হাদিস ৫৪৮
আম্র ইব্ন আসিম (র.)……যায়িদ ইব্ন সাবিত (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, তাঁরা নবী (সা.) – এর সাঙ্গে সাহরী খেয়েছেন, তারপর ফজরের সালাতে দাঁড়িয়েছেন। আনাস (রা.) বলেন, আমি জিজ্ঞাসা করলাম, এ দু’য়ের মাঝে কতটুকু সময়ের ব্যবধান ছিল? তিনি বললেন, পঞ্চাশ বা ষাট আয়াত তিলাওয়াত করা যায়, এরূপ সময়ের ব্যবধান ছিল।
হাদিস ৫৪৯
হাসান ইব্ন সাব্বাহ্(র.)……আনাস ইব্ন মালিক(রা.) থেকে বর্ণিত, আল্লাহর নবী (সা.) ও যায়িদ ইব্ন সাবিত (রা.) একসাথে সাহরী খাচ্ছিলেন, যখন তাঁদের খাওয়া হয়ে গেল – আল্লাহর নবী (সা.) (ফজরের) সালাতে দাঁড়িয়ে গেলেন এবং সালাত আদায় করলেন। কাতাদা (র.) বলেন, আমরা আনাস (রা.)-কে জিজ্ঞাসা করলাম, তাঁদের সাহরী খওয়া থেকে অবসর হয়ে সালাত শুরু করার মধ্যে কতটুকু সময় ব্যবধান ছিল? তিনি বললেন, একজন লোক পঞ্চাশ আয়াত তিলাওয়াত করতে পারে এতটুকু সময়।
হাদিস ৫৫০
ইসমায়ীল ইব্ন আবূ উওয়াইস (র.)……সাহ্ল ইব্ন সা’দ (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি আমার পরিবার-পরিজনের সাথে সাহরী খেতাম। খাওয়ার পরে রাসূলুল্লাহ্(সা.) – এর সঙ্গে ফজরের সালাত পাওয়ার জন্য আমাকে খুব তাড়াহুড়া করতে হত।
হাদিস ৫৫১
ইয়াহ্ইয়া ইব্ন বুকাইর (র.)……আয়িশা (রা.) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, মুসলিম মহিলাগণ সর্বাঙ্গ চাদরে ঢেকে রাসূলুল্লাহ্(সা.) – এর সঙ্গে ফজরের জামা’আতে হাযির হতেন। তারপর সালাত আদায় করে তারা যার যার ঘরে ফিরে যেতেন। আবছা আঁধারে কেউ তাঁদের চিনতে পারত না।
হাদিস ৫৫২
আব্দুল্লাহ্ইব্ন মাসলামা (র.)……আবূ হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ্(সা.) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি সূর্য উঠার আগে ফজরের সালাতের এক রাকআত পায়, সে ফজরের সালাত পেল। আর যে ব্যক্তি সূর্য ডুবার আগে আসরের সালাতের এক রাকাআত পেল সে আসরের সালাত পেল।
হাদিস ৫৫৩
আবদুল্লাহ্ইব্ন ইউসুফ(র.)……আবূ হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ্(সা.) বলেনঃ যে ব্যক্তি কোন সালাতের এক রাকআত পায়, সে সালাত পেল।
হাদিস ৫৫৪
হাফস ইব্ন উমর (র.)……ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, কয়েক জন আস্থাভাজন ব্যক্তি আমার কাছে – যাঁদের মধ্যে শ্রেষ্ঠ হলেন উমর (রা.) আমাকে বলেছেন যে, রাসূলুল্লাহ্(সা.) ফজরের পর সূর্য উজ্জ্বল হয়ে না উঠা পর্যন্ত এবং আসরের পর সূর্য অস্তমিত না হওয়া পর্যন্ত সালাত আদায় করতে নিষেধ করেছেন।
হাদিস ৫৫৫
মুসাদ্দাদ (র.)……ইব্ন আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমার নিকট কয়েক ব্যক্তি এরূপ বর্ণনা করেছেন।
হাদিস ৫৫৬
