- তার কথা আর শেষ হয় না, আঠালো শব্দে এই নিঃসন্তান প্রৌঢ়ার কণ্ঠ জড়িয়ে আসে, পান-খাওয়া ঠোঁটের কালচে খয়েরি কোণ দুটো বাঁকা হয়, বাঁকা হয়েই থাকে। এই সুযোগের সদ্ব্যবহার করে জালাল মাস্টার, নাদু আমাকে খুব ধরছিলো। এবার বর্ষ খুব প্রবল হলো তো, নাদুর একটা ঘর হেল্যা গেছে। গত বছর বড়ো ব্যাটার বিবাহ দিলো, ঘরের এক কোণে কলাপাতার বেড়া তুল্যা পুত্র পুত্রবধূ থাকে, আর বাকি কয় হাত জায়গাত থাকে নাদু, নাদুর পরিবার দুটা ব্যাটা, ছোটো বেটিও থাকে। নাদু কয়, সরকার, আপনার গোয়াল তো খালি থাকে, বকনাট মরার পর আর গোরু কিনলেন না, এড়াটাও বেচলেন, গোয়াল সাফ সুতরা করা নিয়া চেংটু কয়টা দিন থাকবো। ধান মাড়াইয়ের কামটা হলেই মিয়াবড়িত থাকা খ্যাড় নিয়া নতুন ঘর তুলমু। এই কয়টা দিন চেংটুক এ্যাঁনা জায়গা দেন।—তা কি করি। কল্যাম, থাকো বাপু বিপদে আপদে আশ্রয় দান মানুষের ধর্ম। না কি কও আনোয়ার?
এই বিবৃতিতে নিরঙ্কুশ আস্থা স্থাপন করা রহিমা খাতুনের পক্ষে মুশকিল। অবিশ্বাসে তার স্বর মৃদু হয়, বর্ষ গেছে চার মাস হলো, এই কয়টা মাস তারা থাকবার পারলো নাদুর বড়োব্যাটা বিয়া করছে এক বছরের উপরে, মরা একটা বিটিও হলো তার; আর এখন জায়গা নাজাই পড়ে চেংটুর, না?
জালাল মাস্টার এখন নীরব। দুধ দিয়ে কলা দিয়ে গুড় দিয়ে ভাত মাখার কাজে সে একাগ্রচিত্ত। রহিমা খাতুনের অবিশ্বাসী কণ্ঠ ক্রমে চড়া হয়। চেংটুকে রাত্রিবেলা থাকতে দিয়েছে কেন সে কি বুঝতে পারে না? খয়বার গাজীর লোক তাকে যে কোনো সময়ে উঠিয়ে নিয়ে যেতে পারে—এ কথাটা কে না বোঝে? নেহায়েৎ মিয়াদের জমিতে থাকে, তাই দিনে দুপুরে তাকে তুলে নেওয়াটা দেখতে খারাপ লাগে, নইলে খয়বার গাজীর কাছে এটা কি কোনো শক্ত কাজ? খয়বার গাজীকে সে তার স্বামীর চেয়ে অনেক ভালোভাবে চেনে। তার আপন খালুর চাচাতো ভগ্নীপতির মামাতো বোনের শ্বশুরবাড়ির দিক থেকে খয়বার কি তার মামা হয় না? খয়বার মামুর সম্পত্তির কথা, প্রতাপের কথা তারা শুনে আসছে জন্মের পর থেকে। তার সঙ্গে লাগতে