হাদিস ৫৪১
মুহাম্মদ ইব্ন সালাম (র.)……আবূ বারযা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্(সা.) ইশার পূর্বে নিদ্রা যাওয়া এবং পরে কথাবার্তা বলা অপসন্দ করতেন।
হাদিস ৫৪২
আয়্যূব ইব্ন সুলাইমান (র.)……আয়িশা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, একদা রাসূলুল্লাহ্(সা.) ইশার সালাত আদায় করতে দেরী করলেন। উমর (রা.) তাঁকে বললেন, আস্সালাত। নারী ও শিশুরা ঘুমিয়ে পড়েছে। তারপর তিনি বেরিয়ে আসলেন এবং বললেনঃ তোমরা ব্যতীত পৃথিবীর আর কেউ এ সালাতের জন্য অপেক্ষা করছে না। (রাবী বলেন) তখন মদীনা ব্যতীত অন্য কোথাও সালাত আদায় করা হত না। (তিনি আরও বলেন যে) পশ্চিম আকাশের ‘শাফাক’ অন্তর্হিত হওয়ার পর থেকে রাতের প্রথম এক-তৃতীয়াংশের মধ্যে তাঁরা ইশার সালাত আদায় করতেন।
হাদিস ৫৪৩
মাহমূদ (র.)……আব্দুল্লাহ্ইব্ন উমর (রা.) থেকে বর্ণিত যে, এক রাতে কর্মব্যস্ততার কারণে রাসূলুল্লাহ্(সা.) ইশার সালাত আদায়ে দেরী করলেন, এমন কি আমরা মসজিদে ঘুমিয়ে পড়লাম। তারপর জেগে উঠে আবার ঘুমিয়ে পড়লাম। এরপর আবার জেগে উঠলাম। তখন রাসূলুল্লাহ্(সা.) আমাদের কাছে এলেন, তারপর বললেনঃ তোমরা ব্যতীত পৃথিবীর আর কেউ এ সালাতের জন্য অপেক্ষা করছে না। ঘুম প্রবল হওয়ার কারণে এশার সালাত বিনষ্ট হওয়ার আশংকা না থাকলে ইব্ন উমর (রা.) তা আগেভাগে বা বিলম্ব করে আদায় করতে দ্বিধা করতেন না। কখনও কখনও তিনি ইশার আগে নিদ্রাও যেতেন। ইব্ন জুরাইজ (র.) বলেন, এ বিষয়ে আমি আতা (র.)-কে জিজ্ঞাসা করলাম। তিনি বললেন, আমি ইব্ন আব্বাস (রা.)-কে বলতে শুনেছি যে, এক রাতে রাসূলুল্লাহ্(সা.) ইশার সালাত আদায় করতে দেরী করেছিলেন, এমন কি লোকজন একবার ঘুমিয়ে জেগে উঠল, আবার ঘুমিয়ে পড়ে জাগ্রত হল। তখন উমর ইব্ন খাত্তাব (রা.) উঠে গিয়ে রাসূলুল্লাহ্(সা.)-কে বললেন, ‘আস-সালাত’। আতা(র.) বলেন যে, ইব্ন আব্বাস (রা.) বর্ণনা করেছেন, তারপর আল্লাহর নবী (সা.) বেরিয়ে এলেন-যেন এখনো আমি তাঁকে দেখছি- তাঁর মাথা থেকে পানি টপ্কে পড়ছিল এবং তাঁর হাত মাথার উপর ছিল। তিনি এসে বললেনঃ যদি আমার উম্মাতের জন্য কষ্টকর হবে বলে মনে না করতাম, তাহলে তাদেরকে এভাবে (বিলম্ব করে) ইশার সালাত আদায় করার নির্দেশ দিতাম। ইব্ন জুরাইজ (র.) বলেন, ইব্ন আব্বাস (রা.) – এর বর্ণনা অনুযায়ী রাসূলুল্লাহ্(সা.) যে মাথায় হাত রেখেছিলেন তা কিভাবে রেখেছিলেন, বিষয়টি সুস্পষ্ট করে ব্যাখ্যা করার জন্য আতা (র.)