হাদীস নং ১৯৯১
ইবরাহীম ইবনে মুনযির রহ…….ইবনে উমর রা. থেকে বর্ণিত যে, তারা নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সময়ে বাণিজ্যিক দলের কাছ থেকে (পথিমধ্যে) খাদ্য খরিদ করতেন। সে কারণে খাদ্য-দ্রব্য বিক্রয়ের স্থানে তা স্থানান্তর করার আগে, বণিক দলের কাছ থেকে ক্রয়ের স্থলে বেচা-কেনা করতে নিষেধ করার জন্য তিনি তাদের কাছে লোক পাঠাতেন। রাবী বলেন, ইবনে উমর রা. আরো বর্ণনা করেছেন, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পূর্ণভাবে অধিকারে আনার আগে খরিদ করা পণ্য বিক্রয় করতে নিষেধ করেছেন।
হাদীস নং ১৯৯২
মুহাম্মদ ইবনে সিনান রহ…….আতা ইবনে ইয়াসার রহ. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি আবদুল্লাহ ইবনে আমর ইবনে আস রা.-কে বললাম, আপনি আমাদের কাছে তাওরাতে বর্ণিত নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর গুণাবলী বর্ণনা করেন। তিনি বললেন : আচ্ছা। আল্লাহ কসম ! কুরআনে বর্ণিত তাঁর কিছু গুণাবলী তাওরাতে ও উল্লেখ করা হয়েছে : হে নবী ! আমি আপনাকে সাক্ষীরূপে সুসংবাদদাতা ও ভয় প্রদর্শনকারী রূপে প্রেরণ করেছি এবং উম্মীদের রক্ষক হিসাবেও। আপনি আমার বান্দা ও আমার রাসূল। আমি আপনার নাম মুতাওয়াক্কিল (আল্লাহর উপর ভরসাকারী) রেখেছি। তিনি মন্দ স্বভাবের নন, কঠোর হৃদয়ের নন বরং বাজারে চীৎকারীও নন। তিনি অন্যায়কে অন্যায় দ্বারা প্রতিহত করেন না বরং মাফ করে দেন, ক্ষমা করে দেন। আল্লাহ তা’আলা তাকে ততক্ষণ মৃত্যু দিবেন না যতক্ষণ না, তাঁর দ্বারা বিকৃত মিল্লাতকে সঠিকপথে আনেন অর্থাৎ যতক্ষণ না তারা (আরববাসীরা) লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু এর ঘোষণা দিবে। আর এ কালিমার মাধ্যমে অন্ধ-চক্ষু, বধির-কর্ণ ও আচ্ছাদিত হৃদয় খুলে যাবে। আবদুল আযীয ইবনে আবু সালামা রহ হিলাল রহ. থেকে হাদীস বর্ণনায় ফুলাইহ রহ.-এর অনুসরণ করেছেন। সাঈদ রহ……….ইবনে সালাম রহ. থেকে হাদীস বর্ণনা করেছেন আবু আবদুল্লাহ বুখারী রহ. বলেন, যে সকল বস্তু আবরণের মধ্যে থাকে তাকে غلف বলে। তার একবচন أغلف যেমন, বলা হয়, سيف أغلف কোষাবদ্ধ তরবারি। قوس غلفاء কোষবদ্ধ ধনুক । رجل أغلف খাতনা না করা পুরুষ।
হাদীস নং ১৯৯৩
আবদুল্লাহ ইবনে ইউসুফ রহ………আবদুল্লাহ ইবনে উমর রা. থেকে বর্ণিত যে, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন : যে ব্যক্তি খাদ্য খরিদ করবে, সে তা পুরাপুরী আয়ত্ত্বে না এনে বিক্রি করবে না।
হাদীস নং ১৯৯৪
