আবদান রহ………নুমান ইবনে বাশীর রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমার মাতা আমার পিতাকে তার মালের কিছু অংশ আমাকে দান করতে বললেন। পরেতাকে দেওয়া ভাল মনে করলে আমাকে তা দান করেন। তিনি (আমার মাতা) তখন বললেন, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে সাক্ষী করা ছাড়া আমি রাযী নাই। এরপর তিনি (আমার পিতা) আমার হাত ধরে আমাকে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে নিয়ে গেলেন, আমি তখন বালক মাত্র। তিনি বললেন, এর মা বিনতে রাওয়াহা এ-কে কিছু দান করার জন্য আমার কাছে আবদার জানিয়েছে। তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, সে ছাড়া তোমার আর কোন ছেলে আছে? তিনি বললেন, হ্যাঁ, আছে। নুমান রা. বলেন, আমার মনে পড়ে তিনি বলেছিলেন, আমাকে অন্যায় কাজে সাক্ষী করবেন না। আর আবু হারিয রহ. ইমাম শাবী রহ. সূত্রে বর্ণনা করেছেন, আমি অন্যায় কাজে সাক্ষী হতে পারি না।
হাদীস নং ২৪৭৫
আদম রহ……….ইমরান ইবনে হুসাইন রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আমার যুগের লোকেরাই তোমাদের মধ্যে সর্বোত্তম। তারপর তাদের নিকটবর্তী যুগের লোকেরা, এরপর তাদের নিকটবর্তী যুগের লোকেরা। ইমরান রা. বলেন, আমি বলতে পারছি না, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (তাঁর যুগের) পরে দুই যুগের কথা বলছিলেন, না তিন যুগের কথা। নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তোমাদের পর এমন লোকদের আগমন ঘটবে, যারা খিয়ানত করবে, আমানতদারী রক্ষা করবে না। সাক্ষ্য দিতে না ডাকলেও তারা সাক্ষ্য দিবে। তারা মান্নত করবে কিন্তু তা পূর্ণ করবে না। তাদের মধ্যে মেদ বৃদ্ধি পাবে।
হাদীস নং ২৪৭৬
মুহাম্মদ ইবনে কাছীর রহ…….আবদুল্লাহ (ইবনে মাসউদ) রা. সূত্রে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমার যুগের লোকেরাই হচ্ছে সর্বোত্তম লোক, এরপর যারা তাদের নিকটবর্তী, এরপর যার তাদের নিকটবর্তী যুগের। এরপরে এমন সব লোক আসবে যারা কসম করার আগেই সাক্ষ্য দিবে, আবার সাক্ষ্য দেওয়ার আগে কসম করে বসবে। ইবরাহীম (নাখঈ) রহ. বলেন, আমাদেরকে সাক্ষ্য দিলে ও অঙ্গীকার করলে মারতেন।
হাদীস নং ২৪৭৭
আবদুল্লাহ ইবনে মুনীর রহ……..আনাস রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে কবীরা গুনাহ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বললেন, (সেগুলো হচ্ছে) আল্লাহর সাথে শরীক করা, পিতা-মাতার অবাধ্য হওয়া, কাউকে হত্যা করা এবং মিথ্যা সাক্ষ্য দেওয়া। গুনদার, আবু আমির, বাহয ও আবদুস সামাদ রহ. শুবা রহ. থেকে হাদীস বর্ণনায় ওয়াহাব রহ.-এর অনুসরণ করেছেন।
হাদীস নং ২৪৭৮
মুসাদ্দাদ রহ……..আবু বকর রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একদিন তিনবার বললেন, আমি কি তোমাদেরকে সবচেয়ে বড় কবীরা গুনাহগুলো সম্পর্কে অবিহিত করব না? সকলে বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ ! অবশ্য বলুন। তিনি বললেন, (সেগুলো হচ্ছে) আল্লাহর সাথে শরীক করা, পিতা-মাতার অবাধ্য হওয়া। তিনি হেলান দিয়ে বসেছিলেন; এবার সোজা হয়ে বসলেন এবং বললেন, শুনে রাখ, মিথ্যা সাক্ষ্য দেওয়া, এ কথাটি তিনি বার বার বলতে থাকলেন। এমনকি আমরা বলতে লাগলাম, আর যদি তিনি না বলতেন।
হাদীস নং ২৪৭৯
মুহাম্মদ ইবনে উবাইদ ইবনে মায়মূন রহ……….আয়িশা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক লোককে মসজিদে (কুরআন) পড়তে শুনলেন। তিনি বললেন, আল্লাহ তাকে রহম করুন। সে আমাকে অমুক অমুক সূরার অমুক অমুক আয়াত স্মরণ করিয়ে দিয়েছে, যা আমি ভুলে গিয়েছিলাম। আব্বাদ ইবনে আবদুল্লাহ রহ. আয়িশা রা. থেকে এতটুকু অতিরিক্ত বর্ণনা করেছেন যে, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার ঘরে তাহাজ্জুদের সালাত আদায় করলেন। সে সময় তিনি মসজিদে সালাত রত আব্বাদের আওয়াজ শুনতে পেয়ে জিজ্ঞাসা করলেন, হে আয়িশা ! এটা কি আব্বাদের কণ্ঠস্বর? আমি বললাম, হ্যাঁ। তখন তিনি বললেন, আল্লাহ আব্বাদকে রহম করুন।
হাদীস নং ২৪৮০
মালিক ইবনে ইসমাঈল রহ………আবদুল্লাহ ইবনে উমর রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, বিলাল রা. রাত থাকতেই আযান দিয়ে থাকে। সুতরাং ইবেন উম্মু মাকতুম রা. আযান দেওয়া পর্যন্ত তোমরা পানাহার করতে পার। অথবা তিনি বলেন, ইবনে উম্মু মাকতুমের আযান শোনা পর্যন্ত। ইবনে উম্মে মাকতুম রা. অন্ধ ছিলেন, ফলে ভোর হয়ে যাচ্ছে, লোকেরা একথা তাকে না বলা পর্যন্ত তিনি আযান দিতেন না।
হাদীস নং ২৪৮১
যিয়াদ ইবনে ইয়াহইয়া রহ……….মিসওয়ার ইবনে মাখরামা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর কাছে কিছু ‘কাবা’ (পোশাক বিশেষ) আসল। আমার পিতা মাখরামা রা. তা শুনে আমাকে বললেন, আমাকে তাঁর কাছে নিয়ে চল। সেখান থেকে তিনি আমাদের কিছু দিতেও পারেন। আমার পিতা দরজার সামনে দাঁড়িয়ে কথা বললেন, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার কণ্ঠস্বর চিনতে পারলেন। নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তখন একটি ‘কাবা’ সাথে করে বেরিয়ে এলেন, তিনি তার সৌন্দর্য বর্ণনা করছিলেন এবং বলছিলেন, আমি এটা তোমার জন্য লুকিয়ে রেখেছিলাম। আমি এটা তোমার জন্য লুকিয়ে রেখে ছিলাম।