হাদীস নং ১৯৫৬
আবুল ওয়ালীদ রহ………আওন ইবনে আবু জুহাইফা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমার পিতাকে দেখেছি, তিনি এক গোলাম খরিদ করেন যে শিঙ্গা লাগানোর কাজ করত। তিনি তার শিঙ্গার যন্ত্রপাতি সম্পর্কে নির্দেশ দিলেন এবং তা ভেঙ্গে ফেলা হল। আমি এ ব্যাপারে তাকে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বললেন, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কুকুরের মূল্য এবং রক্তের মূল্য গ্রহণ করতে নিষেধ করেছেন, আর দেহে দাগ দেওয়া ও লওয়া থেকে নিষেধ করেছেন। সূদ খাওয়া ও খায়ানো নিষেধ করেছেন আর ছবি অংকনকারীর উপর লা’নত করেছেন।
হাদীস নং ১৯৫৭
ইয়াহইয়া ইবনে বুকাইর রহ……..আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন আমি নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছি, মিথ্যা কসম পণ্য চালু করে দেয় বটে, কিন্তু বকরত নিশ্চিহ্ন করে দেয়।
হাদীস নং ১৯৫৮
আমর ইবনে মুহাম্মদ রহ………আবদুল্লাহ ইবনে আবু আওফা রা. থেকে বর্ণিত যে, এক ব্যক্তি বাজারে পণ্য আমদানী করে আল্লাহর নামে কসম খেল যে, এর এত দাম লাগান হয়েছে ; কিন্তু প্রকৃতপক্ষে তা কেউ বলেনি। এতে তার উদ্দেশ্য সে যেন কোন মুসলিমকে পণ্যের ব্যাপারে ধোঁকায় ফেলতে পারে। এ প্রসঙ্গে আয়াত নাযিল হয়, যারা আল্লাহর সঙ্গে কৃত প্রতিশ্রুতি এবং নিজেদের শপথকে তুচ্ছমূল্যে বিক্রি করে (৩ : ৭৭) ।
হাদীস নং ১৯৫৯
আবদান রহ………হুসাইন ইবনে আলী রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বর্ণনা করেন, আলী রা. বলেছেন, (বদর যুদ্ধের) গনীমতের মাল থেকে আমার অংশের একটি উটনী ছিল এবং নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর খুমস থেকে একটি উটনী আমাকে দান করলেন। যখন আমি নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কন্যা ফাতিমা রা. এর সঙ্গে বাসর রাত যাপনের ইচ্ছা করলাম সে সময় আমি কায়নুকা গোত্রের একজন স্বর্ণকারের সাথে এই চুক্তি করেছিলাম যে, সে আমার সঙ্গে (জংগলে) যাবে এবং ইযখির ঘাস বহন করে আনবে এবং তা স্বর্ণকারদের নিকট বিক্রি করে তার মূল্য দ্বারা আমার বিবাহের ওয়ালীমার ব্যবস্থা করব।
হাদীস নং ১৯৬০
ইসহাক রহ……….ইবনে আব্বাস রা. থেকে বর্ণিত যে, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (মক্কা বিজয়ের দিন) বলেন, আল্লাহ তা’আলা মক্কায় (রক্তপাত) হারাম করে দিয়েছেন। আমার আগেও কারো জন্য মক্কা হালাল করা হয়নি এবং আমার পরেও কারো জন্য হালাল করা হবে না। আমার জন্য শুধুমাত্র দিনের কিছু অংশে মক্কায় (রক্তপাত) হালাল হয়েছিল। মক্কার কোন ঘাস কাটা যাবে না, কোন গাছ কাটা যাবে না। কোন শিকারকে তাড়ানো যাবে না। ঘোষণাকারী ব্যতীত কেউ মক্কার যমীনে পড়ে থাকা মাল উঠাতে পারবে না। তখন আব্বাস ইবনে আবদুল মুত্তালিব রা. বললেন, কিন্তু ইযখির ঘাস, যা আমাদের স্বর্ণকারদের ও আমাদের ঘরের ছাদের জন্য ব্যবহৃত তা ব্যতীত। নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ইযখির ঘাস ব্যতীত। রাবী ইকরামা রহ. বলেন, তুমি জানো শিকার তাড়ানোর অর্থ কি ? তা হল, ছায়ায় অবস্থিত শিকারকে তাড়িয়ে তার স্থানে নিজে বসা। আবদুল ওহাব রহ. খালিদ রহ .সূত্রে বলেছেন, আমাদের স্বর্ণকারদের জন্য ও আমাদের কবরের জন্য।
