হাদীস নং ১১৭০
ইয়াহইয়া ইবনে বুকাইর রহ……….আনসারী মহিলা ও নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে বায়আতকারী উম্মুল আলা রা. থেকে বর্ণিত, (হিজরতের পর) কোরআর মাধ্যমে মুহাজিরদের বন্টন করা হচ্ছিল। তাঁতে উসমান ইবনে মাযউন রা. আমাদের ভাগে পড়লেন, আমরা (সাদরে) তাকে আমাদের বাড়ীতে স্থান দিলাম। এক সময় তিনি সেই রোগে আক্রান্ত হলেন, যাতে তাঁর মৃত্যু হল। যখন তাঁর মৃত্যু হল এবং তাকে গোসল করিয়ে কাফনের কাপড় পরানো হল, তখন নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রবেশ করলেন। তখন আমি বললাম, হে আবুস-সায়িব, আপনার উপর আল্লাহর রহমত বর্ষিত হোক ! আপনার সম্বন্ধে আমার সাক্ষ্য এই যে, আল্লাহ আপনাকে সম্মানিত করেছেন। তখন নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন : তুমি কি করে জানলে যে, আল্লাহ তাকে সম্মানিত করেছেন ? আমি বললাম, আমার পিতা আপনার জন্য কুরবান, ইয়া রাসূলাল্লাহ ! তাহলে আল্লাহ আর কাকে সম্মানিত করবেন ? নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন : তাঁর ব্যাপার তো এই যে, নিশ্চয় তাঁর মৃত্যু হচ্ছে এবং আল্লাহর কসম ! আমি তাঁর জন্য মঙ্গল কামনা করি। আল্লাহর কসম ! আমি জানি না আমার সঙ্গে কী ব্যবহার করা হবে, অথচ আমি আল্লাহর রাসূল । সেই আনসারী মহিলা বলেন, আল্লাহ কসম ! এরপর আর কোন দিন আমি কোন ব্যক্তি সম্পর্কে পবিত্র বলে মন্তব্য করব না।
হাদীস নং ১১৭১
সাঈদ ইবনে উফাইর রহ……….লায়স রহ. সূত্রে অনুরূপ বর্ণনা করেন। আর নাফি ইবনে ইয়াযীদ রহ উকাইল রহ. সূত্রে বলেন ‘তার সঙ্গে কি ব্যবহার করা হবে?’ শুয়াইব, আমর ইবনে দীনার ও মামার রহ. উকাইল রহ.-এর অনুসরণ করেছেন।
হাদীস নং ১১৭২
মুহাম্মদ ইবনে বাশশার রহ……….জাবির ইবনে আবদুল্লাহ রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, (উহুদ যুদ্ধে) আমার পিতা (আবদুল্লাহ রা.) শহীদ হয়ে গেলে আমি তাঁর মুখমণ্ডল থেকে কাপড় সরিয়ে কাঁদতে লাগলাম। লোকেরা আমাকে নিষেধ করতে লাগল। কিন্তু নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে নিষেধ করেন নি। আমার ফুফী ফাতিমা রা.ও কাঁদতে লাগলেন। এতে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন : তুমি কাঁদ বা না-ই কাঁদ (উভয় সমান) তোমরা তাকে তুলে নেওয়া পর্যন্ত ফেরেশতাগণ তাদের ডানা দিয়ে ছায়া বিস্তার করে রেখেছেন। ইবনে জুরাইজ রহ. মুহাম্মদ ইবেন মুনকাদির রহ. সূত্রে জাবির রা. থেকে হাদীস বর্ণনায় শুবা রা. -এর অনুসরণ করেছেন।
হাদীস নং ১১৭৩
ইসমাঈল রহ……….আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, নাজাশী যে দিন মারা যান সেদিন-ই নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর মৃত্যু সংবাদ দেন এবং জানাযার স্থানে গিয়ে লোকদের কাতারবদ্ধ করে চার তাকবীর আদায় করলেন।
হাদীস নং ১১৭৪
আবু মামার রহ………..আনাস ইবনে মালিক রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (মূতা যুদ্ধের অবস্থা বর্ণনায়) বললেন : যায়েদ রা. পতাকা বহন করেছে তারপর শহীদ হয়েছে। তারপর জাফর রা. (পতাকা) হাতে নিয়েছে, সেও শহীদ হয়। তারপর আবদুল্লাহ ইবনে রাওয়াহা রা. (পতাকা) ধারণ করে এবং সেও শহীদ হয়। এ সংবাদ বলছিলেন এবং নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর দু’চোখ থেকে অশ্রু প্রবাহিত হচ্ছিল। এরপর খালিদ ইবনে ওয়ালিদ রা. পরামর্শ ছাড়াই (পতাকা) হাতে তুলে নেয় এবং তাঁর দ্বারা বিজয় সূচিত হয়।
হাদীস নং ১১৭৫
মুহাম্মদ রহ…………ইবনে আব্বাস রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, এক ব্যক্তি মারা গেল। যার অসুস্থতার সময় নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম খোঁজ-খবর নিতেন। তার মৃত্যু হয় এবং রাতেই লোকেরা তাকে দাফন করেন। সকাল হলে তাঁরা (এ বিষয়ে) নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম –কে অবহিত করেন। তিনি বললেন : আমাকে সংবাদ দিতে তোমাদের কিসে বাঁধা দিল ? তারা বলল, তখন ছিল রাত এবং ঘোর অন্ধকার। তাই আপনাকে কষ্ট দেওয়া আমরা পছন্দ করিনি। তিনি ঐ ব্যক্তির কবরের কাছে গেলেন এবং তাঁর উপর সালাতে জানাযা আদায় করলেন।
হাদীস নং ১১৭৬
আবু মামার রহ……….আনাস রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন : কোন মুসলিমের তিনটি সন্তান সাবালিগ হওয়ার আগে মারা গেলে তাদের প্রতি তাঁর রহমত স্বরূপ অবশ্যই আল্লাহ তা’আলা ঐ ব্যক্তিকে জান্নাতে দাখিল করাবেন।
হাদীস নং ১১৭৬
আবু মামার রহ……….আনাস রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন : কোন মুসলিমের তিনটি সন্তান সাবালিগ হওয়ার আগে মারা গেলে তাদের প্রতি তাঁর রহমত স্বরূপ অবশ্যই আল্লাহ তা’আলা ঐ ব্যক্তিকে জান্নাতে দাখিল করাবেন।
হাদীস নং ১১৭৮
আলী রহ………..আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন : কোন মুসলিমের তিনটি (নাবালিগ) সন্তান মারা গেল, তারপরও সে জাহান্নামে প্রবেশ করবে-এমন হবে না। তবে শুধু কসম পূর্ণ হওয়ার পরিমাণ পর্যন্ত। আবু আবদুল্লাহ (ইমাম বুখারী) বহ. বলেন, আল্লাহ তা’আলার ইরশাদ : “তোমাদের প্রত্যেকেই তা অতিক্রম করবে”।
হাদীস নং ১১৭৯
আদম রহ…………আনাস ইবনে মালিক রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একটি কবরের কাছে উপস্থিত এক মহিলার পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন, সে তখন কাঁদছিল। তখন তিনি বললেন : আল্লাহকে ভয় কর এবং সবর কর।