-কে বললাম। আতা (র.) তাঁর আঙ্গুলগুলো সামান্য ফাঁকা করলেন, তারপর সেগুলোর অগ্রভাগ সম্মুখ দিক থেকে (চুলের অভ্যন্তরে) প্রবেশ করালেন। তারপর আঙ্গুলীগুলো একএিত করে মাথার উপর দিয়ে এভাবে টেনে নিলেন যে, তার বৃদ্ধাঙ্গুলী কানের সে পার্শবকে স্পর্শ করে গেল যা মুখমন্ডল সংলগ্ন চোয়ালের হাড্ডির উপর শ্মশ্রুর পাশে অবস্থিত। তিনি নবী (সা.) চুলের পানি ঝরাতে কিংবা চুল চাপড়াতে এরূপই করতেন। এবং তিনি বলেছিলেনঃ যদি আমার উম্মাতের জন্য কষ্টকর হবে বলে মনে না করতাম, তাহলে তাদেরকে এভাবেই (বিলম্ব করে) সালাত আদায় করার নির্দেশ দিতাম।
হাদিস ৫৪৪
আবদুর রহীম মুহারিবী (র.)…….আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, একরাতে নবী (সা.) ইশার সালাত অর্ধেক রাত পর্যন্ত বিলম্ব করলেন। তারপর সালাত আদায় করে তিনি বললেন। লোকেরা সালাত আদায় করে ঘুমিয়ে পড়েছে। শোন! তোমরা যতক্ষণ সালাতের অপেক্ষায় ছিলে ততক্ষণ তোমরা সালাতেই ছিলে। ইব্ন আবূ মারইয়াম (র.)-এর বর্ণনায় আরও আছে, তিনি বলেন, ইয়াহ্ইয়া ইব্ন আইউব (র.) হুমাইদ (র.) থেকে বর্ণনা করেছেন যে, তিনি (হুমাইদ) আনাস (রা.)-কে বলতে শুনেছেন, সে রাতে রাসূলুল্লাহ্(সা.)-এর আংটির উজ্জবলতা আমি যেন এখনও দেখতে পাচ্ছি।
হাদিস ৫৪৫
মুসাদ্দাদ (র.)……জারীর ইব্ন আব্দুল্লাহ্(রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, এক রাতে নবী (সা.) – এর নিকট ছিলাম। হঠাৎ তিনি পূর্ণিমা রাতের চাঁদের দিকে তাকিয়ে বললেন, শোন! এটি যেমন দেখতে পাছ – তোমাদের প্রতিপালককেও তোমরা তেমনি দেখতে পাবে। তাঁকে দেখতে তোমরা ভিড়ের সম্মুখীন হবে না। কাজেই তোমারা যদি সূর্য উঠার আগের সালাত ও সূর্য ডুবার আগের সালাত আদায়ে সমর্থ হও, তাহলে তাই কর। তারপর তিনি এ আয়াত তিলাওয়াত করলেনঃ “সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তের পূর্বে আপনি আপনার প্রতিপালকের প্রশংসার তাসবীহ্পাঠ করুন।” আবূ আব্দুল্লাহ্(ইমাম বুখারী (র.) বলেন, ইব্ন শিহাব (র.)……জারীর (রা.) থেকে আরো বলেন, নবী (সা.) বলেছেনঃ তোমরা তোমাদের প্রতিপালককে খালি চোখে দেখতে পাবে।
হাদিস ৫৪৬
হুদবা ইব্ন খালিদ (র.)……আবূ বক্র ইব্ন আবূ মূসা (রা.) থেকে তাঁর পিতার সূএে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্(সা.) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি দুই শীতের (ফজর ও আসরের) সালাত আদায় করবে, সে জান্নাতে দাখিল হবে। ইব্ন রাজা (র.) বলেন, হাম্মাম (র.) আবূ জামরা (র.) থেকে বর্ণনা করেন যে, আবূ বক্র ইব্ন আব্দুল্লাহ ইব্ন কায়স (র.) তাঁর নিকট এ হাদীস বর্ণনা করেছেন।
হাদিস ৫৪৭
ইস্হাক (র.)…আবদুল্লাহ্ (রা.) সূত্রে নবী (সাঃ) থেকে অনুরূপ বর্ণনা করেছেন।