হাদীস নং ১১২৫
ইবনে নুমাইর রহ……….আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমরা নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -কে তাঁর সালাতরত অবস্থায় সালাম করতাম, তিনি আমাদের সালামের জওয়াব দিতেন। পরে যখন আমরা নাজাশীর নিকট থেকে ফিরে এলাম, তখন তাকে (সালাতরত অবস্থায়) সালাম করলে তিনি আমাদের সালামের জওয়াব দিলেন না এবং পরে ইরশাদ করলেন : সালাতে অনেক ব্যস্ততা ও নিমগ্নতা রয়েছে।
হাদীস নং ১১২৬
ইবনে নুমাইর রহ………আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা. সূত্রে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করেছেন।
হাদীস নং ১১২৭
ইবরাহীম ইবনে মূসা রহ…………যায়েদ ইবনে আরকাম রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমরা নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর সময়ে সালাতের মধ্যে কথা বলতাম।আমাদের কেউ তার সংগীর সাথে নিজ দরকারী বিষয়ে কথা বলত। অবশেষে এ আদায় নাযিল হল- “তোমরা তোমাদের সালাতসমূহের সংরক্ষণ কর ও নিয়ামানুবর্তী রক্ষা কর; বিশেষত মধ্যবর্তী (আসর) সালাতে, আর তোমরা (সালাতে) আল্লাহর উদ্দেশ্যে একাগ্রচিত্ত হও”। (২ : ২৩৮) এরপর থেকে আমরা সালাতে নিরব থাকতে আদিষ্ট হলাম।
হাদীস নং ১১২৮
আবদুল্লাহ ইবনে মাসলামা রহ……….সাহল ইবনে সাদ রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বনু আমর ইবনে আওফ এর মধ্যে মীমাংসা করে দেওয়ার উদ্দেশ্যে বের হলেন, ইতিমধ্যে সালাতের সময় উপস্থিত হল। তখন বিলাল রা. আবু বকর রা. -এর কাছে এসে বললেন, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কর্মব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। আপনি লোকদের সালাতে ইমামতি করবেন ? তিনি বললেন, হ্যাঁ, যদি তোমরা চাও। তখন বিলাল রা. সালাতের ইকামত বললেন, আবু বকর রা. সামনে এগিয়ে গিয়ে সালাত শুরু করলেন। ইতিমধ্যে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাশরীফ আনলেন এবং কাতার ফাঁক করে সামনে এগিয়ে গিয়ে প্রথম কাতারে দাঁড়ালেন। মুসল্লীগণ ‘তাসফীহ’ করতে লাগলেন। সাহল রা. বললেন, তাসফীহ কি তা তোমরা জান ? তা হল ‘তাসফীক’ (তালি বাজান) আবু বকর রা. সালাত অবস্থায় এদিক সেদিক লক্ষ্য করতেন না। মুসল্লীগণ অধিক তালি বাজালে তিনি সে দিকে লক্ষ্য করামাত্র নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে কাতারে দেখতে পেলেন। তখন নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে ইশারা করলেন, যথাস্থানে থাক। আবু বকর রা. তখন দু’হাত তুলে আল্লাহ তা’আলার হামদ বর্ণনা করলেন এবং পিছু হেটে চলে এলেন। নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সামনে অগ্রসর হয়ে সালাত আদায় করলেন।
হাদীস নং ১১২৯
