হাদীস নং ৮৯১
সাঈদ ইবনে আবু মারয়াম রহ………..সাহল রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমাদের মধ্যে বসবাসকারীনী জনৈক মহিলা একটি ছোট নহরের পাশে ক্ষেতে বীটের চাষ করতেন। জুমুআর দিনে সে বীটের মূল তুলে এনে রান্নার জন্য ডেগে চড়াতেন এবং এর উপর এক মুঠো যবের আটা দিয়ে রান্না করতেন। তখন এ বীট মুলই এর গোশত (গোশতের বিকল্প) হয়ে যেত। আমরা জুমুআর সালাত থেকে ফিরে এসে তাঁকে সালাম দিতাম। তিনি তখন খাদ্য আমাদের সামনে পেশ করতেন এবং আমরা তা খেতাম। আমরা সে খাদ্যের আশায় জুমুআ বারে উদগ্রীব থাকতাম।
হাদীস নং ৮৯২
আবদুল্লাহ ইবনে মাসলামা রহ………সাহল ইবনে সাদ রা থেকে এ হাদীস বর্ণিত, তিনি আরো বলেছেন, জুমুআর (সালাতের পরই আমরা কায়লূলা (দুপুরের শয়ন ও হালকা নিদ্রা) এবং দুপুরের আহার্য গ্রহণ করতাম।
হাদীস নং ৮৯৩
মুহাম্মদ ইবনে উকবা শায়বানী রহ………হুমাইদ রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আনাস রা. বলেছেন : আমরা জুমুআর দিন সকালে যেতাম তারপর (সালাত শেষে) কায়লূলা করতাম।
হাদীস নং ৮৯৪
সাঈদ ইবনে আবু মারইয়াম রহ………সাহল রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমরা নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সঙ্গে জুমুআর সালাত আদায় করতাম। তারপর হতো কায়লূলা।
হাদীস নং ৮৯৫
আবু ইয়ামান রহ………শুআইব রহ. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি যুহরী রহ.-কে জিজ্ঞাসা করলাম, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কি সালাত আদায় করতেন অর্থাৎ খাওফের সালাত ? তিনি বললেন, আমাকে সালিম রহ. জানিয়েছেন যে, আবদুল্লাহ ইবনে উমর রা. বলেছেন, আমি নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সঙ্গে নাজদ এলাকায় যুদ্ধ করেছিলাম। সেখানে আমরা শত্রুর মুখোমুখি কাতারবন্দী হয়ে দাঁড়ালাম। তারপর নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের নিয়ে সালাত আদায় করলেন। একদল তাঁর সঙ্গে সালাতে দাঁড়ালেন এবং অন্য একটি দল শত্রুর মুখোমুখি অবস্থান করলেন। নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর সঙ্গে যাঁরা চিলেন তাদের নিয়ে রুকু ও দুটি সিজদা করলেন। এরপর এ দলটি যারা সালাত আদায় করেনি, তাদের স্থানে চলে গেলেন এবং তাঁরা নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর পিছনে এগিয়ে এলেন, তখন নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের সঙ্গে এক রুকু ও দুটি সিজদা করলেন এবং পরে সালাম ফিরালেন। এরপর তাদের প্রত্যেকে উঠে দাঁড়ালেন এবং নিজে নিজে একটি রুকু ও দুটি সিজদা (সহ সালাতে) শেষ করলেন।
হাদীস নং ৮৯৬
সাঈদ ইবনে ইয়াহইয়া রহ………নাফি রহ. সূত্রে ইবনে উমর রা. থেকে মুজাহিদ রহ.-এর বর্ণনার মতো উল্লেখ করেছেন যে, সৈন্যরা যখন পরস্পর (শত্রুমিত্র) মিলিত হয়ে যায়, তখন দাঁড়িয়ে সালাত আদায় করবে। ইবনে উমর রা. নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে আরো বলেছেন যে, যদি সৈন্যদের অবস্থা এর চেয়ে গুরুতর হয়ে যায়, তাহলে দাঁড়ানো অবস্থায় এবং আরোহী অবস্থায় সালাত আদায় করবে।
হাদীস নং ৮৯৭
