হাদীস নং ১৯৬৪
কুতাইবা ইবনে সাঈদ রহ……..আবু হাযিম রহ. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, কিছু লোক সাহল ইবনে সাদ রা.-এর কাছে এসে মিম্বরে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলেন। তিনি বললেন, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একজন (আনসারী) মহিলা সাহল রা. যার নাম উল্লেখ করেছিলেন, তার কাছে তিনি সংবাদ পাঠালেন যে, তোমার সূত্রধর গোলামকে বল, সে যেন আমার জন্য কাঠ দিয়ে একটি (মিম্বর) তৈরী করে দেয়। লোকদের সাথে কথা বলার সময় যার উপর আমি বসতে পারি। সে মহিলা তাকে গাবা নামক স্থানের কাঠ দিয়ে মিম্বর বানানোর নির্দেশ দিলেন। তারপর গোলামটি তা নিয়ে এল এবং সে মহিলা এটি নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে পাঠিয়ে দিলেন। তার নির্দেশক্রমে তা স্থাপন করা হল, পরে তার উপর নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উপবেশন করলেন।
হাদীস নং ১৯৬৫
খাল্লাদ ইবনে ইয়াহইয়া রহ……….জাবির ইবনে আবদুল্লাহ রা. থেকে বর্ণিত যে, একজন আনসারী মহিলা নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ ! আমি কি আপনার জন্য এমন একটি জিনিস তৈরী কের দিব ন, যার উপর আপনি উপবেশন করবেন ? কেননা, আমার একজন সূত্রধর গোলাম আছে। তিনি বললেন, যদি তুমি ইচ্ছা কর। বর্ণনাকারী বলেন, তারপর সে মহিলা তাঁর জন্য মিম্বর বানিয়ে দিলেন। যখন জুমুআর দিন হল, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সেই তৈরী মিম্বরের উপরে বসলেন। সে সময় যে খেজুর গাছের উপর ভর দিয়ে তিনি খুতবা দিতেন, সেটি এমনভাবে চীৎকার করে উঠল, যেন তা ফেটে পড়েব। নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নেমে এসে তাকে নিজের সঙ্গে জড়িয়ে ধরলেন। তখন সেটি ফোপাতে লাগল, যেমন ছোট শিশুকে চুপ করানোর সময় ফোপায়। অবশেষে তা স্থির হয়ে গেল। (রাবী বলেন) খেজুর কাণ্ডটি যে যিকির-নসীহত শুনত তা হারানোর কারণে কেঁদেছিল।
হাদীস নং ১৯৬৬
ইউসুফ ইবনে ঈসা রহ……..আয়িশা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জনৈক ইয়াহুদী থেকে বাকিতে খাদ্য ক্রয় করেন এবং নিজের লৌহবর্ম তার কাছে বন্ধক রাখেন।
হাদীস নং ১৯৬৭
মুহাম্মদ ইবনে বাশশার রহ……….জাবির ইবনে আবদুল্লাহ রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, এক যুদ্ধে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সঙ্গে ছিলাম। আমর উটটি অত্যন্ত ধীরে চলছিল বরং চলতে অক্ষম হয়ে পড়েছিল । এমতাবস্থায় নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার কাছে এলেন এবং বললেন, জাবির ? আমি বললাম, জী । তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, তোমার অবস্থা কী ? আমি বললাম, আমার উট আমাকে নিয়ে অত্যন্ত ধীরে চলছে এবং অক্ষম হয়ে পড়ছে। ফলে আমি পিছনে পড়ে গেছি। তখন তিনি নেমে চাবুক দিয়ে উটটিকে আঘাত করতে লাগলেন। তারপর বললেন, এবার আরোহণ কর। আমি আরোহণ করলাম। এরপর অবশ্য আমি উটটিকে এমন পেলাম যে, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে অগ্রসর হওয়ায় বাঁধা