হাদীস নং ১১৩৪
আবু নুআইম রহ……….মুআইকীব রা. থেকে বর্ণিত, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সে ব্যক্তি সম্পর্কে বলেছেন, যে সিজদার স্থান থেকে মাটি সমান করে। তিনি বলেন, যদি তোমার একান্তই করতে হয়, তাহলে একবার।
হাদীস নং ১১৩৫
মুসাদ্দাদ রহ………আনাস ইবনে মালিক রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, প্রচণ্ড গরমে আমরা নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর সঙ্গে সালাত আদায় করতাম। আমাদের কেউ মাটিতে তার চেহারা (কপাল) স্থির রাখতে সক্ষম না হলে সে তার কাপড় বিছিয়ে উহার উপর সিজদা করত।
হাদীস নং ১১৩৬
আবদুল্লাহ ইবনে মাসলামা রহ……..আয়িশা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর সালাত আদায়কালে আমি তাঁর কিবলার দিকে পা ছড়িয়ে রাখতাম, তিনি সিজদা করার সময় আমাকে খোঁচা দিলে আমি পা সরিয়ে নিতাম; তিনি দাঁড়িয়ে গেলে আবার পা ছড়িয়ে দিতাম।
হাদীস নং ১১৩৭
মাহমুদ রহ…………আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একবার সালাত আদায় করার পর বললেন : শয়তান আমার সামনে এসে আমার সালাত বিনষ্ট করার জন্য আমার উপর আক্রমণ করল। তখন আল্লাহ পাক আমাকে তার উপর ক্ষমতা দান করলেন, আমি তাকে ধাক্কা দিয়ে মাটিতে ফেলে গলা চেপে ধরলাম। আমার ইচ্ছা হয়েছিল, তাকে কোন স্তম্ভের সাথে বেঁধে রাখি। যাতে তোমরা সকাল বেলা উঠে তাকে দেখতে পাও। তখন সুলাইমান আ.-এর দু’আ আমার মনে পড়ে গেল “ইয়া রব ! আমাকে এমন এক রাজ্য দান করুন যার অধিকারী আমার পরে আর কেউ না হয়”। তখন আল্লাহ তাকে (শয়তানকে) অপমাণিত করে দূর করে দিলেন। নযর ইবনে শুমাইল রহ. বলেন, فذعته শব্দটি ذالসহ অর্থাৎ তাকে ধাক্কা দিয়ে মাটিতে ফেলে গলা চেপে ধরলাম এবং فدعته আল্লাহর কালাম يوم يدعون থেকে অর্থাৎ তাদেরকে ধাক্কা মেরে নিয়ে যাওয়া হবে এবং সঠিক হল فدعته তবে ع ও ت অক্ষর দুটি তাশদীদ সহ পাঠ করেছেন।
হাদীস নং ১১৩৮
আদম রহ………আযরাক ইবনে কায়স রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমরা আওয়াজ শহরে হারুরী (খারিজী) সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে যুদ্ধরত ছিলাম। যখন আমরা নহরের তীর ছিলাম তখন সেখানে এক ব্যক্তি এসে সালাত আদায় করতে লাগল আর তার বাহনের লাগাম তার হাতে রয়েছে। বাহনটি (ছুটে যাওয়ার জন্য) টানাটানি করতে লাগল, তিনিও তার অনুসরণ করতে লাগলেন। রাবী শুবা রহ. বলেন, তিনি ছিলেন (সাহাবী) আবুবারযাহ আসলামী রা. । এ অবস্থা দেখে এক খারিজী বলে উঠলো, ইয়া আল্লাহ! এ বৃদ্ধকে কিছু করুন। বৃদ্ধ সালাত শেষ করে বললেন, আমি তোমাদের কথা শুনেছি। আমি নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর সঙ্গে ছয়, সাত কিংবা আট যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছি এবং আমি তাঁর সহজীকরণ লক্ষ্য করেছি। আমার বাহনটির সাথে আগপিছ হওয়া বাহনটিকে তার চারণ ভূমিতে ছেড়ে দেওয়ার চাইতে আমার কাছে অধিক প্রিয়। কেননা, তাঁতে আমাকে কষ্টভোগ করতে হবে।
হাদীস নং ১১৩৯
মুহাম্মদ ইবনে মুকাতিল রহ……….আয়িশা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, একবার সূর্যগ্রহণ হল। নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (সালাতে) দাঁড়ালেন এবং দীর্ঘ সূরা পাঠ করলেন, এরপর রুকু করলেন, আর তা দীর্ঘ করলেন। তারপর রুকু সমাপ্ত করে সিজদা করলেন। দ্বিতীয় রাকাআতেও এরূপ করলেন। তারপর বললেন : এ দুটি (চন্দ্রগ্রহণ ও সূর্যগ্রহণ) আল্লাহর নিদর্শন সমূহের অন্যতম। তোমরা তা দেখলে গ্রহণ মুক্ত না হওয়া পর্যন্ত সালাত আদায় করবে। আমি আমার এ স্থানে দাঁড়িয়ে, আমাকে যা ওয়াদা করা হয়েছে তা সবই দেখতে পেয়েছি। এমন কি যখন তোমরা আমাকে সামনে এগিয়ে যেতে দেখেছিলে তখন আমি দেখলাম যে, জান্নাতের একটি (আঙ্গুর) গুচ্ছ নেওয়ার ইচ্ছা করছি। আর যখন তোমরা আমাকে পিছনে সরে আসতে দেখেছিলে আমি দেখলাম জাহান্নাম সেখানে আমর ইবনে লুহাইকে যে সারিবাহ প্রথা প্রবর্তন করেছিল।
হাদীস নং ১১৪০
সুলাইমান ইবনে হারব রহ……….ইবনে উমর রা. থেকে বর্ণিত, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মসজিদের কিবলার দিকে নাকের শ্লেষ্মা দেখতে পেয়ে মসজিদের লোকদের উপর রাগান্বিত হলেন এবং বললেন : আল্লাহ পাক তোমাদের প্রত্যেকের সামনে রয়েছেন, কাজেই তোমাদের কেউ সালাতে থাকাকালে থুথু ফেলবে না বা রাবী বলেছেন, নাক ঝাড়বে না। এ কথা বলার পর তিনি (মিম্বর থেকে) নেমে এসে নিজের হাতে তা ঘষে ঘষে পরিষ্কার করলেন। এবং ইবনে উমর রা. বলেন, তোমাদের কেউ যখন থুথু ফেলে তখন সে যেন তার বা দিকে ফেলে।
হাদীস নং ১১৪১
মুহাম্মদ রহ………আনাস ইবনে মালিক রা. থেকে বর্ণিত, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন : তোমাদের কেউ যখন সালাতে থাকে, তখন তো সে তার রবের সাথে নিবিড় আলাপে মশগুল থাকে। কাজেই সে যেন তার সামনে বা ডানে থুথু না ফেলে ; তবে (প্রয়োজনে) বাঁ দিকে বা পায়ের নীচে ফেলবে।
হাদীস নং ১১৪২
মুহাম্মদ ইবনে কাসীর রহ………..সাহল ইবনে সাদ রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেনে, সাহাবীগণ নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সংগে সালাত আদায় করতেন এবং তাঁরা তাদের লুঙ্গি ছোট হওয়ার কারণে ঘাড়ের সাথে বেঁধে রাখতেন। তাই মহিলাগণকে বলা হল, পুরুষগণ সোজা হয়ে না বসা পর্যন্ত তোমরা (সিজদা থেকে) মাথা তুলবে না।