হাদীস নং ১২১৩
ইসমাঈল ইবনে খলীল রহ……….আবু বুরদাহ পিতা (আবু মূসা আশআরী রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, যখন উমর রা. আহত হলেন, তখন সুহাইব রা. হায় ! আমার ভাই ! বলতে লাগলেন। উমর রা. বললেন, তুমি কি জান না, যে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন : জীবিতদের কান্নার কারণে অবশ্যই মৃতদের আযাব দেওয়া হয় ?
হাদীস নং ১২১৪
আবু নুআইম রহ……….মুগীরা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছি যে, আমার প্রতি মিথ্যা আরোপ করা অন্য কারো প্রতি মিথ্যা আরোপ করার মত নয়। যে ব্যক্তি আমার প্রতি মিথ্যা আরোপ করে, সে যেন অবশ্যই তার ঠিকানা জাহান্নামে করে নেয়। (মুগীরা রা. আরও বলেছেন) আমি নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছি, যে (মৃত) ব্যক্তির জন্য বিলাপ করা হয়, তাকে বিলাপ কৃত বিষয়ের উপর আযাব দেওয়া হবে।
হাদীস নং ১২১৫
আবদান রহ………উমর রা. সূত্রে আমি নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, মৃত ব্যক্তিকে তার জন্য কৃত বিলাপের বিষয়ের উপর কবরে আযাব দেওয়া হয়। আবদুল আলা রহ……..কাতাদা রহ. থেকে বর্ণনায় আবদান রহ.-এর অনুসরণ করেছেন। আদম রহ. শুবা রা. থেকে বর্ণনা করেন যে, মৃত ব্যক্তিকে তার জন্য জীবিতদের কান্নার কারণে আযাব দেওয়া হয়।
হাদীস নং ১২১৬
আলী ইবনে আবদুল্লাহ রহ………জাবির ইবনে আবদুল্লাহ রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, উহুদের দিন আমার পিতাকে অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ কর্তিত অবস্থায় নিয়ে এসে আমি নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সামনে রাখা হল। তখন একখানা কাপড় দিয়ে তাকে ঢেকে রাখা হয়েছিল। আমি তাঁর উপর থেকে আবরণ উম্মোচন করতে আসলে, আমার কওমের লোকেরা (আবার) আমাকে নিষেধ করল। পরে আমি নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর নির্দেশে তাকে উঠিয়ে নেওয়া হল। তখন তিনি এক রোদনকারীনীর আওয়াজ শুনে জিজ্ঞাসা করলেন, কাদো কেন ? অথবা বলেছেন, কেঁদো না। কেননা, তাকে উঠিয়ে নেওয়া পর্যন্ত ফেরেশতাগণ তাদের পাখা বিস্তার করে তাকে ছায়া দিয়ে রেখেছিলেন।
হাদীস নং ১২১৭
আবু নুআইম রহ………..আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন : যারা (মৃত ব্যক্তির জন্য শোক প্রকাশে) গাল চাপড়ায়, জামার বুক ছিড়ে ফেলে এবং জাহিলীয়াত যুগের মত চীৎকার দেয়, তারা আমাদের তরীকাভূক্ত নয়।
হাদীস নং ১২১৮
আবদুল্লাহ ইবনে ইউসুফ রহ……….সা’দ ইবনে আবু ওয়াক্কাস রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, বিদায় হজ্জে একটি কঠিন রোগে আমি আক্রান্ত হলে, আমি নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার খোঁজ খবর নেওয়ার জন্য আসতেন। একদিন আমি তাঁর কাছে আরয করলাম, আমার রোগ চরমে পৌছেছে আর আমি সম্পদশালী। একটি মাত্র কন্যা ছাড়া কেউ আমার ওয়ারিস নেই। তবে আমি কি আমার সম্পদের দু’ তৃতীয়াংশ সাদকা করতে পারি ? তিনি বললেন, না । আমি আবার আরয করলাম, তাহলে অর্ধেক। তিনি বললেন, না। তারপর তিনি