দিতে হয়েছিল। তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, তুমি কি বিবাহ করেছ ? আমি বললাম, হ্যাঁ। তিনি বললেন, কুমারী না বিবাহিতা ? আমি বললাম, বিবাহিতা। তিনি বললেন, তরুনী বিবাহ করলে না কেন? তুমি তার সাথে হাসি-তামসা এবং সে তোমার সাথে পূর্ণভাবে হাসি-তামসা করত। আমি বললাম, আমার কয়েকটি বোন রয়েছে, ফলে আমি এমন এক মহিলাকে বিবাহ করতে পছন্দ করলাম, যে তাদেরকে মিল-মুহাব্বতে রাখতে, তাদের পরিচর্যা করতে এবং তাদের উপর উত্তমরূপে কর্তৃত্ব করতে সক্ষম হয়। তিনি বললেন, শোন ! তুমি তো বাড়ীতে পৌঁছবে ? যখন তুমি পৌঁছবে তখন তুমি বৃদ্ধিমত্তার পরিচয় দেবে। তিনি বললেন, তোমার উটটি বিক্রি করবে ? আমি বললাম, হ্যাঁ। তিনি তা এক উকীয়ার বিনিময়ে আমার নিকট থেকে কিনে নিলেন। তারপর নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার আগে (মদীনায়) পৌঁছলেন এবং আমি (পরের দিন) ভোরে পৌঁছলাম। আমি মসজিদে নববীতে গিয়ে তাকে দরজার নামনে পেলাম। তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, এখন এলে? আমি বললাম, হ্যাঁ। তিনি বললেন, তোমার উটটি রাখ এবং মসজিদে প্রবেশ করে দু’ রাকআত সালাত আদায় কর। আমি মসজিদে প্রবেশ করে সালাত আদায় করলাম। তারপর তিনি বিলাল রা.-কে উকীয়া ওযন করে আমাকে দিতে বললেন। বিলাল রা. ওযন করে দিলেন এবং আমার পক্ষে ঝুঁকিয়ে দিলেন। আমি রওয়ানা হলাম। যখন আমি পিছন ফিরছি তখন তিনি বললেন, জাবিরকে আমার কাছে ডাক । আমি ভাবলাম, এখন হয়ত উটটি আমাকে ফিরিয়ে দেবেন। আর আমার কাছে এর চাইতে অপছন্দনীয় আর কিছুই ছিলনা। তিনি বললেন, তোমার উটটি নিয়ে যাও এবং তার মূল্যও তোমার।
হাদীস নং ১৯৬৮
আলী ইবনে আবদুল্লাহ রহ………ইবনে আব্বাস রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বললেন, উকায, মাজান্না ও যুল-মাজায জাহিলী যুগের বাজার ছিল, ইসলামের আবির্ভাবের পরে লোকেরা তথায় ব্যবসা করা গুনাহের কাজ মনে করল। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ তা’আলা নাযিল করলেন: তোমাদের উপর কোন গুনাহ নাই…… (অর্থাৎ হজ্জের মওসুমে। ইবনে আব্বাস রা. এরূপ পড়েছেন।
হাদীস নং ১৯৬৯
আলী ইবনে আবদুল্লাহ রহ………আমর (ইবনে দীনার) বলেন, এখানে নাওওয়াস নামক এক ব্যক্তি ছিল। তার নিকট অতি পিপাসা রোগে আক্রান্ত একটি উট ছিল।ইবনে উমর রা. তার শরীকের কাছ থেকে সে উটটি কিনে নেন। পরে তার শরীক তার নিকট উপস্থিত হলে বলল, সে উটটি বিক্রি করে দিয়েছি। নাওওয়াস জিজ্ঞাসা করলেন, কার কাছে বিক্রি করেছ? সে বলল, এমন আকৃতির এক বৃদ্ধের কাছে । নাওওয়াস বলে উঠলেন, আরে কি সর্বনাশ ! তিনি তো আল্লাহর কসম ইবনে উমর রা. ছিলেন। এরপর নাওওয়াস তাঁর নিকট এলেন এবং বললেন, আমার শরীক আপনাকে চিনতে না পেরে আপনার কাছে একটি পিপাসাক্রান্ত উট বিক্রি করেছে। তিনি বললেন, তবে উটটি নিয়ে যাও। সে যখন উটটি নিয়ে যেতে উদ্যত হল, তখন তিনি বললেন, রেখে দাও। আমি নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর ফায়সালায় সন্তুষ্ট যে, রোগে কোন সংক্রামন নেই। সুফিয়ান রহ. আমর রহ. থেকে উক্ত হাদীসটি শুনেছেন।