হাদীস নং ২৪৬৬
সুলাইমান ইবনে হারব রহ……….আনাস রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সম্মুখ দিয়ে এক জানাযা নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। লোকটি সম্পর্কে সবাই প্রশংসা করছিলেন। তিনি বললেন, ওয়াজিব হয়ে গেছে। পরে আরেকটি জানাযা নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। লোকেরা তার সম্পর্কে খারাপ মন্তব্য করল কিংবা বর্ণনাকারী অন্য কোন শব্দ বলেছেন। তিনি বললেন, ওয়াজিব হয়ে গেছে। তখন বলা হল ইয়া রাসূলাল্লাহ ! এ ব্যক্তি সম্পর্কে বললেন, ওয়াজিব হয়ে গেছে আবার ঐ ব্যক্তি সম্পর্কে বললেন, ওয়াজিব হয়ে গেছে। তিনি বললেন, মানুষের সাক্ষ্য (গ্রহণযোগ্য) আর মুমিনগণ হলেন পৃথিবীতে আল্লাহর সাক্ষ্যদাতা।
হাদীস নং ২৪৬৭
মূসা ইবনে ইসমাঈল রহ………আবুল আসওয়াদ রহ. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, একবার আমি মদীনায় আসলাম, সেখানে তখন মহামারী দেখা দিয়েছিল। এতে ব্যাপক হারে লোক মারা যাচ্ছিল। আমি উমর রা.-এর কাছে বসা ছিলাম। এমন সময় একটি জানাযা অতিক্রম করল এবং তার সম্পর্কে ভাল ধরনের মন্তব্য করা হল। তা শুনে উমর রা. বললেন, ওয়াজিব হয়ে গেছে। এরপর আরেকটি জানাযা নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল এবং তার সম্পর্কেও ভাল মন্তব্য করা হল। তা শুনে তিনি বললেন, ওয়াজিব হয়ে গেছে। এরপর তৃতীয় জানাযা নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল এবং তার সম্পর্কে খারাপ মন্তব্য করা হল। এবারও তিনি বললেন, ওয়াজিব হয়ে গেছে। আমি জিজ্ঞাসা করলাম, কি ওয়াজিব হয়ে গেছে, হে আমীরুল মুমিনীন! তিনি বললেন, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যেমন বলেছিলেন, আমিও তেমন বললাম। (তিনি বলেছিলেন) কোন মুসলমান সম্পর্কে চার জন লোক ভালে সাক্ষ্য দিলে আল্লাহ তাকে জান্নাতে দাখিল করবেন। আমরা জিজ্ঞাসা করলাম, আর তিনজন সাক্ষ্য দিল ? তিনি বললেন, তিনজন সাক্ষ্য দিলেও। আমরা জিজ্ঞাসা করলাম, দু’জন সাক্ষ্য দিলে ? তিনি বললেন, দু’জন সাক্ষ্য দিলেও। এরপর আমরা একজনের সাক্ষ্য সম্পর্কে তাকে কিছু জিজ্ঞাসা করিনি।
হাদীস নং ২৪৬৮
আদম রহ………আয়িশা রা. থেকে বর্ণিত,তিনি বলেন, আফলাহ রা. আমার সাক্ষাতের অনুমতি চাইলেন। আমি অনুমতি না দেওয়ায় তিনি বললেন, আমি তোমার চাচা, অথচ তুমি আমার সাথে পর্দা করছ? আমি বললাম তা কিভাবে? তিনি বললেন, আমার ভাইয়ের স্ত্রী, আমার ভাইয়ের দুধ (ভাইয়ের কারণে তার স্তনে হওয়া দুধ) তোমাকে পান করিয়েছে। আয়িশা রা. বলেন, এ সম্পর্কে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে আমি জিজ্ঞাসা করলে তিনি বললেন, আফলাহ রা. ঠিক কথাই বলেছে। তাকে (সাক্ষাতের) অনুমতি দিও।
হাদীস নং ২৪৬৯
মুসলিম ইবনে ইবরাহীম রহ………ইবনে আব্বাস রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হামযার কন্যা সম্পর্কে বলেছেন, সে আমার জন্য হালাল নয়। কেননা বংশ সম্পর্কের কারণে যা হারাম হয়, দুধ পানের সম্পর্কের কারণেও তা হারাম হয়, আর সে আমার দুধ ভাইয়ের কন্যা।
হাদীস নং ২৪৭০
আবদুল্লাহ ইবনে ইউসুফ রহ……….আয়িশা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর কাছে অবস্থান করছিলেন। এমন সময় তিনি একজন লোকের আওয়াজ শুনতে পেলেন। সে হাফসা রা.-এর ঘরে প্রবেশের অনুমতি প্রার্থনা করছে। আয়িশা রা. বলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ ! এই যে একজন লোক আপনার ঘরে প্রবেশের অনুমতি প্রার্থনা করছে। তিনি বলেন, তখন নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তাকে হাফসার অমুক দুধ চাচা বলে মনে হচ্ছে। তখন আয়িশা রা. বললেন, আচ্ছা আমার অমুক দুধ চাচা যদি জীবিত থাকত তাহলে সে কি আমার ঘরে প্রবেশ করতে পারত? নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, হ্যাঁ, পারত। কেননা, জন্ম সূত্রে যা হারাম, দুধ পানেও তা হারাম হয়ে যায়।
হাদীস নং ২৪৭১
মুহাম্মদ ইবনে কাছীর রহ……..আয়িশা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার নিকট তাশরীফ আনলেন, তখন আমর কাছে একজন লোক ছিল। তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, হে আয়িশা ! এ কে ? আমি বললাম, আমার দুধ ভাই। তিনি বললেন, হে আয়িশা ? কে তোমার সত্যিকার দুধ ভাই তা যাচাই করে দেখ নিও। কেননা, ক্ষুধার কারণে (অর্থাৎ শিশু বয়সে শরীআত অনুমোদিত মুদ্দতে) দুধ পানের ফলেই শুধু সম্পর্ক স্থাপিত হয়। ইবনে মাহদী রহ. সুফিয়ান রহ. থেকে হাদীস বর্ণনায় মুহাম্মদ ইবনে কাছীর রহ.-এর অনুসরণ করেছেন।
হাদীস নং ২৪৭২
ইসমাঈল রহ………উরওয়া ইবনে যুবাইর রর. থেকে বর্ণিত যে, মক্কা বিজয়ের সময় জনৈক মহিলা চুরি করলে তাকে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে হাযির করা হল, তারপর তিনি তার সম্পর্কে নির্দেশ জারি করলে তার হাত কাটা হল। আয়িশা রা. বলেন, এরপর খাটি তাওবা করল এবং বিয়ে করল। তারপর সে (মাঝে মাঝে আমার কাছে) আসলে আমি তার প্রয়োজন নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর খিদমতে পেশ করতাম।
হাদীস নং ২৪৭৩
ইয়াহইয়া ইবনে বুকাইর রহ………যায়েদ ইবনে খালিদ রা. থেকে বর্ণিত যে, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অবিবাহিত ব্যভিচারী সম্পর্কে একশ বেত্রাঘাত এবং এক বছরের নির্বাসনের দিয়েছেন।
হাদীস নং ২৪৭৪