নূপুর গভীর ঘুমে তলিয়ে গেল। ওসি সাহেব দৌড়ে গেলেন। স্ত্রীকে বিছানায় শুইয়ে দিলেন। ওসি সাহেবের চোখ ভর্তি বিস্ময়। তিনি আমার হাত ধরে কাঁপাকাঁপা গলায় বললেন, নূপুর কি সত্যি ভাল হয়ে যাবে?
আমি বললাম, হ্যাঁ। এতো বিশ্বাস কোত্থেকে পেলাম কে জানে। আমি বললাম, আপনাদের পরীর মতো রূপবতী একটা মেয়ে হবে। অবিকল রূপার মতো। তাকে নিয়ে আপনাদের হবে সোনার সংসার।
রূপা কে?
আছে। একজন। সে আমার জন্যে অদ্ভুত সারপ্রাইজ নিয়ে অপেক্ষা করে। আমি কখনো তা দেখি না।
কেন দেখেন না?
দেখলেইতো সারপ্রাইজ নষ্ট। ভাই, আমি বিদায় নিচ্ছি।
এখন মধ্যদুপুর।
আমি স্থির হয়ে দাঁড়িয়ে আছি আমার হাতে দুপুরমণি গাছের চারা। অপেক্ষা করছি সেই মাহেন্দ্রক্ষণের যখন আমার ছায়া পড়বে না এবং দুপুরমণি গাছে ফুল ফুটবে। অস্পষ্টভাবে মনে হল বাবা আমার সামনে দাঁড়িয়ে আছেন। তাঁর চোখ অশ্রুসজল। তিনি ধরা গলায় বললেন, হিমু! বাবা শোন, আমার দীর্ঘদিনের সাধনা নষ্ট হয় নি। তোকে দেখে বড়ই আনন্দ হচ্ছে।
বাবা আমি কি মহাপুরুষ হয়ে গেছি?
বলা কঠিন।
কঠিন কেন?
সব মানুষের মধ্যেই একজন মহাপুরুষ বাস করেন। তাঁরা কখনো প্রকাশিত হন। কখনো হন না। সমস্যা এইখানেই। তুই তোর মার ছবিটা দেখেছিস?
না।
দেখবি না?
আমি জবাব দিলাম না। আকাশের দিকে তাকালাম। সূর্য মাথার উপর উঠে গেছে এখন কথা বলার সময় না।
নৈঃশব্দের সময়।