হাদীস নং ২৪৯৪
আলী ইবন আবদুল্লাহ (রঃ) ……. আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) বলেছেন, তিন শ্রেণীর ব্যক্তির সাথে কিয়ামতের দিন আল্লাহ তা’আলা কথা বলবেন না এবং (করুণার দৃষ্টিতে) তাদের প্রতি তাকাবেন না এবং তাদের পাপ মোচন করবেন না আর তাদের জন্য রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি। প্রথম শ্রেণীর ব্যক্তি সে, যার কাছে অতিরিক্ত পানি রয়েছে রাস্তার পাশে, আর সে পানি থেকে মুসাফিরকে বঞ্চিত রাখে। আর এক শ্রেণীর ব্যক্তি সে, যে কারো আনুগত্যের বায়আত করে এবং একমাত্র দুনিয়ার গরযেই সে তার করে। ফলে চাহিদা মাফিক তাকে দিলে সে অনুগত থাকে, আর না দিলে অনুগত থাকে না। আর এক শ্রেণীর ব্যক্তি সে যে আসরের পর কারো সাথে পণ্য নিয়ে দামদর করে এবং আল্লাহর নামে মিথ্যা হলফ করে বলে যে, সে ক্রয় করতে এত মূল্য দিয়েছে আর তা শুনে ক্রেতা কিনে নেয়।
হাদীস নং ২৪৯৫
মূসা ইবন ইসমাঈল (রঃ) ……. ইবন মাস’উদ (রাঃ) সূত্রে নাবী (সাঃ) . থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, যে ব্যক্তি সম্পদ আত্মসাৎ করার উদ্দেশ্যে (মিথ্যা) কসম করবে (কিয়ামতের দিন) সে আল্লাহর সংগে সাক্ষাৎ করাবে এমন অবস্থায় যে আল্লাহ তার প্রতি অত্যন্ত অসন্তুষ্ট থাকবেন।
হাদীস নং ২৪৯৬
ইসহাক ইবন নাসর (রঃ) …….. আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, একদল লোককে নাবী (সাঃ) . হলফ করতে বললেন। তখন (কে কার আগে হলফ করবে এ নিয়ে) তাড়াহুড়া শুরু করে দিল। তখন তিনি কে (আগে) হলফ করবে, তা নির্ধারনের জন্য তাদের নামে লটারী করার নির্দেশ দিলেন।
হাদীস নং ২৪৯৭
ইসহাক (রঃ) ……… আবদুল্লাহ ইবন আবূ আওফা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, এক লোক তার মালপত্র বাজারে এনে এবং হলফ করে বলল যে, এগুলো (খরিদ বাবদ) সে এত দিয়েছে, অথচ সে তত দেয়নি। তখন আয়াত নাযিল হলোঃ যারা নগণ্য মূল্যের বিনিময়ে আল্লাহর সাথে কৃত ওয়াদা এবং নিজের শপথ বিক্রি করে……..। ইবন আবূ আওফা (রাঃ) বলেন, (দাম চড়ানোর মতলবে) যে ধোকা দেয়, সে মূলতঃ সুদখোর ও খিয়ানতকারী।
হাদীস নং ২৪৯৮
বিশর ইবন খালিদ (রঃ) …….. আবদুল্লাহ ইবন মাসউদ (রাঃ) নাবী (সাঃ) . থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি . বলেছেন, যে ব্যক্তি কারো অথবা তার ভাইয়ের অর্থ আত্মসাতের মতলবে মিথ্যা হলফ করবে, সে (কিয়ামতে) মহান আল্লাহর দেখা পাবে এমন অবস্থায় যে, তিনি তার উপর অত্যন্ত অসন্তুষ্ট। অতঃপর আল্লাহ্ তা’আলা উক্ত হাদীসের সমর্থনে কুরআনে এই আয়াত নাযিল করলেন ঃ পর্যন্ত। যারা আল্লাহর সাথে কৃত ওয়াদা এবং নিজেদের শপথ তুচ্ছ মূল্যে বিক্রি করে, আখিরাথে তাদের কোন অংশ নেই (৩ঃ৭৭)। আর আল্লাহ্ কিয়ামতের দিন তাদের সাথে কথা বলবেন না এবং তাদের প্রতি (করুণার দৃষ্টিতে) তাকাবেন না এবং তাদেরকে (পাপ থেকে) বিশুদ্ধও করবেন না। আর তাদের জন্য রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক আযাব। পরে আশআস (রাঃ) আমার সংগে দেখা করে জিজ্ঞাসা করলেন, আবদুল্লাহ (রাঃ) আজ তোমাদের কি হাদীস শুনিয়েছেন? আমি বললাম, এই এই (হাদীস শুনিয়েছেন) তিনি বললেন, আমার ব্যাপারেই আয়াতটি নাযিল হয়েছে।
