হাদীস নং ২৫০৩
কুতায়বা ইবন সাঈদ (রঃ) ……….. আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) বলেছেন, মুনাফিকের আলামত তিনটি বলতে গেলে মিথ্যা বলে, আমানত রাখলে (তাতে) খিয়ানত কর, আর ওয়াদা করলে তা ভঙ্গ করে।
হাদীস নং ২৫০৪
ইবরাহীম ইবন মূসা (রঃ) …… জাবির ইবন আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নাবী (সাঃ) . এর ওয়াতের পর আবূ বকর (রাঃ) এর কাছে (রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) ্ সাঃ) কর্তৃক নিয়োগকৃত বাহরাইনের শাসক) আলা ইবন হাযরামীর পক্ষ থেকে মালপত্র এসে পৌছল। তখন আবূ বরক (রাঃ) ঘোষণা করলেন, নাবী (সাঃ) . এর যিম্মায় কারো কোন ঋন (পাওনা) থাকলে কিংবা তার পক্ষ থেকে কোন ওয়াদা থাকলে সে যেন আমাদের কাছে এসে তা নিয়ে যায়। জাবির (রাঃ) বলেন, আমি বললাম, রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) আমাকে এরূপ, এরূপ এবং এরূপ দান করার ওয়াদা করেছিলেন। জাবির (রাঃ) তার দু’হাত তিনবার ছড়িয়ে দেখালেন। জাবির (রাঃ) বলেন, তখন তিনি (আবূ বকর) (রাঃ) আমার দু’হাতে গুণে গুণে পাচ শ দিলেন, আবার পাচ শ দিলেন, আবার পাচ’শ দিলেন।
হাদীস নং ২৫০৫
মুহাম্মদ ইবন আব্দুর রাহীম (রঃ) ……. সাঈদ ইবন জুবায়র (রঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, হীরাতের জনৈক ইয়াহূদী আমাকে প্রশ্ন করল, দুই মুদ্দতের কোনটি মূসা (আঃ) পূর্ণ করেছিলেন? আমি বললাম, আরবের কোন জ্ঞানীর কাছে গিয়ে তাকে জিজ্ঞাসা না করে আমি বলতে পারব না। পরে ইবন আব্বাসের কাছে এসে জিজ্ঞাসা করলাম। তিনি বললেন, মূসা (আঃ) দীর্ঘতর ও উত্তর সীমাই পূর্ণ করেছিলেন। আল্লাহর রাসূল . যা বলেন, তা করেন।
হাদীস নং ২৫০৬
ইয়াহইয়া ইবন বুকায়র (রঃ)………. আবদুল্লাহ্ ইবন আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, হে মুসলিম সমাজ ! কি করে তোমরা আহলে কিতাবদের নিকট জিজ্ঞাসা কর? অথচ আল্লাহ্ তার নাবী (সাঃ) র উপর যে, কিতাব অবর্তীণ করেছেন, তা আল্লাহ সম্পর্কিত নবতর তথ্য সম্বলিত, যা তোমরা তিলাওয়াত করছ এবং যার মধ্যে মিথ্যার কোন সংমিশ্রন নেই। তদুপরি আল্লাহ তোমাদের জানিয়ে দিয়েছেন যে, আহলে কিতাবরা আল্লাহ যা লিখে দিয়েছিলেন, তা পরিবর্তন করে ফেলেছেন এবং নিজ হাতে সেই কিতাবের বিকৃতি সাধন করে তা দিয়ে তুচ্ছ মূল্যের উদ্দেশ্যে প্রচার করেছে যে, এটা আল্লাহর পক্ষ থেকেই অবতীর্ণ। তোমাদেরকে প্রদত্ত মহাজ্ঞান কি তাদের কাছে জিজ্ঞাসা করার ব্যাপারে তোমাদের বাধা দিয়ে রাখতে পারে না ? আল্লাহর শপথ ! তাদের একজনকেও আমি কখনো তোমাদের উপর যা নাযিল হয়েছে সে বিষয়ে তোমাদের জিজ্ঞাসা করতে দেখিনি।
হাদীস নং ২৫০৭
