হাদীস নং ২০৬৮
আবদুল্লাহ ইবনে ইউসুফ রহ………আনাস ইবনে মালিক রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আবু তায়বা নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে শিংগা লাগালেন। তিনি এক সা’ খেজুর দিতে বললেন এবং তার উপর থেকে দৈনিক আয়কর কমানোর জন্য তার মালিককে আদেশ দিলেন।
হাদীস নং ২০৬৯
আবু নুআইম রহ………আয়িশা রা. থেকে বর্ণিত যে, মুআবিয়া রা.-এর মা হিন্দ নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলেন, আবু সুফিয়ান রা. একজন কৃপণ ব্যক্তি। এমতাবস্থায় আমি যদি তার মাল থেকে গোপনে কিছু গ্রহণ করি, তাঁতে কি আমার গুনাহ হবে? তিনি বললেন, তুমি তোমার ও সন্তানদের প্রয়োজনানুসারে যথাযথভাবে গ্রহণ করতে পার।
হাদীস নং ২০৭০
ইসহাক ও মুহাম্মদ ইবনে সালাম রহ……..আয়িশা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, কুরআনের আয়াত : যে অভাবমুক্ত সে যেন নিবৃত্ত থাকে এবং যে অভাবগ্রস্ত সে যেন সঙ্গত পরিমাণে ভোগ করে (৪ : ৬)। ইয়াতীমের ঐ অবিভাবক সম্পর্কে অবতীর্ণ হয়, যে তার তত্ত্বাবধান করে ও তার সম্পত্তির পরিচর্যা করে, সে যদি অভাবগ্রস্ত হয়, তবে তা থেকে নিয়মমাফিক খেতে পারবে।
হাদীস নং ২০৭১
মাহমুদ রহ………জাবির রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, যে সম্পত্তির ভাগ বাঁটোয়ারা হয়নি, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাতে শুফআ এর অধিকার প্রদান করেছেন। যখন সীমানা নির্ধারিত হয়ে যাবে এবং রাস্তা ভিন্ন করা হয়, তখন আর শুফআ এর অধিকার থাকবে না।
হাদীস নং ২০৭২
মুহাম্মদ ইবনে মাহবুব রহ……..জাবির ইবনে আবদুল্লাহ রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যে সম্পত্তির ভাগ-বাঁটোয়ারা হয়নি, তার মধ্যে শুফআ লাভের ফায়সালা প্রদান করেছেন। তারপর যখন সীমানা নির্ধারিত হয়ে যায় এবং স্বতন্ত্র করা হয় তখন আর শুফআ এর অধিকার থাকবে না।
হাদীস নং ২০৭৩
মুসাদ্দাদ রহ……….আবদুল ওয়াহিদ রহ. থেকে এটি বর্ণনা করেছেন এবং তিনি বলেছেন, যে সম্পদ ভাগ-বাটোয়ারা হয়নি (তাতে শুফআ)। হিশাম রহ. মামার রহ. থেকে হাদীস বর্ণনায় মুসাদ্দাদের অনুসরণ করেছেন। আবদুর রাযযাক রহ. বলেছেন, যে সম্পদ ভাগ-বাটোয়ারা হয়নি, সে সব সম্পদেই (শুফআ রয়েছে)। হাদীসটি আবদুর রাহমান ইবনে ইসহাক রা. যুহরী রহ. থেকে বর্ণনা করেছেন।
হাদীস নং ২০৭৪
ইয়াকুব ইবনে ইবরাহীম রহ………ইবনে উমর রা থেকে সূত্রে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, একদা তিন ব্যক্তি হেঁটে চলছিল।