যায় কোথাকার গোলামের বাচ্চা গোলাম চেংটু পরামাণিক। আবার সেই ছোড়ার সর্দার হয়েছে জালাল মাস্টার। চেন্টুর শয়তানিটা তার চোখে পড়ে না? তার মামার ভাইপো, সেও তো তার মামাতো ভাই হলো, তাকে কুকুর লেলিয়ে দেয় যে শয়তান সে কি-না নিশ্চিন্তে রাত্রি যাপন করতে এসেছে তারই বাড়িতে? স্বামীর জন্য পান সাজতে সাজতে রহিমা খাতুন বিড়বিড় করে, খয়বার মিয়া হাজার হলেও একজন মানী মানুষ। আপনে যে এতোদিন মাস্টারি করলেন সেই ইস্কুলের জমি দান করছিলো কেটা? খয়বার গাজীর বাপ না? খয়বার মিয়ার বাপ ইউনিয়ন বোর্ডের প্রেসিডেন্ট ছিলো পুরা তিরিশ বছর। তাই নিজেও চেয়ারম্যানগিরি করছে দশ বছর; চেংটু লাগে তার সাথে?
জালাল মাস্টার বলে, ‘আরে মানী মানুষ, ভালো বংশের সন্তান, ঐ কারণেই মিটমাট করা ফালান দরকার। বোঝে না, গায়ের চাষাভুষারা কেমন বেয়াদব হয় উঠতিছে। চাষার রাগ, জাহেল মানুষের রাগ হলে কি হয় কেউ কবার পারে? তখন তোমার মামুই বেইজ্জত হবো! হবো না?
হলে হোক। রহিমা খাতুন ভাত খাবার থালা বাসন তোলে, তক্তপোষে বিছানা মাদুর, দস্তরখান তুলে ঝাড়ে আর বলে, তাই মানুষ হলো একখান বদের হাড্‌ডি! খয়বার গাজীক আমি চিনি না? আত্মীয় হলে কি হয়, হক কথা কতে দোষ কি? তাই কতো মানষের সর্বনাশ করছে তার ল্যাখাজোকা নাই। কতো মানুষ তাক শাপমণি দিছে! এই অঞ্চলের গরিব মানষের গোরু তাই সব নিয়া রাখছে চরের মধ্যে। এই মানুষের কিছু হলে আপনের কি? রহিমা খাতুনের এই পক্ষ পরিবর্তনে আনোয়ার হা হয়ে যায়। জালাল মাস্টার বলে, ‘খয়বার মিয়া অন্যায় যদি করা থাকে তো তাক ভালো করা বুঝায়া কলেই তাই বুঝবো। মানী মানুষটার বেইজ্জত করা কি সৎ কাম হবো?
বেইজ্জত কনকি? রহিমা খ্যাক করে ওঠে, মানষের সাথে তাই যা ব্যবহার করতিছে, সুযোগ পালে মানষে তাক পিস্যা খাবো, ছেচা খাবো। কল্যাম, এই কথাটা কল্যাম। দ্যাখেন, ঠিক হয় নাকি দ্যাখেন।’
উত্তেজিত হও কিসক? খয়বার মিয়া জেদি মানুষ। বড়োমানষের ব্যাটা, বড়োমানষের নাতি, শৈশবকাল থাকা যা কামনা করছে তাই তার হাতোত আসছে। জেদী হবো না? তাক সৎ পরামর্শ দিবার মতো মানুষের বড়ো অভাব!’