আমর ইবনে ঈসা রহ………আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমরা সালাতের (বৈঠকে) আত্তাহিয়্যাতু……..বলতাম, তখন আমাদের একে অপরকে সালামও করতাম। নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তা শুনে ইরশাদ করলেন : তোমার বলবে “যাবতীয় মৌখিক, দৈহিক ও আর্থিক ইবাদত আল্লাহরই জন্য। হে (মহান) নবী ! আপনার প্রতি সালাম এবং আল্লাহর রহমত ও বরকত (বর্ষিত) হোক। সালাম আমাদের প্রতি এবং আল্লাহর সালিহ বান্দাদের প্রতি ; আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, এক আল্লাহ ব্যতীত অন্য কোন ইলাহ নেই। এবং আমি আরও সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর বান্দা ও রাসূল”। কেননা, তোমরা এরূপ করলে আসমান ও যমীনে আল্লাহর সকল নেক বান্দাকে তোমরা যেন সালাম করলে।
হাদীস নং ১১৩০
আলী ইবনে আবদুল্লাহ রহ……….আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন : (ইমামের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য) পুরুষদের বেলায় তাসবীহ-সুবহানাল্লাহ বলা। তবে মহিলাদের বেলায় ‘তাসফীক’।
হাদীস নং ১১৩১
ইয়াহইয়া রহ……..সাহল ইবনে সাদ রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন : সালাতে (দৃষ্টি আকর্ষণের উদ্দেশ্যে) পুরুষদের বেলায় ‘তাসবীহ’ আর মহিলাদের বেলায় ‘তাসফীহ’।
হাদীস নং ১১৩২
বিশর ইবনে মুহাম্মদ রহ………আনাস ইবনে মালিক রা. থেকে বর্ণিত, মুসলিমগণ সোমবার (নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর ওফাতের দিন) ফজরের সালাতে ছিলেন, আবু বকর রা. তাদের নিয়ে সালাত আদায় করছিলেন। নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আয়িশা রা. -এর হুজরার পর্দা সরিয়ে তাদের দিকে তাকালেন। তখন তাঁর সারিবদ্ধ ছিলেন। তা দেখে তিনি মৃদু হাসলেন। তখন আবু বকর রা. তাঁর গোড়ালির উপর ভর দিয়ে পিছে সরে আসলেন। তিনি ধারণা করলেন যে, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সালাতের জন্য আসার ইচ্ছা করছেন। নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -কে দেখার আনন্দে মুসলিমগণের সালাত ভেঙ্গে যাওয়ার উপক্রম হয়েছিল। তখন তিনি সালাত সুসম্পন্ন করার জন তাদের দিকে হাতে ইশারা করলেন। এরপর তিনি হুজরায় প্রবেশ করেন এবং পর্দা ছেড়ে দেন আর সে দিনই তাঁর ওফাত হয়।
হাদীস নং ১১৩৩
লাইস রহ……..বলেন, জাফর রহ……….আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন : এক মহিলা তার ছেলেকে ডাকল। তখন তার ছেলে গীর্জায় ছিল। বলল, জুরাইজ ! ছেলে মনে মনে বলল, ইয়া আল্লাহ ! (এক দিকে) আমার মা (এর ডাক) আর (অপর দিকে) আমার সালাত ! মা আবার ডাকলেন, হে জুরাইজ ! ছেলে বলল, ইয়া আল্লাহ ! আমার মা ও আমার সালাত ! মা আবার ডাকলেন, হে জুরাইজ ! ছেলে বলল, ইয়া আল্লাহ ! আমার মা ও আমার সালাত । মা (বিরক্ত হয়ে) বললেন, ইয়া আল্লাহ ! পতিতাদের সামনে দেখা না যাওয়া পর্যন্ত যেন জুরাইজের মৃত্যু না হয়। এক রাখালিনী যে বকরী চরাতো, সে জুরাইজের গীর্জায় আসা যাওয়া করত। সে একটি সন্তান প্রসব করল। তাকে জিজ্ঞাসা করা হল-এ সন্তান কার ঔরষের ? সে জবাব দিল, জুরাইজের ঔরষের। জুরাইজ তাঁর গীর্জা থেকে নেমে এসে জিজ্ঞাসা করল, কোথায় সে মেয়েটি, যে বলে যে, তার সন্তানটি আমর ? (সন্তানসহ মেয়েটিকে উপস্থিত করা হলে, নিজে নিদোর্ষ প্রমাণের উদ্দেশ্যে শিশুটিকে লক্ষ্য করে) জুরাইজ বলেন, হে বাবুস ! তোমার পিতা কে ? সে বলল, বকরীর অমুক রাখাল।