এমন সময় প্রবল বৃষ্টি শুরু হলে তারা এক পাহাড়ের গুহায় প্রবেশ করে। হঠাৎ একটি পাথর গড়িয়ে তাদের গুহার মুখ বন্ধ করে দেয়। তাদের একজন আরেক জনকে বলল; তোমরা যে সব আমল করেছ, তরি মধ্যে উত্তম আমলে ওয়াসীলা করে আল্লাহর কাছে দু’আ কর। তাদের একজন বলল, ইয়া আল্লাহ ! আমার অতিবৃদ্ধ পিতামাতা ছিলেন, আমি (প্রত্যহ সকালে) মেষ চরাতে বের হতাম। তারপর ফিরে এসে দুধ দোহন করতাম। এবং এ দুধ নিয়ে আমার পিতা-মাতার নিকট উপস্থিত হতাম ও তাঁরা তা পান করতেন। তারপরে আমি শিশুদের, পরিজনদের এবং আমার স্ত্রীকে পান করতে দিতাম। একরাত্রে আটকা পড়ে যাই। তারপর আমি যখন এলাম তখন তাঁরা দু’জনে ঘুমিয়ে পড়েছেন। সে বলল, আমি তাদের জাগানো পছন্দ করলাম না। আর তখন শিশুরা আমার পায়ের কাছে (ক্ষুধায়) চীৎকার করছিল। এ অবস্থায়ই আমার এবং পিতামাতার ফজর হয়ে গেল। ইয়া আল্লাহ ! তুমি যদি জান তা আমি শুধুমাত্র তোমার সন্তুষ্টি লাভের আশায় করেছিলাম। তাহলে তুমি আমাদের গুহার মুখ এতটুকু ফাঁক করে দাও, যাতে আমরা আকাশ দেখতে পারি। বর্ণনাকারী বলেন, তখন একটু ফাঁকা হয়ে গেল। আরেকজন বলল, ইয়া আল্লাহ ! তুমি জান যে, আমি আমার এক চাচাতো বোনকে এত চরম ভালবাসতাম, যা একজন পুরুষ নারীকে ভালবাসে থাকে। সে বলল, তুমি আমার থেকে সে মনস্কামনা সিদ্ধ করতে পারবে না, যতক্ষণ আমাকে একশত দীনার না দেবে। আমি চেষ্টা করে তা সংগ্রহ করি। তারপর যখন আমি তার পদদ্বয়ের মাঝে উপবেশন করি, তখন সে বলে আল্লাহকে ভয় কর। বৈধ অধিকার ছাড়া মাহরকৃত বস্তুর সীল ভাঙবে না। এতে আমি তাকে ছেড়ে উঠে পড়ি। (হে আল্লাহ) তুমি যদি জান আমি তা তোমারই সন্তুষ্টি অর্জনের উদ্দেশ্যে করেছি, তবে আমাদের থেকে আরো একটু ফাঁক করে দাও। তখন তাদের থেকে (গুহার মুখের) দুই-তৃতীয়াংশ ফাঁক হয়ে গেল। অপরজন বলল, হে আল্লাহ ! তুমি জান যে, এক ফারাক (পরিমাণ) শস্য দানার বিনিময়ে আমি একজন মজুর রেখেছিলাম। আমি যখন তাকে তা দিতে গেলে সে তা গ্রহণ করতে অস্বীকার করল। তারপর আমি সে এক ফারাক শস্য দানা দিয়ে চাষ করে ফসল উৎপন্ন করি এবং তা দিয়ে গরু খরিদ করি ও রাখাল নিযুক্ত করি। কিছুকাল পরে সে মজুর এসে বলল, হে আল্লাহর বান্দা ! আমাকে আমার পাওনা দিয়ে দাও। আমি বললাম, এই গরুগুলো ও রাখাল নিয়ে যাও। সে বলল, তুমি কি আমার সাথে উপহাস করছ ? আমি বললাম, আমি তোমার সাথে উপহাস করছি না বরং এসব তোমার। হে আল্লাহ ! তুমি যদি জান আমি তা তোমারই সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে করছি, তবে আমাদের থেকে (গুহার মুখ) খুলে দাও। তখন তাদের থেকে গুহার মুখ খুলে গেল।
হাদীস নং ২০৭৫
আবুন নুমান রহ………আবদুর রাহমান ইবনে আবু বকর রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমরা নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর ছিলাম। এ সময়ে এলোমেলো লম্বা চুল বিশিষ্ট এক মুশরিক ব্যক্তি তার বকরী হাঁকিয়ে উপস্থিত হল। নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বললেন, এটা কি বিক্রির জন্য, না দান হিসাবে, অথবা তিনি বললেন, না হেবা হিসাবে? সে বলল, বরং বিক্রির জন্য। তখন তিনি তার কাছ থেকে একটি বকরী খরিদ করলেন।