হাদিস ৫৬১
মুহাম্মদ ইব্ন সালাম (র.)……আবূ হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্(সা.) দু’ সময়ে সালাত আদায় করতে নিষেধ করেছেন। ফজরের পর সূর্য উদিত হওয়া পর্যন্ত এবং আসরের পর সূর্য অস্ত যাওয়া পর্যন্ত।
হাদিস ৫৬২
আবু নু’মান (র.)…ইব্ন উমর (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি আমার সঙ্গীদের যেভাবে সালাত আদায় করতে দেখেছি সেভাবেই আমি সালাত আদায় করি। সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তের সময়ে সালাতের ইচ্ছা করা ব্যতীত রাতে বা দিনে যে কোন সময় কেউ সালাত আদায় করতে চাইলে আমি নিষেধ করি না।
হাদিস ৫৬৩
আবূ নু’আইম (র.)…….আয়িশা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, সে মাহান সত্তার শপথ, যিনি তাঁকে (নবী (সা.) – কে) উঠিয়ে নিয়েছেন, আল্লাহর সান্নিধ্যে যাওয়ার পূর্ব পর্যন্ত তিনি দু’রাকাআত সালাত কখনই ছাড়েননি। আর সালাতে দাঁড়ানো যখন তাঁর পক্ষে সম্ভব হয়নি, তখন তিনি আল্লাহর সান্নিধ্যে চলে গেছেন। তিনি তাঁর এ সালাত অধিকাংশ সময় বসে বসেই আদায় করতেন। আয়িশা (রা.) এ সালাত দ্বারা আসরের পরবর্তী দু’রাকাআতের কথা বুঝিয়েছেন। রাসূলুল্লাহ্(সা.) এ দু’রাকাআত সালাত আদায় করতেন, তবে উম্মাতের উপর বোঝা হয়ে পড়ার আশংকায় তা মসজিদে আদায় করতেন না। কেননা, উম্মাতের জন্য যা সহজ হয় তাই তাঁর কাম্য ছিল।
হাদিস ৫৬৪
মুসাদ্দাদ (র.)…….আয়িশা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, হে ভাগিনে! নবী (সা.) আমার কাছে উপস্থিত থাকার কালে আসরের পরবর্তী দু’রাকাআত কখনও ছাড়েননি।
হাদিস ৫৬৫
মূসা ইব্ন ইসমায়ীল (র.)…….আয়িশা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, দু’রাকাআত সালাত রাসূলুল্লাহ্(সা.) প্রকাশ্যে বা গোপনে কোন অবস্থাতেই ছাড়তেন না। তা হল ফজরের সালাতের আগের দু’রাকাআত ও আসরের পরের দু’রাকাআত।
হাদিস ৫৬৬
মুহাম্মদ ইব্ন আর’আরা (র.)……আয়িশা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্(সা.) যে দিনই আসরের পর আমার কাছে আসতেন সে দিনই দু’রাকাআত সালাত আদায় করতেন।
হাদিস ৫৬৭
মু’আয ইব্ন ফাযালা (র.)…….আবূ মালীহ্(রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, এক মেঘলা দিনে আমরা বুরাইদা (রা.)-এর সঙ্গে ছিলাম। তিনি বললেন, শীঘ্র সালাত আদায় করে নাও। কেননা, নবী (সা.) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি আসরের সালাত ছেড়ে দেয় তার সমস্ত আমল বিনষ্ট হয়ে যায়।
হাদিস ৫৬৮