হাদীস নং ২৪৯৯
ইসমাঈল ইবন আবদুল্লাহ (রঃ) ……. তালহা ইবন উবাদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, এক লোক রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) এর নিকট এসে তাকে ইসলাম (এক করণীয়) সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করতে লাগল। তখন রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) বললেন, দিনে রাতে পাচ ওয়াক্ত সালাত। সে বলল, আমার উপর আরও কিছু ওয়াজিব আছে? তিনি বললেন, না, নেই। তবে নফল হিসাবে পড়তে পার। তারপর রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) বললেন, আর রমাযন মাসের সিয়াম। সে জিজ্ঞাসা করল, আমর উপর এ ছাড়া আরও কি ওয়াজিব আছে? তিনি বললেন, না, নেই। তবে নফল হিসাবে (সিয়াম) পালন করতে পার। তারপর রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) তাকে যাকাতের কথাও বললেন; সে জানোতে চাইল, আমার উপর এ ছাড়া আরও কিছু ওয়াজিব আছে? তিনি বললেন, না, নেই; তবে নফল হিসাবে (সাদকা) করতে পার। তারপর লোকটি এই বলে প্রস্থান করল, আল্লাহর কসম ! এতে আমি কোন কম বেশি করব না। রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) বললেন সত্য বলে থাকলে সে সফল হয়ে গেল।
হাদীস নং ২৫০০
মূসা ইবন ইসমাঈল (রঃ) …….. আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত, নাবী (সাঃ) . বলেছেন, কারও হলফ করতে হলে সে যেন আল্লাহর নামেই হলফ করে, নতুবা চুপ করে থাকে।
হাদীস নং ২৫০১
আবদুল্লাহ ইবন মাসলাম (রঃ) …….. উম্মু সালামা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) বলেছেন, তোমরা আমার কাছে মামলা মোকদ্দমা নিয়ে আস। আর তোমাদের মধ্যে কেউ কেউ হয়ত প্রতিপক্ষের তুলনায় প্রমাণ (সাক্ষী) পেশ করার ব্যাপারে অধিক বাকপটু। তবে যেনে রেখ, বাকপটুতার কারণে যার অনুকূলে আমি তার ভাইয়ের প্রাপ্য হক ফায়সালা করে দেই, তার জন্য আসলে আমি জাহান্নামের অংশ নির্ধারন করে দেই। কাজেই, সে যেন তা গ্রহন না করে।
হাদীস নং ২৫০২
ইবরাহীম ইবন হামযা (রঃ) ……. আবদুল্লাহ ইবন আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আবূ সুফিয়ান (রাঃ) আমাকে খবর দিয়েছেন যে, (রোম সম্রাট) হেরাক্লিয়াস তাকে বলেছিলেন, তোমাকে আমি জিজ্ঞাসা করেছিলাম, তিনি (নাবী (সাঃ) সাঃ) তোমাদের কি কি আদেশ করেন? তুমি বললে যে, তিনি তোমাদেরকে সালাতের, সত্যবাদিতার, পবিত্রতার, ওয়াদা পূরণের ও আমানত আদায়ের আদেশ দেন। হিরাক্লিয়াস বললেন, এটাই (অবশ্যই) নাবী (সাঃ) গণের সিফাত (গুণাবলী)