হাদীস নং ১১৪৩
আবদুল্লাহ ইবনে আবু শায়বাহ রহ……….আবদুল্লাহ রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -কে তাঁর সালাত রত অবস্থায় সালাম করতাম। তিনি আমাকে সালামের জওয়াব দিতেন। আমরা (আবিসিনিয়া থেকে) ফিরে এসে তাকে (সালাতরত অবস্থায়) সালাম করলাম। তিনি জওয়াব দিলেন না এবং পরে বললেন : সালাতে অনেক ব্যস্ততা ও নিমগ্নতা রয়েছে।
হাদীস নং ১১৪৪
আবু মামার রহ……….জাবির ইবনে আবদুল্লাহ রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে তাঁর একটি কাজে পাঠালেন, আমি গেলাম এবং কাজটি সেরে ফিরে এলাম। এরপর নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -কে সালাম করলাম। তিনি জওয়াব দিলেন না। এতে আমার মনে এমন খটকা লাগল যা আল্লাহই ভাল জানেন। আমি মনে মনে বললাম, সম্ভবত আমি বিলম্বে আসার কারণে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার উপর অসন্তুষ্ট হয়েছেন। আবার আমি তাকে সালাম করলাম, তিনি জওয়াব দিলেন না। ফলে আমার মনে প্রথম বারের চাইতেও অধিক খটকা লাগল। (সালাত শেষে)) আবার আমি তাকে সালাম করলাম।এবার তিনি সালামের জওয়াব দিলেন এবং বললেন : সালাতে ছিলাম বলে তোমার সালামের জওয়াব দিতে পারিনি। তিনি তখন তাঁর বাহনের পিঠে কিবলা থেকে ভিন্নমুখী ছিলেন।
হাদীস নং ১১৪৫
কুতাইবা রহ………..সাহল ইবনে সাদ রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে এ সংবাদ পৌঁছল যে, কুবায় বনু আমর ইবনে আওফ গোত্রে কোন ব্যাপার ঘটেছে। তাদের মধ্যে মীমাংসার উদ্দেশ্যে তিনি কয়েকজন সাহাবীসহ বেরিয়ে গেলেন। নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সেখানে কর্মব্যস্ত হয়ে পড়েন। ইতিমধ্যে সালাতের সময় হয়ে গেল। বিলাল রা. আবু বকর রা. -এর কাছে এসে বললেন, হে আবু বকর ! নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কর্মব্যস্ত রয়েছেন। এদিকে সালাতের সময় উপস্থিত। আপনি কি লোকদের ইমামতি করবেন ? তিনি বললেন, হ্যাঁ, যদি তুমি চাও। তখন বিলাল রা. সালাতের ইকামত বললেন এবং কাতার ফাঁক করে সামনে এগিয়ে গিয়ে কাতারে দাঁড়ালেন। মুসল্লীগণ তখন তাসফীহ করতে লাগলেন। সাহল রা. বলেন, তাসফীহ মানে তাসফীক (হাতে তালি দেওয়া) তিনি আরো বললেন, আবু বকর রা. সালাতে এদিক সেদিক তাকাতেন না। মুসল্লীগণ বেশী (হাত চাপড়াতে শুরু) করলে, তিনি লক্ষ্য করে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে দেখতে পেলেন। তিনি তাকে ইশারায় সালাত আদায় করার আদেশ দিলেন। তখন আবু বকর রা. তাঁর দুহাত তুললেন এবং আল্লাহর হামদ বর্ণনা করলেন। তারপর পিছু হেটে পিছনে চলে এসে কাতারে দাঁড়ালেন। আর নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সামনে এগিয়ে গেলেন এবং মুসল্লীগণকে নিয়ে সালাত আদায় করলেন। সালাত শেষ করে তিনি মুসল্লীগণের দিকে মুখ করে বললেন : হে লোক সকল ! তোমাদের কি হয়েছে ? সালাতে কোন ব্যাপার ঘটলে তোমরা হাত চাপড়াতে শুরু কর কেন ? হাত চাপড়ানো তো মেয়েদের জন্য। সালাত রত অবস্থায় কারো কিছু ঘটলে পুরুষরা সুবহানাল্লাহ বলবে। তারপর তিনি আবু বকর রা. -এর দিকে লক্ষ্য করে তাকে জিজ্ঞাসা করলেন, হে আবু বকর ! তোমাকে আমি ইশারা করা সত্ত্বেও কিসে তোমাকে সালাত আদায়ে বাঁধা দিল ? আবু বকর রা. বললেন, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর সামনে দাঁড়িয়ে সালাত আদায় করা ইবনে আবু কুহাফার জন্য সংগত নয়।
হাদীস নং ১১৪৬
আবু নুমান রহ……..আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, সালাতে কোমরে হাত রাখা নিষেধ করা হয়েছে। হিশাম ও আবু হিলাল রহ. ইবনে সীরীন রহ.-এর মাধ্যমে আবু হুরায়রা রা. সূত্রে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেছেন।
হাদীস নং ১১৪৭
আমর ইবনে আলী রহ…….আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, কোমরে হাত রেখে সালাত আদায় করতে লোকদের নিষেধ করা হয়েছে।
হাদীস নং ১১৪৮
ইসাহক ইবনে মানসুর রহ……….উকবা ইবনে হারিস রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর সঙ্গে আসরের সালাত আদায় করলাম। সালাম করেই তিনি দ্রুত উঠে তাঁর কোন এক সহধর্মিণীর কাছে গেলেন, এরপর বেরিয়ে এলেন। তাঁর দ্রুত যাওয়া আসার ফলে (উপস্থিত) সাহাবীগণের চেহারায় বিস্ময়ের আভাস দেখে তিনি বললেন : সালাতে আমার কাছে রাখা একটি সোনার টুকরার কথা আমার মনে পড়ে গেল। সন্ধ্যায় বা রাতে তা আমার কাছে থাকবে আমি এটা অপছন্দ করলাম। তাই তা বন্টন করে দেওয়ার নির্দেশ দিয়ে ছিলাম।
হাদীস নং ১১৪৯
ইয়াহইয়া ইবনে বুকাইর রহ…….আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন : সালাতের আযান হলে শয়তান পিঠ ফিরিয়ে পালায় যাতে সে আযান শুনতে না পায়। তখন তার পশ্চাদ-বায়ু নিঃসরণ হতে থাকে। মুআযযিন আযান শেষে নিরব হলে সে আবার এগিয়ে আসে। আবার ইকামত বলা হলে পালিয়ে যায়। মুআযযিন (ইকামত) শেষ করলে এগিয়ে আসে। তখন সে মুসল্লীকে বলতে থাকে, (ওটা) স্মরণ কর, যে বিষয় তার স্মরণে ছিল না শেষ পর্যন্ত সে কত রাকাআত সালাত আদায় করল তা মনে করতে পারে না। আবু সালামা ইবনে আবদুর রহমান রহ. বলেছেন, তোমাদের কেউ এরূপ অবস্থায় পড়লে (শেষ বৈঠকে) বসা অবস্থায় যেন দুটি সিজদা করে। একথা আবু সালামা রা. আবু হুরায়রা রা. থেকে শুনেছেন।