মুসাদ্দাদ (র.)…..ইব্ন উমর (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্(সা.) বলেছেনঃ তোমরা সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তের সময় সালাত আদায়ের ইচ্ছা করো না। উরওয়া (র.) বলেন, ইব্ন উমর (রা.) আমাকে আরও বলেন যে, রাসূলুল্লাহ্(সা.) বলেছেনঃ যদি সূর্যের একাংশ প্রকাশ পেয়ে যায়, তাহলে পূর্ণরূপে উদিত না হওয়া পর্যন্ত সালাত আদায়ে বিলম্ব করো। আর যদি তার একাংশ ডুবে যায় তাহলে সম্পূর্ণরূপে অস্তমিত না হওয়া পর্যন্ত সালাত আদায়ে বিলম্ব করো। আবদাও অনুরূপ বর্ণনা করেছেন।
হাদিস ৫৫৭
উবায়দ ইব্ন ইসমায়ীল (র.)……আবূ হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ্(সা.) দু’ধরণের বেচা-কেনা করতে, দু’ভাবে পোষাক পরিধান করতে এবং দু’সময়ে সালাত আদায় করতে নিষেধ করেছেন। ফজরের পর সূর্য পূর্ণরূপে উদিত না হওয়া পর্যন্ত এবং আসরের পর সূর্য অস্তমিত না হওয়া পর্যন্ত তিনি কোন সালাত আদায় করতে নিষেধ করেছেন। আর পুরো শরীর জড়িয়ে কাপড় পরতে এবং এক কাপড়ে (যেমন লুঙ্গি ইত্যাদি পরে) হাঁটু খাড়া করে এমনভাবে বসতে যাতে লজ্জাস্থান উপরের দিকে খুলে যায় – নিষেধ করেছেন। আর মুনাবাযা ও মুলামাসা (এর পন্থায় বেচা-কেনা) নিষেধ করেছেন।
মুনাবাযাঃ বিভিন্ন দরের একাধিক পণ্যদ্রব্য একস্থানে রেখে মূল্য হিসেবে একটি অংক নির্ধারণ করে এ শর্তে বিক্রি করা যে, ক্রেতা নির্দিষ্ট পরিমাণ দূরত্ব থেকে পাথর নিক্ষেপ করে যে পণ্যের গায়ে লাগাতে পারবে, উল্লেখিত মূল্যে তাকে তা বাধ্যতামূলকভাবে গ্রহণ করতে হবে। এ পন্থার বেচা-কেনা “মুনাবাযা” বলে অভিহিত।
মুলামাসাঃ একাধিক পণ্যের প্রত্যেকটির ভিন্ন ভিন্নভাবে মূল্য নির্ধারণ করে এভাবে বিক্রি কারা যে, ক্রেতা যেটি স্পর্শ করবে, পূর্ব নির্ধারিত মূল্যে তাকে অবশ্যই তা গ্রহণ করতে হবে। এ ধরনের বেচাকেনা শরয়ী পরিভাষায় ‘মুলামাসা’ বলে অভিহিত। যেহেতু এতে পসন্দ অপসন্দের স্বাধীনতা থাকে না, তাই শরীয়াত এ দু’টো পন্থাকে নিষিদ্ধ করেছে।
হাদিস ৫৫৮
আবদুল্লাহ্ইব্ন ইউসুফ (র.)……ইব্ন উমর (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ্(সা.) বলেছেনঃ তোমাদের কেউ যেন সর্যোদয় ও সূর্যাস্তের সময় সালাত আদায়ের উদ্যোগ না নেয়।
হাদিস ৫৫৯
আবদুল আযীয ইব্ন আবদুল্লাহ্(র.)……আবূ সায়ীদ খুদ্রী (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ্(সা.) – কে বলতে শুনেছি যে, ফজরের পর সূর্য উদিত হয়ে (একটু) উপরে না উঠা পর্যন্ত এবং আসরের পর সূর্য অস্তমিত না হওয়া পর্যন্ত কোন সালাত নেই।
হাদিস ৫৬০
মুহাম্মদ ইব্ন আবান (র.)……মু’আবিয়া (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, তোমরা এমন এক সালাত আদায় করে থাক – রাসূলুল্লাহ্(সা.) – এর সাহচর্য লাভ সত্ত্বেও আমরা তাঁকে কখনও তা আদায় করতে দেখিনি। বরং তিনি তা থেকে নিষেধ করেছেন। অর্থাৎ আসরের পর দু’রাকাআত আদায় করতে।