হাদীস নং ১১৯৭
আবু নুআইম রহ………..আয়িশা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে তিনখানা সূতী সাদা সাহুলী (ইয়ামানী) কাপড়ে কাফন দেওয়া হয়েছে, তার মধ্যে কামীস এবং পাগড়ী ছিল না।
হাদীস নং ১১৯৮
মুসাদ্দাদ রহ……….আয়িশা রা. থেকে বর্ণিত, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে তিনখানা কাপড় দিয়ে কাফন দেওয়া হয়েছে, তাতে কামীস ও পাগড়ী ছিল না। আবু আবদুল্লাহ রহ. বলেন, আবু নুআইম রহ. ‘সালাসাতুন’ শব্দটি বলেন নি। আর আবদুল্লাহ ইবনে ওয়ালীদ রহ. থেকে হাদীস বর্ণনায় ‘সালাসাতুন’ শব্দটি বলেছেন।
হাদীস নং ১১৯৯
ইসমাঈল রহ………..আয়িশা রা. থেকে বর্ণিত, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে তিনখানা সাদা সাহুলী কাপড় দিয়ে কাফন দেওয়া হয়েছে, যার মধ্যে কোন কামীস ও পাগড়ী ছিল না।
হাদীস নং ১২০০
আহমদ ইবনে মুহাম্মদ মাক্কী রহ………সাদ রহ.-এর পিতা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, একদিন আবদুর রহমান ইবনে আওফ রা. -কে খাবার দেওয়া হল। তখন তিনি বললেন, মুসআব ইবনে উমাইর রা. শহীদ হন আর তিনি আমার চাইতে শ্রেষ্ঠ ছিলেন অথচ তাঁর কাফনের জন্য একখানা চাদর ছাড়া আর কিছুই পাওয়া যায় নি। হামযা রা. বা অপর এক ব্যক্তি শহীদ হন, তিনিও ছিলেন আমার চাইতে শ্রেষ্ঠ, অথচ তাঁর কাফনের জন্যও একখানা চাদর ছাড়া কিছুই পাওয়া যায়নি। তাই আমার আশংকা হয়, আমাদের নেক আমলের বিনিময় আমাদের এ পার্থিব জীবনে আগেই দেয়া হল। তারপর তিনি কাঁদতে লাগলেন।
হাদীস নং ১২০১
মুহাম্মদ ইবনে মুকাতিল রহ………ইবরাহীম রহ. থেকে বর্ণিত, একদা আবদুর রহমান ইবনে আওফ রা.-কে খাদ্য পরিবেশন করা হল, তখন তিনি সিয়াম পালন করছিলেন। তিনি বললেন, মুসআব ইবনে উমাইর রা. শহীদ হন। তিনি ছিলেন, আমার চাইতে শ্রেষ্ঠ। (অথচ) তাকে এমন একখানা চাদর দিয়ে কাফন দেয়া হল যে, তাঁর মাথা ঢাকলে তাঁর দু’ পা বাইরে থাকে আর দু’ পা ঢাকলে মাথা বাইরে থাকে । (বর্ণনাকারী বলেন) আমার মনে পড়ে, তিনি আরও বলেছিলেন, হামযা রা. শহীদ হন। তিনিও ছিলেন আমার চাইতে শ্রেষ্ঠ। তারপর আমাদের জন্য পৃথিবীতে অত্যাধিক প্রাচুর্য দেওয়া হয়েছে। আশংকা হয় যে, আমাদের নেক আমলগুলো (এর বিনিময়ে) আমাদের আগেই দিয়ে দেওয়া হয়েছে। তারপর তিনি কাঁদতে লাগলেন, এমনকি খাদ্যও পরিহার করলেন।
হাদীস নং ১২০২
আমর ইবনে হাফস ইবনে গিয়াস রহ……….খাব্বাব রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সঙ্গে মদীনা হিজরত করেছিলাম, এতে আল্লাহর সন্তুষ্টি চেয়েছিলাম। আমাদের প্রতিদান আল্লাহর দরবারে নির্ধারিত হয়ে আছে। তারপর আমাদের মধ্যে অনেকে শহীদ হয়েছেন। কিন্তু তাঁরা তাদের বিনিময়ের কিছুই ভোগ করে যান নি। তাদেরই একজন মুসআব ইবনে উমাইর রা. আর আমাদের মধ্যে অনেক এমনও রয়েছেন যাদের অবদানের ফল পরিপক্ক হয়েছে। আর তাঁরা তা ভোগ করছেন। মুসআব রা. উহুদের দিন শহীদ হলেন। আমরা তাকে কাফন দেওয়ার জন্য এমন একখানা চাদর ব্যতীত আর কিছুই পেলাম না; যা দিয়ে তাঁর মাথা ঢাকলে তাঁর দু’ পা বাইরে থাকে আর তাঁর দু’ খানা পায়ের উপর ইযখির দিয়ে দিতে আমাদের নির্দেশ দিলেন।