উমর ইবন হাফস ইবন গিয়াস (রঃ) …….. নু’মান ইবন বশীর (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নাবী (সাঃ) . বলেছেন, আল্লাহর নির্ধারিত সীমারেখার ব্যাপারে শিথিলতা প্রদর্শন করা এবং তা লংঘনকারী ব্যক্তির উপমা হল সেই যাত্রীদল, যারা কুর’আর মাধ্যমে এক নৌযানে নিজেদের স্থান নির্ধারণ করে নিল। ফলে কারো স্থান হল এর নীচতলায় আর কারও হল উপরতলায়। যারা নীচতলায় ছিল তারা পানিনিয়ে উপর তালা লোকদের কাছ দিয়ে আসত। এতে তারা বিরক্তি প্রকাশ করল। তখন এক লোক কুড়াল নিয়ে নৌযানের নীচের অংশে ফুটো করতে লেগে গেল। এ দেখে উপর তলার লোকজন তাকে এসে জিজ্ঞাসা করল তোমার হয়েছে কি? সে বলল, আমাদের কারণে তোমরা কষ্ট পেয়েছ। অথচ আমারও পানি প্রয়োজন আছে। এ মুহুর্তে তারা যদি এর দু’হাত চেপে ধরে তাহলে তাকে যেমন রক্ষা করা হল তেমনি নিজেদেরও রক্ষা হল। আর যদি তাকে ছেড়ে দেয় তবে তাকে ধ্বংস করা হল এবং নিজেদেরও ধ্বংস করা হল।
হাদীস নং ২৫০৮
আবুল ইয়ামন (রঃ) …… উম্মুল আলা (রাঃ) নাুী একজন আনসারী মহিলা যিনি নাবী (সাঃ) . এর (হাতে) বায়আত হয়েছিলেন, তিনি বলেন, মুহাজিরদের বাসস্থান দানের জন্য আনসারগণ যখন কুর’আ নিক্ষেপ করলেন, তখন তাদের ভাগে উসমান উব্ন মাযউনের জন্য বাসস্থান দান নির্ধারিত হল। উম্মুল আলা (রাঃ) বলেন, সেই থেকে উসমান ইবন মাযউন (রাঃ) আমাদের এখানে বসবাস করতে থাকেন। এরপর তিনি অসুস্থ হয়ে পড়লে আমরা তার সেবা শুশ্র“ষা করলাম। পরে তিনি যখন মারা গেলেন এবং আমরা তাকে কাফন পরালাম, তখন রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) আমাদের এখানে আসলেন। আমি (উসমান ইবন মাযউনকে লক্ষ্য করে) বললাম, হে আবূ সায়িব ! তোমার প্রতি আল্লাহর রহমত বর্ষিত হোক। তোমার সম্পর্কে আমার সাক্ষ্য এই যে, আল্লাহ তোমাকে অবশ্য মর্যাদা দান করেছেন। নাবী (সাঃ) . তাকে বললেন, তোমাকে কে জানোাল যে, আল্লাহ তাকে মর্যাদা দান করেছেন। আমি বললাম, ইয়া রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) ্ ! আমার পিতা মাতা আপনার জন্য কুরবান হোক। আমি জানিনা। রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) বললেন, আল্লাহর কসম। উসমানের কাছে তো মৃত্যু এসে গেছে, আমি তো তার জন্য কল্যাণের আশা করি। আল্লাহর কসম ! আমি আল্লাহর রাসূল হওয়া সত্ত্বেও জানিনা তার সাথে কি আচরণ করা হবে। তিনি (উম্মুল আলা) বলেন, আল্লাহর কসম, একথার পরে কখনো আমি কাউকে পূত পবিত্র বর্ণনা করি না। সে কথা আমাকে চিন্তায় ফেলে দিল। তিনি বলেন, পরে আমি স্বপ্নে দেখলাম যে, উসমান (ইবন মাযউন রাঃ) এর জন্য একটা প্রস্রবণ প্রবহিত হচ্ছে। এরপর আমি রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) এর কাছে এসে তাকে সে খবর জানোালাম। তিনি বলেন, সেটা হচ্ছে তার নেক আমল।