হাদীস নং ৮৮২
আদম রহ…………আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন : জুমুআর দিন মসজিদের দরোয়াজায় ফেরেশতাগণ অবস্থান করেন এবং ক্রমানুসারে আগে আগমনকারীদের নাম লিখতে থাকেন। যে সবার আগে আসে সে ঐ ব্যক্তির ন্যায় যে একটি মোটাতাজা উট কুরবানী করে। এরপর যে আসে সে ঐ ব্যক্তির ন্যায় যে একটি গাভী কুরবানী করে। তারপর আগমনকারী ব্যক্তি মুরগী দানকারীর ন্যায়। এরপর আগমনকারী ব্যক্তি একটি ডিম দানকারীর ন্যায়। তারপর ইমাম যখন বের হন তখন ফেরেশতাগণ তাদের দফতর বন্ধ করে দেন এবং মনোযোগ সহ খুতবা শোনাতে থাকেন।
হাদীস নং ৮৮৩
আবু নুমান রহ………জাবির ইবনে আবদুল্লাহ রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, (কোন এক) জুমুআর দিন নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম লোকদের সামনে খুতবা দিচ্ছিলেন। এমনি সময় এক ব্যক্তি আগমন করল। তিনি তাকে জিজ্ঞাসা করলেন, হে অমুক ! তুমি কি সালাত আদায় করেছ ? সে বলল, না, তিনি বললেন, উঠ, সালাত আদায় করে নাও।
হাদীস নং ৮৮৪
আলী ইবনে আবদুল্লাহ রহ………জাবির ইবনে আবদুল্লাহ রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, এক জুমুআর দিন নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম খুতবা দেওয়ার সময় এক ব্যক্তি প্রবেশ করল। তিনি তাকে জিজ্ঞাসা করলেন, সালাত আদায় করেছ ? সে বলল, না, তিনি বললেন : উঠ, দু’রাকাআত সালাত আদায় করে নাও।
হাদীস নং ৮৮৫
মুসাদ্দাদ রহ……….আনাস রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, এক জুমুআর দিন নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম খুতবা দিচ্ছিলেন। তখন এক ব্যক্তি দাঁড়িয়ে বলল, ইয়া রাসূলুল্লাহ ! (পানির অভাবে) ঘোড়া মরে যাচ্ছে, ছাগল বকরীও মরে যাচ্ছে। কাজেই আপনি দু’আ করুন, যেন আল্লাহ আমাদেরকে বৃষ্টি দান করেন। তখন তিনি দু’হাত প্রসারিত করলেন এবং দু’আ করলেন।
হাদীস নং ৮৮৬
ইবরাহীম ইবনে মুনযির রহ……..আনাস ইবনে মালিক রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর যুগে একবার দুর্ভিক্ষ দেখা দেয়। সে সময় এক জুমুআর দিন নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম খুতবা দিচ্ছিলেন। তখন এক বেদুইন উঠে দাঁড়াল এবং আরয করল, ইয়া রাসূলাল্লাহ ! (বৃষ্টির অভাবে) সম্পদ ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। পরিবার পরিজনও অনাহারে রয়েছে। তাই আপনি আল্লাহর নিকট আমাদের জন্য দু’আ করুন। তিনি দু’হাত তুললেন। সে সময় আমরা আকাশে এক খণ্ড মেঘও দেখিনি। যার হাতে আমার প্রাণ, তাঁর শপথ (করে বলছি)! (দু’আ শেষে) তিনি দু’হাত (এখনও) নামান নি, এমন সময় পাহাড়ের ন্যায় মেঘের বিরাট বিরাট খন্ড উঠে