হাইওয়া ইবনে শুরাইহ রহ………..ইবনে আব্বাস রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সালাতে দাঁড়ানোর এবং সাহাবীগণ তাঁর পিছনে (ইক্তিদা করে) দাঁড়ালেন। তিনি তাকবীর বললেন, তারাও তাকবীর বললেন, তিনি রুকু করলেন, তারাও তাঁর সঙ্গে রুকু করলেন। এরপর তিনি সিজদা করলেন এবং তারাও তাঁর সঙ্গে সিজদা করলেন। তারপর তিনি দ্বিতীয় রাকাআতের জন্য দাঁড়ালেন, তখন যারা তাঁর সঙ্গে সিজদা করছিলেন তারা উঠে দাঁড়ালেন এবং তাদের ভাইদের পাহারা দিতে লাগলেন। তখন অপর দলটি এসে তাঁর সঙ্গে রুকু করলেন। এভাবে সকলেই সালাত অংশগ্রহণ করলেন। অথচ একদল অপর দলকে পাহারাও দিলেন।
হাদীস নং ৮৯৮
ইয়াহইয়া (ইবনে জাফর) রহ………..জাবির ইবনে আবদুল্লাহ রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, খন্দক যুদ্ধের দিন উমর রা কুরাইশ গোত্রের কাফিরদের মন্দ বলতে বলতে আসলেন এবং বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ ! সূর্য প্রায় ডুবে যাচ্ছে, অথচ আসরের সালাত আদায় করতে পারিনি। তখন নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন : আল্লাহর শপথ ! আমিও তা এখনও আদায় করতে পারিনি। বর্ণনাকারী বলেন, তারপর তিনি মদীনার বুতহান উপত্যকায় নেমে উযূ করলেন এবং সূর্য ডুবে যাওয়ার পর আসরের সালাত আদায় করলেন, এরপর মাগরিবের সালাত আদায় করলেন।
হাদীস নং ৮৯৯
আবদুল্লাহ ইবনে মুহাম্মদ রহ……..ইবনে উমর রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আহযাব যুদ্ধ থেকে ফিরে আসার পথে আমাদেরকে বললেন, বনু কুরাইযা এলাকায় পৌছার আগে কেউ যেন আসরের সালাত আদায় না করে। কিন্তু অনেকের পথিমধ্যেই আসরের সময় হয়ে গেল, তখন তাদের কেউ কেউ বললেন, আমরা সেখানে না পৌছে সালাত আদায় করব না। আবার কেউ কেউ বললেন, আমরা সালাত আদায় করে নেব, আমাদের নিষেধ করার ও উদ্দেশ্য ছিল না (বরং উদ্দেশ্য ছিল তাড়াতাড়ি যাওয়া) নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট এ কথা উল্লেখ করা হলে, তিনি তাদের কারোর সম্পর্কে বিরূপ মন্তব্য করেননি।
হাদীস নং ৯০০
মুসাদ্দাদ রহ……….আনাস ইবনে মালিক রা. থেকে বর্ণিত, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (একদিন) ফজরের সালাত অন্ধকার থাকতে আদায় করলেন। এরপর সাওয়ারীতে আরোহণ করলেন এবং বললেন : আল্লাহ আকবার, খায়বার ধ্বংস হোক ! যখন আমরা কোন সম্প্রদায়ের এলাকায় অবতরণ করি তখন সতর্কীকৃতদের প্রভাত হয় কতই না মন্দ। তখন তারা (ইয়াহুদীরা) বের হয়ে গলির মধ্যে দৌড়াতে লাগল এবং বলতে লাগল, মুহাম্মদ ও তাঁর খামীস এসে গেছে। বর্ণনাকারী বলেন, খামীস হচ্ছে, সৈন্য-সামন্ত। পরে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের উপর জয়লাভ করেন। তিনি যোদ্ধাদের হত্যা করলেন এবং নারী-শিশুদের বন্দী করলেন। তখন সাফিয়্যা প্রথমত দিহইয়া কালবীর এবং পরে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর অংশে পড়ল। তারপর তিনি তাকে বিয়ে করেন এবং তাঁর মুক্তি দানকে মহর রূপে গণ্য করেন। আবদুল আযীয রহ. সাবিত রা.-এর কাছে জানতে চাইলেন, তাকে কি মহর দেওয়া হয়েছিল ? তা কি আপনি নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে জিজ্ঞাসা করেছিলেন ? তিনি বললেন, তাঁর মুক্তিই তাঁর মহর, আর মুচকি হাসলেন।
দু’ঈদ অধ্যায় (৯০১-৯৩৬)
হাদীস নং ৯০১