হাদীস নং ২০৮৪
আবদুল্লাহ ইবনে আবদুল ওয়াহহাব রহ………সাঈদ ইবনে আবুল হাসান রহ. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি ইবনে আব্বাস রা.-এর নিকট উপস্থিত ছিলাম, এমন সময়ে তার কাছে এক ব্যক্তি এসে বলল, হে আবু আব্বাস ! আমি এমন ব্যক্তি যে, আমার জীবিকা হস্তশিল্পে। আমি এ সব ছবি তৈরী করি। ইবনে আব্বাস রা. তাকে বলেন, (এ বিষয়ে) নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -কে আমি যা বলতে শুনেছি, তাই তোমাকে শোনাব। তাকে আমি বলতে শুনেছি, যে ব্যক্তি কোন ছবি তৈরী করে আল্লাহ তা’আলা তাকে শাস্তি দিবেন, যতক্ষণ না সে তাঁতে প্রাণ সঞ্চার করে। আর সে তাঁতে কখনো প্রাণ সঞ্চার করতে পারবে না। (এ কথা শুনে) লোকটি ভীষণভাবে ভয় পেয়ে গেল এবং তার চেহারা ফ্যাকাশে হয়ে গেল। এতে ইবনে আব্বাস রা. বললেন, আক্ষেপ তোমার জন্য, তুমি যদি এ কাজ নাই ছাড়তে পার, তবে এ গাছ-পালা এবং যে সকল জিনিসে প্রাণ নেই, তা তৈরী করতে পার। আবু আবদুল্লাহ রহ. বলেন, সাঈদ রা. বলেছেন আমি নযর ইবনে আনাস রা. থেকে শুনেছি তিনি বলেছেন, ইবনে আব্বাস রা. হাদীস বর্ণনা করার সময় আমি তার কাছে ছিলাম। ইমাম বুখারী রহ. আরো বলেন, সাঈদ ইবনে আবু আরুবাহ রহ. একমাত্র এ হাদীসটি নযর ইবনে আনাস রা. থেকে শুনেছেন।
হাদীস নং ২০৮৫
মুসলিম রহ………আয়িশা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, যখন সূরা বাকারার শেষ আয়াতগুলো নাযিল হলো, তখন নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বের হয়ে বললেন, শরাবের ব্যবসা হারাম করা হয়েছে।
হাদীস নং ২০৮৬
বিশর ইবনে মারহুম রহ……..আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত যে, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন : আল্লাহ তা’আলা ঘোষণা করেছেন যে, কিয়ামতের দিবসে আমি নিজে তিন ব্যক্তির বাদী হব। এক ব্যক্তি, যে আমার নামে ওয়াদা করে তা ভঙ্গ করল। আরেক ব্যক্তি, যে কোন আযাদ মানুষকে বিক্রি করে তার মূল্য ভোগ করল। আর এক ব্যক্তি, যে কোন মজুর নিয়োগ করে তার থেকে পুরা কাজ আদায় করে এবং তার পারিশ্রমিক দেয় না।
হাদীস নং ২০৮৭
সুলাইমান ইবনে হারব রহ……….আনাস রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, সাফিয়্যা রা. বন্দীদের অন্তর্ভূক্ত ছিলেন তিনি দিহয়া কালবী রা.-এর ভাগে পড়েন, এর পরে তিনি নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর অধীনে এসে যান।
হাদীস নং ২০৮৮
আবুল ইয়ামান রহ………আবু সাঈদ খুদরী রা. থেকে বর্ণিত যে, একদা তিনি নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট বসা ছিলাম, তখন তিনি বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ ! আমরা বন্দী দাসীর সাথে সংগত হই। কিন্তু আমরা তাদের (বিক্রয় করে) মূল্য হাসিল করতে চাই। এমতাবস্থায় আযল-(নিরুদ্ধ সংগম করা) সম্পর্কে আপনি কি বলেন ? তিনি বললেন, আরে তোমরা কি এরূপ করে থাক! তোমরা যদি তা (আযল) না কর তাঁতে তোমাদের কোন ক্ষতি নেই। কারণ আল্লাহ তা’আলা যে সন্তান জন্ম হওয়ার ফায়সালা করে রেখেছেন, তা অবশ্যই জন্মগ্রহণ করবে।