আপনের পরামর্শ তাই নিবো? আপনাক দুইটা পয়সার দাম দেয়? তার মান-সম্মানইজ্জত নিয়া আপনের লাগে কিসক, কন?
আনোয়ার জটিলতার মধ্যে পড়ে। জালাল মাস্টার খয়বার গাজীর মান-সম্মান নিয়ে এতো মাথা ঘামায় কেন? রহিমা খাতুন হঠাৎ ব্যস্ত হয়ে পড়ে, বাবা রাত হছে, তোমায় চাচা চাচী আবার অস্থির হয় পড়বো। এই মানষের পাল্লায় পড়লে রাত ভর খালি গল্পোই করবো! আজ খুব ঠাণ্ডা পড়েছে। বারান্দা থেকে নিচে নামতেই মনে হলো যেন সর-পড়া পুকুরে লাফ দেওয়া হলো। জালাল মাস্টার বৌকে ডাকে, ক্যাগো, দুয়ার দাও। একটু আগায়া দিয়া আসি৷ না না, আপনি যান। আমি একাই যেতে পারবো। আনোয়ার ভদ্রতা করে বলে বটে কিন্তু বাইরে বেশ অন্ধকার। চাঁদ উঠেই ডুবে গেছে, তারার আলো ততো স্পষ্ট নয় বলে উঠোনের শূন্যতা তবু একটু সহনীয়। চাঁদের আলো থাকলে এই উঠান থেকে শুরু করে সামনের শূন্য ধানজমি পর্যন্ত খ খ করতো। অন্ধকারের জন্য ফাঁকা ফাকা ঠেকে না, কিন্তু আকাশ থেকে মাটি পর্যন্ত বিপুল জায়গা জুড়ে ঘোরতর অনিশ্চয়তা।
বারান্দার ওপর থেকে রহিমা খাতুন বলে, কিষানপাট কেউ নাই? নিওড়ের মধ্যে হাঁটাহাটি করা অ্যাস আপনে দম নিবার পারবেন? তখন বুকত তাল মালিশ করবো কেটা? তামামটা দিন হামি চোকির সাথে পিঠ ঠেকাবার পারি নাই, আবার রাত ভরা আপনের খেদমত করা নাগবো? হামার নিন্দা পাড়া নাগে না?
আনোয়ার বিব্রত হয়, আপনার শরীর খারাপ, আপনি বরং শুয়ে পড়েন।’ এই সময় অন্ধকারে খড়ের গাদার আড়াল থেকে শোনা যায়, ‘আপনে ঘরত থাকেন, হামি যাই।’
‘কেটা? কথা কয় কেটা? রহিমা খাতুন চমকে ওঠে, কেটা গো? হামি চাচী। গায়ে কথা-জড়ানো চেংটু এগিয়ে আসে। ‘তুই’ ছু আনোয়ারকে দেখিয়ে চেন্টু বলে, তাই একলা যাবো, তাই উঠা আসলাম। চেংটুর কথায় জালালউদ্দিন হা হা করে ওঠে, ‘তুই যাবু? তোর প্যাট কানা করা দিবো না? তোর সাহস বেশি হছে, না?
রহিমা খাতুন শান্ত গলায় হুকুম দেয়, চেংটুই যা। চ্যাংড়াক ঘরোত দিয়া আয়। দেরি করিস না বাবা!