আবদান রহ……….জাবির রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, (আমার পিতা) আবদুল্লাহ ইবনে আমর ইবনে হারাম রা. ঋণী অবস্থায় মারা যান। পাওনাদারেরা যেন তাঁর কিছু ঋণ ছেড়ে দেয়, এজন্য আমি নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে সাহায্য চাইলাম। নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের কাছে কিছু ঋণ ছেড়ে দিতে বললে, তারা তা করল না। তখন নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে বললেন : যাও তোমার প্রত্যেক ধরনের খেজুরকে আলাদা আলাদা করে রাখ, আজওয়া আলাদা এবং আযকা যায়েদ আলাদা করে রাখ। পরে আমাকে খবর দিও। (জাবির রা. বলেন) আমি তা করে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে খবর দিলাম। তিনি এসে খেজুরের (স্তপের) উপরে বা তার মাঝখানে বসলেন। তারপর বললেন, পাওনাদারদের মেপে দাও। আমি তাদের মেপে দিতে লাগলাম, এমনকি তাদের পাওনা পুরোপুরী দিয়ে দিলাম। আর আমার খেজুর এরূপ থেকে গেল, যেন এ থেকে কিছুই কমেনি। ফিরাস রহ. শাবী রহ. সূত্রে জাবির রা. থেকে বর্ণনা করেন যে, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের এ পর্যন্ত মেপে দিতে থাকলেন যে তাদের ঋণ পরিশোধ করে দিলেন। হিশাম রহ. ওহাব রহ. সূত্রে জাবির রা. থেকে বর্ণনা করেন যে, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছিলেন গাছ থেকে খেজুর কেটে নাও এবং পুরোপুরী আদায় করে দাও।
হাদীস নং ১৯৯৫
ইবরাহীম ইবনে মূসা রহ………মিকদাদ ইবনে মাদীকারিব রা. সূত্রে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, তোমরা তোমাদের খাদ্য মেপে নিবে, তাঁতে তোমাদের জন্য বরকত হবে।
হাদীস নং ১৯৯৬
মূসা রহ……..আবদুল্লাহ ইবনে যায়েদ রা. থেকে বর্ণিত, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ইবরাহীম আ. মক্কাকে হারাম ঘোষণা করেছেন ও তার জন্য দু’আ করেছেন। আমি মদীনাকে হারাম ঘোষণা করেছি, যেমন ইবরাহীম আ. মক্কাকে হারম ঘোষণা করেছেন এবং আমি মদীনার এক মুদ ও সা’ এর জন্য দু’আ করেছি। যেমন ইবরাহীম আ. মক্কার জন্য দু’আ করেছিলেন।
হাদীস নং ১৯৯৭
আবদুল্লাহ ইবনে মাসলামা রহ……..আনাস ইবনে মালিক রা. থেকে বর্ণিত, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন : ইয়া আল্লাহ ! আপনি তাদের মাপের পাত্রে বরকত দিন এবং তাদের সা’ও মুদ-এ বরকত দিন অর্থাৎ মদীনাবাসীদের।
হাদীস নং ১৯৯৮
ইসহাক ইবনে ইবরাহীম রহ…….আবদুল্লাহ ইবনে উমর রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, যারা অনুমানে (না মেপে) খাদ্য খরিদ করে নিজের স্থানে পৌঁছানোর আগেই তা বিক্রি করত, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সময়ে আমি দেখেছি যে, তাদেরকে মারা হত।
হাদীস নং ১৯৯৯
মূসা ইবনে ইসমাঈল রহ……..ইবনে আব্বাস রা. থেকে বর্ণিত যে, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম খাদ্য (খরিদ করে) পুরাপুরী আয়ত্ত্বে না এনে বিক্রি করতে নিষেধ করেছেন। (রাবী তাইস রহ. বলেন) আমি ইবনে আব্বাস রা.-কে জিজ্ঞাসা করলাম, এ কিভাবে হয়ে থাকে ? তিনি বললেন, এ এভাবে হয়ে থাকে যে, দিরহাম এর বিনিময়ে দিরহাম আদান-প্রদান হয় অথচ পণ্যদ্রব্য অনুপস্থিত থাকে। ইমাম বুখারী রহ. বলেন, আয়াতে বর্ণিত ‘মারজুন’ অর্থ যারা নির্দেশ পালনে বিলম্বিত করে।