ইমরান ইব্ন মাইসারা (র.) আবূ কাতাদা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, এক রাতে আমরা রাসূলুল্লাহ্(সা.)-এর সঙ্গে ছিলাম। যাএী দলের কেউ কেউ বললেন, ইয়া রাসূলুল্লাহ্! (সা.) রাতের এ শেষ প্রহরে আমাদের নিয়ে যদি একটু বিশ্রাম নিতেন। রাসূলুল্লাহ্(সা.) বললেনঃ আমার ভয় হচ্ছে সালাতের সময়ও তোমরা ঘুমিয়ে থাকবে। বিলাল (রা.) বললেন, আমি আপনাদের জাগিয়ে দিব। কাজেই সবাই শুয়ে পড়লেন। এ দিকে বিলাল (রা.) তাঁর হাওদার গায়ে একটু হেলান দিয়ে বসলেন। এতে তাঁর দু’চোখ মূদে আসল। ফলে তিনি ঘুমিয়ে পড়লেন। সূর্য কেবল উঠতে শুরু করেছে, এমন সময় রাসূলুল্লাহ্(সা.) জাগ্রত হলেন এবং বিলাল (রা.)-কে ডেকে বললেন, হে বিলাল! তোমার কথা গেল কোথায়? বিলাল (রা.) বললেন, আমার এত অধিক ঘুম আর কখনও পায়নি। রাসূলুল্লাহ্(সা.) বললেনঃ আল্লাহ্তা’আলা যখন ইচ্ছা করেছেন তখন তোমাদের রূহ্কব্য করে নিয়েছেন; আবার যখন ইচ্ছা করেছেন তখন তা তোমাদের ফিরিয়ে দিয়েছেন। হে বিলাল! উঠ, লোকদের জন্য সালাতের আযান দাও। তারপর তিনি উযূ করলেন এবং সূর্য যখন উপরে উঠল এবং উজ্জ্বল হলো তখন তিনি দাঁড়ালেন এবং সালাত আদায় করলেন।
হাদিস ৫৬৯
মু’আয ইব্ন ফাযালা (র.)……জাবির ইব্ন আব্দুল্লাহ্(রা.) থেকে বর্ণিত যে, খন্দকের দিন সূর্য অস্ত যাওয়ার পর উমর ইব্ন খাত্তাব (রা.) এসে কুরাইশ গোএীয় কাফিরদের ভর্ৎসনা করতে লাগলেন এবং বললেন, ইয়া রাসূলুল্লাহ্! (সা.) আমি এখনও আসরের সালাত আদায় করতে পারিনি, এমন কি সূর্য অস্ত যায় যায়। নবী (সা.) বললেনঃ আল্লাহর শপথ! আমিও তা আদায় করিনি। তারপর আমরা উঠে বুতহানের দিকে গেলাম। সেখানে তিনি সালাতের জন্য উযূ করলেন এবং আমরাও উযূ করলাম; এরপর সূর্য ডুবে গেলে আসরের সালাত আদায় করেন, তারপর মাগরিবের সালাত আদায় করেন।
হাদিস ৫৭০
আবূ নু’আইম ও মূসা ইব্ন ইসমায়ীল (র.)……আনাস ইব্ন মালিক (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্(সা.) বলেছেনঃ যদি কেউ কোন সালাতের কথা ভুলে যায়, তাহলে যখনই স্মরণ হবে, তখন তাকে তা আদায় করতে হবে। এ ব্যতীত সে সালাতের অন্য কোন কাফ্ফারা নেই। (কেননা, আল্লাহ্তা’আলা ইরশাদ করেছেন) “আমাকে স্মরণের উদ্দেশ্যে সালাত কায়েম কর”। মুসা (র.) বলেন, হাম্মাম (র.) বলেছেন যে, আমি তাকে (কাতাদা (র.)) পরে বলতে শুনেছি, “আমাকে স্মরণের উদ্দেশ্যে সালাত কায়েম কর।” হাব্বান (র.) আনাস (রা.) –এর সূএে রাসূলুল্লাহ্(সা.) থেকে অনুরূপ হাদীস বর্ণিত আছে।
হাদিস ৫৭১
মুসাদ্দাদ (র.)…….জাবির (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, খন্দকের যুদ্ধকালে এক সময় উমর (রা.) কুরাইশ কাফিরদের ভর্ৎসনা করতে লাগলেন এবং বললেন, সূর্যাস্তের পূর্বে আমি আসরের সালাত আদায় করতে পরিনি, (জাবির (রা.) বলেন) তারপর আমার বুতহান উপত্যকায় উপস্থিত হলাম। সেখানে তিনি সূর্যাস্তের পর সে সালাত আদায় করলেন, তারপরে মাগরিবের সালাত আদায় করলেন।