হাদিস ৫২১
আবদুল্লাহ্ইব্ন মাসলামা (র.)……আনাস ইব্ন মালিক(রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমরা রাসূলুল্লাহ্(সা.)- এর সঙ্গে আসরের সালাত আদায় করতাম। সালাতের পর লোকেরা আওফ গোএের মহল্লায় গিয়ে তাদেরকে সালাত আদায় করা অবস্থায় পেত।
হাদিস ৫২২
মুহাম্মদ ইব্ন মুকাতিল (র.)……আবূ উমামা(রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, একবার আমারা উমর ইব্ন আযীয (র.)-এর সঙ্গে যুহরের সালাত আদায় করলাম। তারপর সেখান থেকে বেরিয়ে আনাস ইব্ন মালিক(রা.)- এর কাছে গেলাম। আমরা গিয়ে তাঁকে আসরের সালাত আদায়ে রত পেলাম। আমি তাঁকে বললাম চাচা ! এ কোন সালাত যা আপনি আদায় করলেন? তিনি বললেন, আসরের সালাত আর এ হলো রাসূলুল্লাহ্(সা.)-এর সালাত, যা আমরা তাঁর সাথে আদায় করতাম।
হাদিস ৫২৩
আবলুল্লাহ্ইব্ন ইউসুফ (র.)……আনাস ইব্ন মালিক (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,আমরা আসরের সালাত আদায় করতাম, তারপর আমাদের কোন গমনকারী কুবার দিকে যেত এবং সূর্য যথেষ্ট উপরে থাকতেই সে তাদের কাছে পৌঁছে যেত।
হাদিস ৫২৪
আবুল ইয়ামান (র.)……আনাস ইব্ন মালিক (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্(সা.) আসরের সালাত আদায় করতেন, আর সূর্য তখনও যথেষ্ট উপরে উজ্জ্বল অবস্থায় বিরাজমান থাকত। সালাতের পর কোন গমনকারী ‘আওয়ালী’র’ দিকে রওয়ানা হয়ে তাদের কাছে পৌঁছে যেত, আর তখনও সূর্য উপরে থাকত। আওয়ালীর কোন কোন অংশ ছিল মদীনা থেকে চার মেইল বা তার কাছাকাছি দূরত্বে।
হাদিস ৫২৫
আব্দুল্ললাহ্ইব্ন ইউসুফ (র.)……আবদুল্লাহ্ইব্ন উমর(রা.) থেকে বর্ণিত, সাসূলুল্লাহ্(সা.) বলেছেনঃ যদি কোন ব্যক্তির আসরের সালাত ছুটে যায়, তাহলে যেন তার পরিবার-পরিজন ও মাল-সম্পদ সব কিছুই ধ্বংস হয়ে গেল। আবূ আবদুল্লাহ্(ইমাম বুখারী বলেন, (আরবী পরিভাষায়)) বাক্যটি ব্যবহার করা হয় যখন কেউ কাউকে হত্যা করে অথবা মাল-সম্পদ ছিনিয়ে নেয়।
হাদিস ৫২৬
মুসলিম ইব্ন ইব্রাহীম (র.)……আবূ মালীহ্(রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, এক যুদ্ধে আমরা হযরত বুরাইদা (রা.) – এর সঙ্গে ছিলাম। দিনটি ছিল মেঘাচ্ছন্ন। তাই বুরাইদা (রা.) বলেন, শীঘ্র আসরের সালাত আদায় করে নাও। কারণ নবী (সা.) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি আসরের সালাত ছেড়ে দেয় তার আমল বিনষ্ট হয়ে যায়।
হাদিস ৫২৭