Page 5 of 17
Prev1...456...17Next
Previous Post

ছোটগল্প সংকলন – আখতারুজ্জামান ইলিয়াস

Next Post

খোয়াবনামা (উপন্যাস) – আখতারুজ্জামান ইলিয়াস

Next Post

খোয়াবনামা (উপন্যাস) - আখতারুজ্জামান ইলিয়াস

অসীমানন্দ মহারাজের গল্প - অসীমানন্দ মহারাজ

মন্তব্য করুন জবাব বাতিল

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

সাম্প্রতিক প্রকাশনাসমূহ

  • তিন গোয়েন্দা ভলিউম ১১৫: ভূমিকম্প – শামসুদ্দীন নওয়াব
  • তিন গোয়েন্দা ভলিউম ১১৮: বিভীষিকার প্রহর – রকিব হাসান
  • তিন গোয়েন্দা ভলিউম ১১৭: বড়দিনের ছুটি – রকিব হাসান
  • তিন গোয়েন্দা ভলিউম ১১৭: আলাস্কা অভিযান – রকিব হাসান
  • তিন গোয়েন্দা ভলিউম ১১৭: আমিই কিশোর – রকিব হাসান

বিভাগসমূহ

  • আত্মজীবনী
  • ইতিহাস
  • উপন্যাস
  • কবিতা
  • কাব্যগ্রন্থ
  • গল্পের বই
  • গোয়েন্দা কাহিনী
  • ছোট গল্প
  • জীবনী
  • দর্শন
  • ধর্মীয় বই
  • নাটকের বই
  • প্রবন্ধ
  • বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী
  • বৈজ্ঞানিক বই
  • ভূতের গল্প
  • রহস্যময় গল্পের বই
  • রোমাঞ্চকর গল্প
  • রোম্যান্টিক গল্পের বই
  • শিক্ষামূলক বই
  • আমাদের সম্পর্কে
  • যোগাযোগ
  • গোপনীয়তা নীতি

© 2023 BnBoi - All Right Reserved

No Result
View All Result
  • বাংলাদেশী লেখক
    • অতুলচন্দ্র গুপ্ত
    • অভিজিৎ রায়
    • আখতারুজ্জামান ইলিয়াস
    • আনিসুল হক
    • আবু ইসহাক
    • আবু রুশদ
    • আবুল আসাদ
    • আবুল খায়ের মুসলেহউদ্দিন
    • আবুল বাশার
    • আরজ আলী মাতুব্বর
    • আল মাহমুদ
    • আসাদ চৌধুরী
    • আহমদ ছফা
    • আহমদ শরীফ
    • ইমদাদুল হক মিলন
    • উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী
    • কাসেম বিন আবুবাকার
    • জসীম উদ্দীন
    • তসলিমা নাসরিন
    • দাউদ হায়দার
    • দীনেশচন্দ্র সেন
    • নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়
    • নিমাই ভট্টাচার্য
    • প্রফুল্ল রায়
    • প্রমথ চৌধুরী
    • ময়ূখ চৌধুরী
    • মহাদেব সাহা
    • মাহমুদুল হক
    • মুহম্মদ জাফর ইকবাল
    • হুমায়ূন আহমেদ
  • ইন্ডিয়ান লেখক
    • অক্ষয়কুমার মৈত্রেয়
    • অতুল সুর
    • অদ্রীশ বর্ধন
    • অনির্বাণ বন্দ্যোপাধ্যায়
    • অনীশ দেব
    • অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর
    • অমিয়ভূষণ মজুমদার
    • আশাপূর্ণা দেবী
    • আশুতোষ মুখোপাধ্যায়
    • ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর
    • কাজী নজরুল ইসলাম
    • ক্ষিতিমোহন সেন
    • তারাদাস বন্দ্যোপাধ্যায়
    • তারাশংকর বন্দ্যোপাধ্যায়
    • দেবীপ্রসাদ চট্টোপাধ্যায়
    • নারায়ণ সান্যাল
    • নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী
    • নীহাররঞ্জন গুপ্ত
    • পাঁচকড়ি দে
    • পূর্ণেন্দু পত্রী
    • বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
    • বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
    • বিমল মিত্র
    • মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়
    • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
    • সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
    • হেমেন্দ্রকুমার রায়
  • বিভাগসমূহ
    • আত্মজীবনী
    • ইতিহাস
    • উপন্যাস
    • কবিতা
    • কল্পকাহিনী
    • কাব্যগ্রন্থ
    • খেলাধুলার বই
    • গল্পের বই
    • গোয়েন্দা কাহিনী
    • ছোট গল্প
    • জীবনী
    • দর্শন
    • ধর্মীয় বই
    • নাটকের বই
    • প্রবন্ধ
    • বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী
    • বৈজ্ঞানিক বই
    • ভূতের গল্প
    • মুক্তিযুদ্ধের-বই
    • রহস্যময় গল্পের বই
    • রোমাঞ্চকর গল্প
    • রোম্যান্টিক গল্পের বই
    • শিক্ষামূলক বই
    • সমগ্র
  • সিরিজ বই
    • মিসির আলী সমগ্র
    • হিমু সিরিজ

© 2023 BnBoi - All Right Reserved

Welcome Back!

Login to your account below

Forgotten Password?

Retrieve your password

Please enter your username or email address to reset your password.

Log In