আসল। তারপর তিনি মিম্বর থেকে অবতরণ করেন নাই, এমন সময় দেখতে পেলাম তাঁর (পবিত্র) দাঁড়ির উপর ফোটা ফোটা বৃষ্টি পড়ছে। সে দিন আমাদের এখানে বৃষ্টি হল। এর পরে ক্রমাগত দু’দিন এবং পরবর্তী জুমুআ পর্যন্ত প্রত্যেক দিন। (পরবর্তী জুমুআর দিন) সে বেদুইন অথবা অন্য কেউ উঠে দাঁড়াল এবং আরয করল, ইয়া রাসূলাল্লাহ ! (বৃষ্টির কারণে) এখন আমাদের বাড়ী ঘর ধ্বসে পড়ছে, সম্পদ ডুবে যাচ্ছে। তাই আপনি আমাদের জন্য আল্লাহর নিকট দু’আ করুন। তখন তিনি দু’হাত তুললেন এবং বললেন : হে আল্লাহ আমাদের পার্শ্ববর্তী এলাকায় (বৃষ্টি দাও) আমাদের উপর নয়। (দু’আর সময়) তিনি মেঘের এক পরিবেষ্টিত অবস্থায় ঢালের ন্যায় মদীনার আকাশ মেঘমুক্ত হয়ে গেল এবং কানাত উপত্যকার পানি এক মাস ধরে প্রবাহিত হতে লাগল, তখন (মদীনার) চতুর পাশে যে কোন অঞ্চল হতে যে কেউ এসেছে, সে এ মুষলধারে বৃষ্টির কথা আলোচনা করেছে।
হাদীস নং ৮৮৭
ইয়াহইয়া ইবনে বুকাইর রহ……..আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন : জুমুআর দিন যখন তোমার পাশের মুসল্লীকে বলবে চুপ থাক, অথচ ইমাম খুতবা দিচ্ছেন, তা হলে তুমি একটি অনর্থক কথা বললে।
হাদীস নং ৮৮৮
আবদুল্লাহ ইবনে মাসলামা রহ……….আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জুমুআর দিন সম্পর্কে আলোচনা করেন এবং বলেন, এ দিনে এমন একটি মুহূর্ত রয়েছে, যে কোন মুসলিম বান্দা যদি এ সময় সালাতে দাঁড়িয়ে আল্লাহর নিকট কিছু চায়, তাহলে তিনি তাকে অবশ্যই তা দান করে থাকেন এবং তিনি হাত দিয়ে ইশারা করে বুঝিয়ে দিলেন যে, সে মুহূর্তটি খুবই সংক্ষিপ্ত।
হাদীস নং ৮৮৯
মুআবিয়া ইবনে আমর রহ……….জাবির ইবনে আবদুল্লাহ রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সঙ্গে (জুমুআর) সালাত আদায় করছিলাম। এমন সময় খাদ্য দ্রব বহনকারী একটি উটের কাফেলা হাজির হল এবং তার (মুসল্লীগণ) সে দিকে এত বেশী মনোযোগী হলেন যে, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সঙ্গে মাত্র বারোজন মুসল্লী অবশিষ্ট ছিলেন। তখন এ আয়াত অবতীর্ণ হল : وإذا رأوا تجارة أو لهوا انفضوا إليها وتركوك قائما “এবং যখন তারা ব্যবসা বা খেল তামাশা দেখতে পেল। তখন সে দিকে দ্রুত চলে গেল এবং আপনাকে দাঁড়ানো অবস্থায় রেখে গেল”। (সূরা জুমুআ)
হাদীস নং ৮৯০
আবদুল্লাহ ইবনে ইউসুফ রহ………..আবদুল্লাহ ইবনে উমর রা. থেকে বর্ণিত, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যুহরের পূর্বে দু’রাকাআত ও পরে দু’রাকাআত, মাগরিবের পর নিজের ঘরে দু’রাকআত এবং ইশার পর দু’রাকাআত সালাত আদায় করতেন। আর জুমুআর দিন নিজের ঘরে ফিরে না যাওয়া পর্যন্ত সালাত আদায় করতেন না। (ঘরে গিয়ে) দু’রাকাআত সালাত আদায় করতেন।