হাদীস নং ১১১৬
হাফস ইবনে উমর রহ………কাযআ রহ. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি আবু সাঈদ খুদরী রা. কে চারটি (বিষয়) বলতে শুনেছি। তিনি বলেছেন, আমি নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে শুনেছি। আবু সাঈদ খুদরী রা. নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর সংগে বারটি যুদ্ধে শরীক হয়েছিলেন। অন্য সূত্রে আলী রহ. আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেছেন, মসজিদুল হারাম, মসজিদুর রাসূল এবং মসজিদুল আকসা (রায়তুল মুকাদ্দাস) তিনটি মসজিদ ব্যতীত অন্য কোন মসজিদে (সালাতের) উদ্দেশ্যে হাওদা বাঁধা যাবে না (অর্থাৎ সফর করবে না)।
হাদীস নং ১১১৭
আবদুল্লাহ ইবনে ইউসুফ রহ…………আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন : মাসজিদুল হারাম ব্যতীত আমার এ মসজিদে সালাত আদায় করা অপরাপর মসজিদে এক হাজার সালাতের চাইতে উত্তম।
হাদীস নং ১১১৮
ইয়াকুব ইবনে ইবরাহীম রহ………নাফি রহ. থেকে বর্ণিত যে, ইবনে উমর রা. দু’দিন ব্যতীত অন্য সময়ে চাশতের সালাত আদায় করতেন না, যে দিন তিনি মক্কায় আগমন করতেন, তাঁর অভ্যাস ছিল যে, তিনি চাশতের সময় মক্কায় আগমণ করতেন। তিনি বায়তুল্লাহ তাওয়াফ করার পর মাকামে ইবরাহীম-এর পিছনে দাঁড়িয়ে দু’রাকাআত সালাত আদায় করতেন। আর যে দিন তিনি কুবা মসজিদে গমন করতেন। তিনি প্রতি শনিবার সেখানে গমন করতেন এবং সেখানে সালাত আদায় না করে বেরিয়ে আসা অপছন্দ করতেন। নাফি রহ. বলেন, তিনি (ইবনে উমর রা. হাদীস বর্ণনা করতেন যে, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কুবা মসজিদ যিয়ারত করতেন – কখনো আরোহী হয়ে, কখনো পায়ে হেটে। নাফি রহ. বলেন, তিনি (ইবনে উমর রা. তাকে বলতেন, আমি আমার সাথীদের যেমন করতে দেখেছি তেমন করব। আর কাউকে আমি দিন রাতে কোন সময়ই সালাত আদায় করতে বাঁধা দেই না, তবে তাঁরা যেন সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তের সময় (সালাত আদায়ের) ইচ্ছা না করে।
হাদীস নং ১১১৯
মূসা ইবনে ইসমাঈল রহ……….ইবনে উমর রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রতি শনিবার কুবা মসজিদে আসতেন, কখনো পায়ে হেটে, কখনো আরোহণ করে। আবদুল্লাহ ইবনে উমর রা.-ও তা-ই করতেন।
হাদীস নং ১১২০
মুসাদ্দাদ রহ…………ইবনে উমর রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরোহণ করে কিংবা পায়ে হেটে কুবা মসজিদে আসতেন। ইবনে নুমাইর রহ. নাফি রহ. থেকে অতিরিক্ত বর্ণনা করেছেন যে, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সেখানে দু’রাকাআত সালাত আদায় করতেন।
হাদীস নং ১১২১
আবদুল্লাহ ইবনে ইউসুফ রহ………আবদুল্লাহ ইবনে যায়েদ মাযিনী রা. থেকে বর্ণিত, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন : আমার ঘর ও মিম্বর-এর মধ্যবর্তী স্থানটুকু জান্নাতের বাগান সমূহের একটি বাগান।
হাদীস নং ১১২২
