হাদীস নং ৮৬২
আদাম ও আবুল ইয়ামান রহ……..আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছি, যখন সালাত শুরু হয়, তখন দৌড়িয়ে গিয়ে সালাতে যোগদান করবে না, বরং হেটে গিয়ে সালাতে যোগদান করবে। সালাতে ধীর-স্থিরভাবে যাওয়া তোমাদের জন্য অপরিহার্য। কাজেই জামাআতের সাথে সালাত যতটুকু পাও আদায় কর, আর যা ফাওত হয়ে গেছে পরে তা পুরো করে নাও।
হাদীস নং ৮৬৩
আমর ইবনে আলী রহ……..আবু কাতাদা রা. সূত্রে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন : তোমরা আমাকে না দেখা পর্যন্ত সালাতে দাঁড়াবে না। তোমাদের জন্য ধীর-স্থির থাকা অপরিহার্য।
হাদীস নং ৮৬৪
আবদান ইবনে আবদুল্লাহ রহ………সালমান ফারিসী রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন : যে ব্যক্তি জুমুআর দিন গোসল করে এবং যথাসম্ভব উত্তমরূপে পবিত্রতা অর্জন করে, এরপর তৈল মেখে নেয় অথবা সুগন্ধি ব্যবহার করে, তারপর (মসজিদে) যায়, আর দুজনের মধ্যে ফাক করে না এবং তার ভাগ্যে নির্ধারিত পরিমাণ সালাত আদায় করে। আর ইমাম যখন (খুতবার জন্য) বের হন তখন চুপ থাকে। তার এ জুমুআ এবং পরবর্তী জুমুআর মধ্যবর্তী যাবতীয় গুনাহ মাফ করে দেওয়া হয়।
জুমুআর দিন সালাতে দু’জনের মধ্যে ফাক না করা।
৮৬৪ আবদান ইবনে আবদুল্লাহ রহ………সালমান ফারিসী রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন : যে ব্যক্তি জুমুআর দিন গোসল করে এবং যথাসম্ভব উত্তমরূপে পরিত্রতা অর্জন করে, এরপর তৈল মেখে নেয় অথবা সুগন্ধি ব্যবহার করে, তারপর (মসজিদে) যায়, আর দু’জনের মধ্যে ফাক করে না এবং তার ভাগ্যে নির্ধারিত পরিমাণ সালাত আদায় করে। আর ইমাম যখন (খুতবার জন্য) বের হন তখন চুপ থাকে। তার এ জুমুআ এবং পরবর্তী জুমুআর মধ্যবর্তী যাবতীয় গুনাহ মাফ করে দেওয়া হয়।
হাদীস নং ৮৬৫
মুহাম্মদ ইবনে সাল্লাম রহ………ইবনে উমর রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিষেধ করেছেন, যেন কেউ তার ভাইকে তার বসার জায়গা থেকে দিয়ে নিজে সে জায়গায় না বসে। ইবনে জুরাইজ রহ. বলেন, আমি নাফি রহ. কে জিজ্ঞাসা করলাম, এ কি শুধু জুমুআর ব্যাপারে ? তিনি বললেন, জুমুআ ও অন্যান্য (সালাতের) ব্যাপারেও (এ নির্দেশ প্রযোজ্য)।
হাদীস নং ৮৬৬
আদম রহ………সায়িব ইবনে ইয়াযীদ রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আবু বকর রা. এবং উমর রা.-এর সময় জুমুআর দিন ইমাম যখন মিম্বরের উপর বসতেন, তখন প্রথম আযান দেওয়া হত। পরে যখন উসমান রা. খলিফা হলেন এবং লোকসংখ্যা বৃদ্ধি পেল, তখন তিনি যাওয়া থেকে তৃতীয় আযান বৃদ্ধি করেন। আবু আবদুল্লাহ (ইমাম বুখারী রহ. বলেন, ‘যাওরা’ হল মদীনার অদূরে বাজারে একটি স্থান।
হাদীস নং ৮৬৭
আবু নুআইম রহ……..সায়িব ইবনে ইয়াযীদ রা. থেকে বর্ণিত, মদীনার অধিবাসীদের সংখ্যা যখন বৃদ্ধি পেল, তখন জুমুআর দিন তৃতীয় আযান যিনি বৃদ্ধি করলেন, তিনি হলেন, উসমান ইবনে আফফান রা. নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সময় (জুমুআর জন্য) একজন ব্যতীত মুআযযিন ছিল না এবং জুমুআর দিন আযান দেওয়া হত যখন ইমাম বসতেন অর্থাৎ মিম্বারের উপর খুতবার পূর্বে।
হাদীস নং ৮৬৮
