হাদীস নং ২৪৬০
হুমাইদী রহ……..উমর রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, একবার আমি একটি লোককে আল্লাহর পথে বাহন হিসাবে একটি ঘোড়া দিলাম। কিন্তু পরে তা বিক্রি হতে দেখে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে সে সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলাম। তিনি বলেন, এটা খরিদ করো না এবং সাদকাকৃত মাল ফিরিয়ে নিও না।
শাহাদাত অধ্যায় (২৪৬১-২৫১০)
হাদীস নং ২৪৬১
হাজ্জাজ রহ………ইবনে শিহাব রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমার নিকট আয়িশা রা.-এর ঘটনা সম্পর্কে উরওয়া, ইবনে মুসায়্যাব, আলকামা, ইবনে ওয়াক্কাস এবং উবায়দুল্লাহ রা. আয়িশা রা. সম্পর্কে রটনা করেছিল। এদিকে ওয়াহী অবতরণ বিলম্বিত হল। তখন নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আলী ও উসামা রা.-কে স্বীয় সহধর্মিণীকে পৃথক রাখার ব্যাপারে পরামর্শের জন্য ডেকে পাঠালেন। উসামা রা. তখন বললেন, আপনার স্ত্রী সম্পর্কে ভাল ছাড়া কিছুই আমরা জানি না। আর বারীরা রা. বললেন, তার সম্পর্কে একটি মাত্র কথাই আমি জানি, তা এই যে, অল্প বয়স হওয়ার কারণে পরিবারের লোকদের জন্য আটা খামির করার সময় তিনি ঘুমিয়ে পড়েন আর সেই ফাঁকে বকরী এসে তা খেয়ে ফেলে। নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তখন বললেন, সেই ব্যক্তির বিরুদ্ধে কে আমাকে সাহায্য করবে ; যার জ্বালাতন আমার পারিবারিক ব্যাপারে আমাকে আঘাত হেনেছে? আল্লাহর কসম আমার সহধর্মিণী সম্পর্কে আমি ভাল ছাড়া অন্য কিছু জানি না। আর এমন এক ব্যক্তির কথা তারা বলে, যার সম্পর্কে আমি ভাল ছাড়া অন্য কিছু জানি না।
হাদীস নং ২৪৬২
আবুল ইয়ামান রহ……….আবদুল্লাহ ইবনে উমর রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও উবাই ইবনে কাব আনসারী রা. সেই খেজুর বাগানের উদ্দেশ্যে বাগানের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হলেন, যেখানে ইবনে সাইয়াদ থাকত। নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন (বাগানে) প্রবেশ করলেন, তখন তিনি সতর্কতার সাথে খেজুর শাখার আড়ালে আড়ালে চললেন। তিনি চাচ্ছিলেন, ইবনে সাইয়াদ তাকে দেখে ফেলার আগেই তিনি তার কোন কথা শুনে নিবেন। ইবনে সাইয়াদ তখন চাদর মুড়ি দিয়ে বিছানায় শায়িত ছিল। আর গুন গুন বা (রাবী বলেছেন) গুমগুমভাবে কিছু বলছিল। এ সময় ইবনে সাইয়াদের মা নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে খেজুর শাখার আড়ালে আড়ালে সতর্কতার সাথে আসতে দেখে ইবনে সাইয়াদকে বলল, হে সাফ! (নামের সংক্ষেপ) এই যে মুহাম্মদ ! তখন ইবনে সাইয়াদ চুপ হয়ে গেল। নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, সে (তার মা) যদি (কিছু না বলে) তাকে নিজের অবস্থায় ছেড়ে দিত, তাহলে (তার প্রকৃত অবস্থা আমাদের সামনে) প্রকাশ পেয়ে যেত।
হাদীস নং ২৪৬৩
আবদুল্লাহ ইবনে মুহাম্মদ রহ………..আয়িশা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রিফাআ কুরাযীর স্ত্রী নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট এসে বলল, আমি রিফাআর স্ত্রী ছিলাম। কিন্তু সে আমাকে বায়েন তালাক দিয়ে দিল। পরে আমি আবদুর রহমান ইবনে যুবাইর কে বিয়ে করলাম। কিন্তু তার সাথে রয়েছে কাপড়ের আচলের মত নরম কিছু (অর্থাৎ সে পুরুষত্বহীন) তখন নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তবে কি তুমি রিফাআর কাছে ফিরে যেতে চাও? না , তা হয় না, যতক্ষণ না তুমি তার মধুর স্বাদ গ্রহণ করবে আর সে তোমার মধুর স্বাদ গ্রহণ করবে। আবু বকর রা. তখন তাঁর কাছে বসা ছিলেন। আর খালিদ ইবনে সাঈদ ইবনে আস রা. দ্বারপ্রান্তে প্রবেশের অনুমতির অপেক্ষায় ছিলেন। তিনি বললেন, হে আবু বকর ! মহিলা নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর দরবারে উচ্চস্বরে যা বলছে, তা কি আপনি শুনতে পাচ্ছেন না?
হাদীস নং ২৪৬৪
হিববান রহ……..উকবা ইবনে হারিছ রা. থেকে বর্ণিত যে, তিনি আবু ইহাব ইবনে আযীযের কন্যাকে বিয়ে করলেন। পরে জনৈক মহিলা এসে বলল, আমি তো উকবা এবং যাকে সে বিয়ে করেছে দু’জনকেই দুধ পান করিয়েছি। উকবা রা. তাকে বললেন, এটা তো আমার জানা নেই যে, আপনি আমাকে দুধ পান করিয়েছেন আর আপনিও এ বিষয়ে আমাকে অবহিত করেননি। এরপর আবু ইহাব পরিবারের কাছে লোক পাঠিয়ে তিনি তাদের কাছে ( এ সম্পর্কে) জানতে চাইলেন। তারা বলল, সে আমাদের মেয়েকে দুধ পান করিয়েছে বলে তো আমাদের জানা নেই। তখন তিনি মদীনার উদ্দেশ্যে সাওয়ার হলেন এবং নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলেন। নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, যখন এরূপ বলা হয়েছে তখন এটা কিভাবে সম্ভব? তখন উকবা রা. তাকে ত্যাগ করলেন। আর সে অন্য জনকে বিয়ে করল।
হাদীস নং ২৪৬৫
হাকাম ইবনে নাফি রহ………..উমর ইবনে খাত্তাব রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর যামানায় কিছু লোককে ওয়াহীর ভিত্তিতে পাকড়াও করা হত। এখন যেহেতু ওয়াহী বন্ধ হয়ে গেছে, সেহেতু এখন আমাদের সামনে তোমাদের যে ধরনের আমল প্রকাশ পাবে, সেগুলোর ভিত্তিতেই আমরা তোমাদের বিচার করব। কাজেই যে ব্যক্তি আমাদের সামনে ভাল প্রকাশ করবে তাকে আমরা নিরাপত্তা দান করব এবং কাছে টানব, তার অন্তরের বিষয়ে আমাদের কিছু করণীয় নেই। আল্লাহরই তার অন্তরের বিষয়ে হিসাব নিবেন। আর যে ব্যক্তি আমাদের সামনে মন্দ আমল প্রকাশ করবে, তার প্রতি আমরা তাদের নিরাপত্তা প্রদান করব না এবং সত্যবাদী বলে গ্রহণও করব না, যদিও সে বলে যে, তার অন্তর ভাল।