হুমাইদী (র.)……জরীর ইব্ন আবদুল্লাহ্(রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, একদা আমরা নবী (সা.) – এর নিকট উপস্থিত ছিলাম। তিনি রাতে (পূর্ণিমার) চাঁদের দিকে তাকিয়ে বললেনঃ ঐ চাঁদকে তোমরা যেমন দেখছ, ঠিক তেমনি অচিরেই তোমাদের প্রতিপালককে তোমরা দেখতে পাবে। তাঁকে দেখতে তোমরা কোন ভীড়ের সম্মুখীন হবে না। কাজেই সূর্য উদয়ের এবং অস্ত যাওয়ার আগের সালাত (শয়তানের প্রভাবমুক্ত হয়ে) আদায় করতে পারলে তোমরা তাই করবে। তারপর তিনি নিম্নোক্ত আয়াত পাঠ করলেন, “কাজেই তোমার প্রতিপালকের প্রশ্নংসার তাসবীহ্পাঠ কর সূর্য উদয়ের আগে ও অস্ত যওয়ার আগে।” ইসমাঈল (র.) বলেন, এর অর্থ হল – এমনভাবে আদায় করার চেষ্টা করবে যেন কখনো ছুটে না যায়।
হাদিস ৫২৮
আবদুল্লাহ্ইব্ন ইউসুফ (র.)……আবূ হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, সাসূলুল্লাহ্(সা.) বলেছেনঃ ফিরিশ্তাগণ পালা বদল করে তোমাদের মাঝে আগমন করেন; একদল দিনে, একদল রাতে। আসর ও ফজরের সালাতে উভয় দল একএ হন। তারপর তোমাদের মাঝে রাত যাপনকারী দলটি উঠে যান। তখন তাদের প্রতিপালক তাদের জিজ্ঞাসা করেন, আমার বান্দাদের কোন অবস্থায় রেখে আসলে? অবশ্য তিনি নিজেই তাদের ব্যাপারে সর্বাধিক পরিজ্ঞাত। উত্তরে তাঁরা বলেন; আমারা তাদের সালাতে রেখে এসেছি, আর আমরা যখন তাদের কাছে গিয়েছিলাম তখনও তারা সালাতে রত ছিলেন।
হাদিস ৫২৯
আবূ ন’আইম (র.)……আবূ হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্(সা.) বলেছেনঃ তোমাদের কেউ যদি সূর্য অস্ত যাওয়ার আগে আসরের সালাতের এক সিজ্দা পায়, তাহলে সে যেন সালাত পূর্ণ করে নেয়। আর যদি সূর্য উদিত হওয়ার আগে ফজরের সালাতের এক সিজ্দা পায়, তাহলে সে যেন সালাত পূর্ণ করে নেয়।
হাদিস ৫৩০
আবদুল আযীয ইব্ন আবদুল্লাহ্(র.)…..সালিম ইব্ন আবদুল্লাহ্(র.) তাঁর পিতা থেকে বর্ণনা করেন, তিনি সাসূলুল্লাহ্(সা.) – কে বলতে শুনেছেন যে, পুর্বেকার উম্মাতের স্থায়িত্বের তুলনায় তোমাদের স্থায়িত্ব হল আসর থেকে নিয়ে সূর্য অস্ত যাওয়ার মধ্যবর্তী সময়ের অনুরূপ। তাওরাত অনুসারীদেরকে তাওরাত দেওয়া হয়েছিল। তারা তদনুসারে কাজ করতে লাগল; যখন দুপুর হলো, তখন তারা অপারগ হয়ে পড়ল। তাদের এক এক ‘কীরাত’ করে পারিশ্রমিক প্রদান করা হয়। তারপর ইন্জীল অনুসারীদেরকে ইন্জীল দেওয়া হল। তারা আসরের সালাত পর্যন্ত কাজ করে অপারগ হয়ে পড়ল। তাদেরকে এক এক ‘কীরাত’ করে পারিশ্রমিক দেওয়া হল। তারপর আমাদেরকে কুরাআন দেওয়া হল। আমারা সূর্যাস্ত পর্যন্ত কাজ করলাম। আমদের দুই দুই ‘কীরাত’ করে দেওয়া হল। এতে উভয় কিতাবী সম্প্রদায় বলল, হে আমাদেরে প্রতিপাল্ক! তাদের দুই দুই ‘কীরাত’ করে দান করেছেন, আর আমাদেরে দিয়েছেন এক এক কীরাত করে; অথচ আমলের দিক দিয়ে আমরাই বেশী। আল্লাহ্তা’আলা বলেলেনঃ তোমাদের পারিশ্রমিকের ব্যাবারে আমি কি তোমাদের প্রতি কোনরূপ যুলুম করেছি? তারা বলল, না। তখন আল্লাহ্তা’আলা বললেনঃ এ হলো, আমার অনুগ্রহ যাকে ইচ্ছা তাকে দেই।