হাদীস নং ২০৮৯
ইবনে নুমাইর রহ……….জাবির রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মুদাব্বার গোলাম বিক্রি করেছেন।
হাদীস নং ২০৯০
কুতাইবা রহ………জাবির ইবনে আবদুল্লাহ রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মুদাব্বার বিক্রি করেছেন।
হাদীস নং ২০৯১
যুহাইর ইবনে হারব রহ………..যায়েদ ইবনে খালিদ ও আবু হুরায়রা রা. বলেন, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে অবিবাহিত ব্যভিচারিণী দাসী সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে তাকে বলতে শুনেছেন যে, ব্যভিচারিণী কে বেত্রাঘাত কর। সে আবার ব্যভিচার করলে আবার বেত্রাঘাত কর। এরপর বিক্রি করে দাও তৃতীয় বা চতুর্থ বারের পরে।
হাদীস নং ২০৯২
আবদুল আযীয ইবনে আবদুল্লাহ রহ………আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে আমি বলতে শুনেছি, তোমাদের কোন দাসী ব্যভিচার করলে এবং তার ব্যভিচার প্রমাণিত হলে তাকে ‘হদ’ স্বরূপ বেত্রাঘাত করবে এবং তাকে ভৎর্সনা করবে না। এরপর যদি সে আবার ব্যভিচার করে তাকে ‘হদ’ হিসাবে বেত্রাঘাত করবে কিন্তু তাকে ভৎর্সনা করবে না। তারপর সে যদি তৃতীয়বার ব্যভিচার করে এবং তার ব্যভিচার প্রমাণিত হয় তবে তাকে বিক্রি করে দেবে, যদিও তা চুলের রশির (তুচ্ছ মূল্যের) বিনিময়ে হয়।
হাদীস নং ২০৯৩
আবদুল গাফফার ইবনে দাউদ রহ………আনাস ইবনে মালিক রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম খঅয়বার গমন করেন। যখন আল্লাহ তা’আলা তাঁর পক্ষে দুর্গের বিজয় দান করেন, তখন তাঁর সামনে সাফিয়্যা রা. বিনতে হুয়ায়্যি ইবনে আখতাব এর সৌন্দর্যের আলোচনা করা হয়। তাঁর স্বামী নিহত হয় এবং তিনি তখন ছিলেন নব-বিবাহিতা। অবশেষে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে নিজের জন্য গ্রহণ করে নেন। তিনি তাকে নিয়ে রওয়ানা হন। যখন আমরা সাদ্দা রাওহা নামক স্থানে উপনীত হলাম, তখন সাফিয়্যা রা. পবিত্র হলেন। তখন নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর সঙ্গে মিলিত হন। তারপর চামড়ার ছোট দস্তরখানে হায়েজ (খেজুরের ছাতু ও ঘি মিশ্রিত খাদ্য) তৈরী করে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, তোমরা আশেপাশের লোকদের উপস্থিত হওয়ার জন্য খবর দিয়ে দাও। এই ছিল সাফিয়্যা রা.-এর বিবাহে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কর্তৃক ওলীমা। এরপর আমরা মদীনার উদ্দেশ্যে রওয়অনা হই। আনাস রা. বলেন, আমি নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -কে দেখতে পেলাম যে, তাকে নিজের আবা দিয়ে ঘেরাও করে দিচ্ছেন। তারপর তিনি তাঁর উটের পাশে বসে হাঁটু সোজা করে রাখলেন, পরে সাফিয়্যা রা. তাঁর হাঁটুর উপর পা দিয়ে ভর করে আরোহণ করলেন।