মুসাদ্দাদ রহ……….আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন : আমার ঘর ও মিম্বরের মধ্যবর্তী স্থানে জান্নাতের বাগান সমূহের একটি বাগান আর আমার মিম্বর অবস্থিত (রয়েছে) আমার হাউজ (কাউসার)-এর উপরে।
হাদীস নং ১১২৩
আবুল ওয়ালীদ রহ………যিয়াদের আযাদকৃত দাস কাযাআ রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি আবু সাঈদ খুদরী রা. -কে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে চারটি বিষয় বর্ণনা করতে শুনেছি, যা আমাকে আনন্দিত ও মুগ্ধ করেছে। তিনি বলেছেন ; মহিলারা স্বামী কিংবা মাহরাম ব্যতীত দু’দিনের দূরত্বের পথে সফর করবে না। ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযহার দিনগুলোতে সিয়াম পালন নেই। দু’ (ফরয) সালাতের পর কোন (নফল ও সুন্নাত) সালাত নেই। ফজরের পর সূর্যোদয় (সম্পন্ন) হওয়া পর্যন্ত এবং আসরের পর সূর্য অস্তমিত হয়ে যাওয়া পর্যন্ত। এবং ১. মাসজিদুল হারাম, (কাবা শরীফ ও সংলগ্ন মসজিদ) ২. মাসজিদুল আকসা (বায়তুল মুকাদ্দাসের মসজিদ) এবং ৩. আমার মসজিদ (মদীনার মসজিদে নববী) ব্যতীত অন্য কোন মসজিদে (সালাত আদায়ের উদ্দেশ্যে) হাওদা বাঁধা যাবে না। (সফর করা যাবে না।
হাদীস নং ১১২৪
আবদুল্লাহ ইবনে ইউসুফ রহ………ইবনে আব্বাস রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, তিনি তাঁর খালা উম্মুল মু’মিনীন মায়মূনা রা.-এর ঘরে রাত কাটালেন। তিনি বলেন, আমি বালিশের প্রস্থের দিকে শুয়ে পড়লাম, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এবং তাঁর সহধর্মিনী বালিশের দৈর্ঘ্যে শয়ন করলেন। এরপর নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মধ্যরাত তার কিছু আগ বা পর পর্যন্ত ঘুমিয়ে থাকলেন। তারপর নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জেগে উঠে বসলেন এবং দু’হাতে মুখমণ্ডল মুছে ঘুমের আমেজ দূর করলেন। এরপর তিনি সূরা আল-ইমরানের শেষ দশ আয়াত তিলাওয়াত করলেন। পরে একটি ঝুলন্ত মশকের দিকে এগিয়ে গেলেন এবং এর পানি দ্বারা উত্তমরূপে উযূ করে সালাতে দাঁড়িয়ে গেলেন। আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা. বলেন, আমিও উঠে পড়লাম এবং তিনি যেরূপ করেছিলেন, আমিও সেরূপ করলাম। এরপর আমি গিয়ে তাঁর পাশে দাঁড়ালাম। তখন নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর ডান হাত আমার মাথার উপরে রেখে আমার ডান কানে মোচড়াতে লাগলেন (এবং আমাকে তাঁর পিছন থেকে ঘুরিয়ে এনে তাঁর ডানপাশে দাঁড় করিয়ে দিলেন) তিনি তখন দু’রাকআত সালাত আদায় করলেন, তারপর দু’রাকআত, তারপর দু’রাকাআত, তারপর দু’রাকাআত তারপর দু’রাকাআত, তারপর (শেষ দু’রাকাআতের সাথে আর এক রাকাআত দ্বারা বেজোড় করে) বিতর আদায় করে শুয়ে পড়লেন। অবশেষে (ফজরের জামাআতের জন্য) মুআযিযন এলেন। তিনি দাঁড়িয়ে সংক্ষিপ্ত (কিরাআতে) দু’রাকাআত (ফজরের জামাআতের জন্য) আদায় করলেন। এরপর (মসজিদের দিকে) বেরিয়ে যান এবং ফজরের সালাত আদায় করলেন।