বললেন, এক তৃতীয়াংশ আর এক তৃতীয়াংশও বিরাট পরিমাণ অথবা অধিক। তোমার ওয়ারিসদের অভাবমুক্ত রেখে যাওয়া, তাদের অভাবগ্রস্ত রেখে যাওয়া মানুষের কাছে হাত পাতার চাইতে উত্তম। আর আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের জন্য তুমি যে কোন ব্যয় কর না কেন, তোমাকে তার বিনিময় দেওয়া হবে। এমন কি যা তুমি তোমার স্ত্রীর মুখে তুলে দিবে (তারও প্রতিদান পাবে) আমি আরয করলাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ ! (আফসোস) আমি আমার সাথীদের থেকে পিছনে থেকে যাব ? তিনি বললেন, তুমি যদি পিছনে থেকে নেক আমাল করতে থাক, তাহলে তাঁতে তোমার মর্যাদা ও উন্নতি বৃদ্ধিই পেতে থাকবে । তা ছাড়া, সম্ভবত, তুমি পিছনে (থেকে যাবে) যার ফলে তোমার দ্বারা অনেক কওম উপকার লাভ করবে। আর অন্যরা ক্ষতিগ্রস্ত হবে। হে আল্লাহ ! আমার সাহাবীগণের হিজরত বলবৎ রাখুন। পশ্চাতে ফিরিয়ে দিবেন না। কিন্তু আফসোস ! সা’দ ইবনে খাওলার জন্য (এ বলে) আমি নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর জন্য শোক প্রকাশ করছিলেন, যেহেতু মক্কায় তাঁর ইন্তিকাল হয়েছিল।
হাদীস নং ১২১৯
মুহাম্মদ ইবনে বাশশার রহ………আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন : যারা শোকে গালে চাপড়ায়, জামার বুক ছিড়ে ফেলে ও জাহিলীয়াত যুগের মত চিৎকার দেয়, তারা আমাদের তরীকাভূক্ত নয়।
হাদীস নং ১২২০
উমর ইবনে হাফস রহ……….আবদুল্লাহ রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন : যারা (শোকে) গালে চাপড়ায়, জামার বুক ছিড়ে ফেলে ও জাহিলী যুগের মত চিৎকার দেয় তারা আমাদের তরীকাভূক্ত নয়।
হাদীস নং ১২২১
মুহাম্মদ ইবনে মুসান্না রহ………আয়িশা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, যখন (মুতার যুদ্ধ ক্ষেত্র থেকে) নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর খিদমতে (যায়েদ) ইবেন হারিসা, জাফর ও ইবনে রাওয়াহা রা.-এর শাহাদাতের সংবাদ পৌঁছল, তখন তিনি (এমনভাবে) বসে পড়লেন যে, তাঁর মধ্যে দুঃখের চিহ্ন ফুটে উঠেছিল। আমি (আয়িশা রা. দরওয়াযার ফাঁক দিয়ে তা দেখছিলাম। এক ব্যক্তি সেখানে উপস্থিত হয়ে জাফর রা. -এর পরিবারের মহিলাদের কান্নাকাটির কথা উল্লেখ করলেন। নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঐ ব্যক্তিকে নির্দেশ দিলেন, তিনি যেন তাদেরকে (কাঁদতে) নিষেধ করেন, লোকটি চলে গেল এবং দ্বিতীয়বার এসে (বলল) তারা তাঁর কথা মানেনি। তিনি ইরশাদ করলেন : তাদেরকে নিষেধ করে। ঐ ব্যক্তি তৃতীয়বার এসে বললেন, আল্লাহর কসম ! ইয়া রাসূলাল্লাহ ! তাঁরা আমাদের হার মানিয়েছে। আয়িশা রা. বলেন, আমার মনে হয়, তখন নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (বিরক্তির সাথে) বললেন : তাহলে তাদের মুখে মাটি নিক্ষেপ কর। আয়িশা রা. বলেন, আমি বললাম, আল্লাহ তোমার নাকে ধূলি মিলিয়ে দেন। তুমি নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নির্দেশ পালন করতে পারনি। অথচ তুমি নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বিরক্ত করতেও কসুর করনি।