হাদীস নং ১২০৩
আবদুল্লাহ ইবনে মাসলামা রহ………সাহল রা. থেকে বর্ণিত, এক মহিলা নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে একখানা বুরদাহ (চাদর) নিয়ে এলেন যার সাথে ঝালর যুক্ত ছিল। সাহল রা. বললেন, তোমরা জান, বুরদাহ কি ? তারা বলল, চাদর। সাহল রা. বললেন, ঠিকই। মহিলা বললেন, চাদরখানা আমি নিজ হাতে বুনছি এবং তা আপনার পরিধানের জন্য নিয়ে এসেছি। নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তা গ্রহণ করলেন এবং তাঁর চাদরের প্রয়োজনও ছিল। তারপর তিনি তা ইযাররূপে পরিধান করে আমাদের সামনে তাশরীফ আনেন। তখন জনৈক ব্যক্তি তার সৌন্দর্য বর্ণনা করে বললেন, বাহ ! এ যে কত সুন্দর। আমাকে তা পড়ার জন্য দান করুন। সহাবীগণ বললেন, তুমি ভাল করনি। নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তা তাঁর প্রয়োজনে পরেছেন : তবুও তুমি তা চেয়ে বসলে। অথচ তুমি জান যে, তিনি কাউকে বিমুখ করেন না। ঐ ব্যক্তি বলল, আল্লাহর কসম ! আমি তা পরার উদ্দেশ্যে চাইনি। আমার চাওয়ার একমাত্র উদ্দেশ্য যেন তা আমার কাফন হয়। সাহল রা. বলেন, শেষ পর্যন্ত তা তাঁর কাফনই হয়েছিল।
হাদীস নং ১২০৪
কাবীসা ইবনে উকবা রহ ………..উম্মে আতিয়্যাহ রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, জানাযার অনুগমন করতে আমাদের নিষেধ করা হয়েছে, তবে আমাদের উপর কড়াকড়ি করা হয়নি।
হাদীস নং ১২০৫
মুসাদ্দাদ রহ………..মুহাম্মদ ইবনে সীরীন রহ. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, উম্মে আতিয়্যাহ রা. -এর এক পুত্রের ইন্তিকাল হল। তৃতীয় দিনে তিনি হলুদ বর্ণের সুগন্ধি আনিয়ে ব্যবহার করলেন, আর বললেন, স্বামী ব্যতীত অন্য কারো জন্য তিন দিনের বেশী শোক করতে আমাদের নিষেধ করা হয়েছে।
হাদীস নং ১২০৬
হুমাইদী রহ………যায়নাব বিনতে আবু সালামা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, যখন শাম থেকে আবু সুফিয়ান রা. -এর মৃত্যু সংবাদ পৌঁছল, তার তৃতীয় দিন উম্মে হাবীবা রা. হলুদ বর্ণের সুগন্ধি আনলেন এবং তাঁর উভয় গাল ও বাহুতে মাখলেন। তারপর বললেন, অবশ্য আমার এর কোন প্রয়োজন ছিল না, যদি আমি নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে এ কথা বলতে না শুনতাম যে স্ত্রীলোক আল্লাহ এবং কিয়ামতের দিনের প্রতি ঈমান রাখে তার পক্ষে স্বামী ব্যতীত অন্য কোন মৃত ব্যক্তির জন্য তিন দিনের বেশী শোক পালন করা হালাল নয়। অবশ্য স্বামীর জন্য সে চার মাস দশ দিন শোক পালন করবে।