ইবনে মুকাতিল রহ…………মুআবিয়া ইবনে আবু সুফিয়ান রা. থেকে বর্ণিত, তিনি মিম্বরে বসা অবস্থায় মুয়াযযিন আযান দিলেন। মুয়াযযিন বললেন, “আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার” মুআবিয়া রা. বললেন, “আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার”। মুয়াযযিন বললেন, “আশহাদু আল-লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু” তিনি বললেন, এবং আমিও (বলছি “আশহাদু আল্লাহ আল-লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু)। মুয়াযযিন বললেন, “আশহাদু আল-লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু” তিনি বললেন, এবং আমিও (বলছি……..। যখন (মুয়াযযিন) আযান শেষ করলেন, তখন মুআবিয়া রা. বললেন, হে লোক সকল ! তোমরা আমার থেকে যে বাক্যগুলো শুনেছ, তা নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে মুয়াযযিনের আযানের সময় এ মজলিসে বাক্যগুলো বলতে আমি শুনেছি।
হাদীস নং ৮৬৯
ইয়াহইয়া ইবনে বুকাইর রহ………সায়িব ইবনে ইয়াযীদ রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, মসজিদে মুসল্লীদের সংখ্যা বৃদ্ধি পেলে, ইসমান রা. জুমুআর দিন দ্বিতীয় আযানের নির্দেশ দেন।
হাদীস নং ৮৭০
মুহাম্মদ ইবনে মুকাতিল রহ……….সায়িব ইবনে ইয়াযীদ রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আবু বকর এবং উমর রা-এর যুগে জুমুআর দিন ইমাম যখন মিম্বারের উপর বসতেন, তখন প্রথম আযান দেওয়া হত। এরপর যখন উসমান রা. -এর খিলাফতের সময় এ এবং লোক সংখ্যা বৃদ্ধি পেল, তখন উসমান রা. জুমুআর দিন তৃতীয় আযানের নির্দেশ দেন। ‘যাওয়া’ নামক স্থান থেকে এ আযান দেওয়া হয়, পরে এ আযান অব্যাহত থাকে।
হাদীস নং ৮৭১
কুতাইবা ইবনে সাঈদ রহ………আবু হাযিম ইবনে দীনার রা. থেকে বর্ণিত যে, (একদিন) কিছু লোক সাহল ইবনে সাদ সাঈদীর নিকট আগমন করে এবং মিম্বারটি কোন কাঠের তৈরী ছিল, এ নিয়ে তাদের মনে প্রশ্ন জেগে ছিল। তারা এ সম্পর্কে তাঁর নিকট জিজ্ঞাসা করল। এতে তিনি বললেন, আল্লাহর শপথ ! আমি সম্যকরূপে অবগত আছি যে, তা কিসের ছিল। প্রথম যে দিন তা স্থাপন করা হয় এবং প্রথম যে দিন এর উপর নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বসেন তা আমি দেখেছি। নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আনসারদের অমুক মহিলার (বর্ণনাকারী বলেন, সাহল রা. তার নামও উল্লেখ করেছিলেন) নিকট লোক পাঠিয়ে বলেছিলেন, তোমার কাঠমিস্ত্রি গোলামকে আমার জন্য কিছু কাঠ দিয়ে এমন জিনিস তৈরী করার নির্দেশ দাও, যার উপর বসে আমি লোকদের সাথে কথা বলতে পারি। এরপর সে মহিলা তাকে আদেশ করেন এবং সে (মদীনা থেকে নয় মাইল দূরবর্তী) গাবা নামক স্থানের ঝাউ কাঠ দিয়ে তা তৈরী করে নিয়ে আসে। মহিলাটি নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট তা পাঠিয়েছেন। নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর আদেশে এখানেই তা স্থাপন করা হয়। এরপর আমি দেখেছি, এর উপর নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সালাত আদায় করেছেন। এর উপর উঠে তাকবীর দিয়েছেন এবং এখানে (দাঁড়িয়ে) রুকু করেছেন। এরপর পিছনের দিকে নেমে এসে মিম্বারের গোড়ায় সিজদা করেছেন এবং (এ সিজদা) পুনরায় করেছেন, এরপর সালাত শেষ করে সমবেত লোদের দিকে ফিরে বলেছেন : হে লোক সকল ! আমি এটা এ জন্য করেছি যে, তোমরা যেন আমার ইক্তিদা করতে এবং আমার সালাত শিখে নিতে পার।