হাদীস নং ১৯৬১
মুহাম্মদ ইবনে বাশশার রহ…….খাব্বাব রহ. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, জাহিলিয়্যাতের যুগে আমি কর্মকারের পেশায় ছিলাম। আস ইবনে ওয়াইলের কাছে আমার কিছু পাওনা ছিল আমি তার কাছে তাগাদা করতে গেলে সে বলল, যতক্ষণ তুমি মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে অস্বীকার না করবে ততক্ষণ আমি তোমাকে তোমার পাওনা দিব না। আমি বললাম, আল্লাহ তোমাকে মৃত্যু দিয়ে তারপর তোমাকে পুনরুত্থিত করা পর্যন্ত আমি তাকে অস্বীকার করব না। সে বলল, আমি মরে পুনরুত্থিত হওয়া পর্যন্ত আমাকে অব্যাহতি দাও। শীগ্রীরই আমাকে সম্পদ ও সন্তান দেওয়া হবে, তখন আমি তোমার পাওনা পরিশোধ করব। এ প্রসঙ্গে এ আয়াত নাযিল হল : তুমি কি লক্ষ্য করেছ তাকে, যে আমার আয়াত সমূহ প্রত্যাখান করে এবং বলে আমাকে ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি দেওয়া হবেই (১৯ : ৭৭)।
হাদীস নং ১৯৬২
আবদুল্লাহ ইবনে ইউসুফ রহ……..আনাস ইবনে মালিক রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, এক দরজী খাবার তৈরী করে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে দাওয়াত করলেন। আনাস ইবেন মালিক রা. বলেন, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সামনে রুটি এবং সুরুয়া যাতে কদু ও গোশতের টুকরা ছিল, পেশ করলেন। আমি নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে দেখতে পেলাম যে, পেয়ালার পার্শ্ব থেকে তিনি কদুর টুকরা খোঁজ করে নিচ্ছেন।
হাদীস নং ১৯৬৩
ইয়াহইয়া ইবনে বুকাইর রহ……..সাহল ইবনে সাদ রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, এক মহিলা একটি বুরদা আনলেন (সাহল রা.) বললেন, তোমরা জান বুরদা কি? তাকে বলা হয়, হ্যাঁ, তা হল এমন চাদর, যা পাড় বুনানো। মহিলা বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ ! আপনাকে পরিধান করানোর জন্য আমি এটি নিজ হাতে বুনে নিয়ে এসেছি। নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তা গ্রহণ করলেন এবং তাঁর এর প্রয়োজন ছিল। তারপর তিনি তা তহবন্দরূপে পরিধান করে আমাদের সামনে এলেন। উপস্থিত লোকজনের মধ্যে একজন বলে উঠলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ ! তা আমাকে পরিধান করতে দিন। তিনি বললেন, আচ্ছা। নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কিছুক্ষণ মজলিসে বসে পরে ফিরে গেলেন। তারপর চাদরটি ভাঁজ করে সে লোকটির কাছে পাঠিয়ে দিলেন। লোকজন সে ব্যক্তিকে বললেন, তুমি ভাল করনি, তুমি তাঁর কাছে চাদরটি চেয়ে ফেললে, অথচ তুমি জান যে, তিনি কোন সাওয়ালকারীকে ফিরিয়ে দেন না। সে লোকটি বললেন, আল্লাহর কসম, আমি চাদরটি এ জন্যই সাওয়াল করেছি যে, তা যাতে আমার মৃত্যুর পর আমার কাফন হয়। রাবী সাহল রা. বলেন, সেটি তার কাফন হয়েছিল।