হাদিস ৭৯২
কুতাইবা ইবনে সাঈদ রহ……..আবদুল্লাহ ইবনে মালিক রা. যিনি ইবনে বুহাইনা, তাঁর থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের নিয়ে যুহরের সালাত আদায় করলেন। দু’রাকাআত পড়ার পর তিনি দাঁড়িয়ে গেলেন অথচ তাঁর বসা জরুরী ছিল। তারপর সালাতের শেষভাগে বসে তিনি দুটো সিজদা করলেন।
হাদিস ৭৯৩
আবু নুআইম রহ……..শাকীক ইবনে সালামা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আবদুল্লাহ (ইবনে মাসউদ) রা. বলেন, আমরা যখন নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর পিছনে সালাত আদায় করতাম, তখন আমরা বলতাম, “আসসালামু আলা জিবরীল ওয়া মিকাইল এবং আসসালামু আলা ফুলান ওয়া ফুলান”। তখন নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের দিকে তাকিয়ে বললেন : আল্লাহ নিজেই তো সালাম, তাই যখন তোমরা কেউ সালাত আদায় করবে, তখন সে যেন বলে – التحيات لله والصلوات والطيبات السلام عليك أيها النبي ورحمة الله وبركاته السلام علينا وعلى عباد الله الصالحين কেননা, যখন তোমরা এ বলবে তখন আসমান ও যমীনের আল্লাহর সকল নেক বান্দার কাছে পৌছে যাবে। এর সঙ্গে أشهد أن لا إله إلا الله وأشهد أن محمدا عبده ورسوله ও পড়বে।
হাদিস ৭৯৪
আবুল ইয়ামান রহ……উরওয়া ইবনে যুবাইর রা. থেকে বর্ণিত, যে, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সহধর্মিনী আয়িশা রা. তাকে বলেছেন যে, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সালাতে এ বলে দু’আ করতেন اللهم إني أعوذبك من عذاب الفبر وأعوذبك من فتنة المسيح الدجال وأعوذبك من فتنة المحيا وفتنة الممات “কবরের আযাব থেকে, মাসীহ দাজ্জালের ফিতনা থেকে এবং জীবন ও মৃত্যুর ফিতনা থেকে ইয়া আল্লাহ ! আপনার নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করছি। ইয়া আল্লাহ ! গুনাহ ও ঋণগ্রস্ততা থেকে আপনার নিকট আশ্রয় চাই। তখন এক ব্যক্তি তাকে বলল, আপনি কতই না ঋণগ্রস্ততা থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করেন। তিনি নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন : যখন কোন ব্যক্তি ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়ে তখন কথা বলার সময় মিথ্যা বলে এবং ওয়াদা করলে তা ভঙ্গ করে। মুহাম্মদ ইবনে ইউসুফ রহ. বলেন, খালফ ইবনে আমির রহ.-কে বলতে আমি শুনেছি যে مَسِيح ও مَسّيح এর মধ্যে পার্থক্য নেই। উভয় শব্দই সমার্থ বোধক তবে একজন হলেন ঈসা আ. অপর ব্যক্তি হলো দাজ্জাল। যুহরী রহ. বলেছেন, উরওয়া ইবনে যুবাইর রহ. আয়িশা রা. থেকে আমার নিকট বর্ণনা করেছেন যে, আয়িশা রা. বলেছেন, আমি নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -কে সালাতে মধ্যে মধ্যে দাজ্জালের ফিতনা থেকে (আল্লাহর নিকট) আশ্রয় প্রার্থনা করতে শুনেছি।
হাদিস ৭৯৫
কুতাইবা ইবনে সাঈদ রহ………আবু বকর সিদ্দীক রা. থেকে বর্ণিত,একদিন তিনি নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে আরয করলেন, আমাকে সালাতে পাঠ করার জন্য একটি দু’আ শিখিয়ে দিন। তিনি বললেন, এ দু’আটি বলবে- اللهم إني ظلمت نفسي ظلما كثيرا ولا يغفر الذنوب إلا أنت فاغفرلي مغفرة من عندك وارحمني إنك أنت الغفور الرحيم “ইয়া আল্লাহ ! আমি নিজের উপর অধিক যুলুম করেছি। আপনি ছাড়া সে অপরাধ ক্ষমা করার আর কেউ নেই। আপনার পক্ষ থেকে আমাকে তা ক্ষমা করে দিন এবং আমার উপর রহমত বর্ষণ করুন। নিশ্চয়ই আপনি ক্ষমাশীল ও দয়াবান।
হাদিস ৭৯৬
মুসাদ্দাদ রহ……….আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমাদের অবস্থা এ ছিল যে, যখন আমরা নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সঙ্গে সালাতে থাকতাম, তখন আমরা বলতাম বান্দার পক্ষ হতে আল্লাহর প্রতি সালাম। সালাম অমুকের প্রতি, সালাম অমুকের প্রতি। এতে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন : আল্লাহর প্রতি সালাম, তোমরা এরূপ বল না। কারণ আল্লাহ নিজেই সালাম। বরং তোমরা বল- التحيات لله والصلوات والطيبات السلام عليك أيها النبي ورحمة الله وبركاته السلام علينا وعلى عباد الله الصالحين (সমস্ত মৌখিক, দৈহিক ও আর্থিক ইবাদত আল্লাহর জন্য। হে নবী ! আপনার প্রতি সালাম এবং আল্লাহর রহমত ও বরকত বর্ষিত হোক। সালাম আমাদের প্রতি এবং আল্লাহর নেক বান্দাদের প্রতি)। তোমরা যখন তা বলবে তখন আসমান বা আসমান ও যমীনের মধ্যে আল্লাহর প্রত্যেক বান্দার কাছে তা পৌছে যাবে। (এরূপ বলবে – أشهد أن لا إله إلا الله وأشهد أن محمدا عبده ورسوله “আমি সাক্ষ্য প্রদান করছি যে, আল্লাহ ব্যতীত আর কোন মাবুদ নেই এবং আমি আরো সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, নিশ্চয়ই মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহর বান্দা ও রাসূল।” তারপর যে দু’আ তার পছন্দ হয় তা সে বেছে নিবে এবং পড়বে।
হাদিস ৭৯৭
মুসলিম ইবনে ইবরাহীম রহ………আবু সালাম রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি আবু সাঈদ খুদরী রা.-কে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন, আমি নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে পানি ও কাদার মধ্যে সিজদা করতে দেখেছি। এমন কি তাঁর (মুবারক) কপালে কাদামাটির চিহ্ন লেগে থাকতে দেখেছি।
হাদিস ৭৯৮
মূসা ইবনে ইসমাঈল রহ……..উম্মে সালামা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন সালাম ফিরাতেন, তখন সালাম শেষ হলেই মহিলাগণ দাঁড়িয়ে পড়তেন। তিনি দাঁড়ানোর পূর্বে কিছুক্ষণ বসে অপেক্ষা করতেন। ইবনে শিহাব রহ. বলেন, আমার মনে হয়, তাঁর এ অপেক্ষা এ কারণে যাতে মুসল্লীগণ থেকে যে সব পুরুষ ফিরে যান তাদের পূর্বেই মহিলাগণ নিজ অবস্থানে পৌছে যান।