হাদিস ৭৮২
মুহাম্মদ ইবনে আবদুর রাহীম রহ………বারা রা. সূত্রে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর সিজদা ও রুকু এবং দু’সিজদার মধ্যে বসা প্রায় সমান হতো।
হাদিস ৭৮৩
সুলাইমান ইবনে হারব রহ……..আনাস ইবনে মালিক রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -কে যে ভাবে আমাদের নিয়ে সালাত আদায় করতে দেখেছি, কম বেশী না করে আমি তোমাদের সে ভাবেই সালাত আদায় করে দেখাব। সাবিত রহ. বলেন, আনাস ইবনে মালিক রা. এমন কিছু করতেন যা তোমাদের করতে দেখিনি। তিনি রুকু হতে মাথা তুলে দাঁড়িয়ে এত বিলম্ব করতেন যে, কেউ বলত, তিনি (সিজদার কথা) ভুলে গেছেন।
হাদিস ৭৮৪
মুহাম্মদ ইবনে বাশশার রহ……….আনাস ইবনে মালিক রা. থেকে বর্ণিত, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন : সিজদায় (অঙ্গ প্রত্যঙ্গার) সামঞ্জস্যতা রক্ষা কর এবং তোমাদের মধ্যে কেউ যেন দু’হাত বিছিয়ে না দেয় যেমন কুকুর বিছিয়ে দেয়।
হাদিস ৭৮৫
মুহাম্মদ ইবনে সাব্বাহ রহ…….মালিক ইবনে হুয়াইরিস লাইসী রা. থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -কে সালাত আদায় করতে দেখেছেন। তিনি তাঁর সালাতের বেজোড় রাকাআতে (সিজদা থেকে) উঠে না বসে দাঁড়াতেন না।
হাদিস ৭৮৬
মুআল্লা ইবনে আসাদ রহ………আবু কিলাবা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ইবনে হুয়াইরিস রা. এসে আমাদের এ মসজিদে আমাদের নিয়ে সালাত আদায় করেন। তিনি বললেন, আমি তোমাদের নিয়ে সালাত আদায় করব। এখন আমার সালাত আদায়ের কোন ইচ্ছা ছিল না, তবে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে যে ভাবে সালাত আদায় করতে দেখেছি তা তোমাদের দেখাতে চাই। আইয়ূব রহ. বলেন, আমি আবু কিলাবা রা. কে জিজ্ঞাসা করলাম, তাঁর (মালিক ইবনে হুয়াইরিস রা.-এর সালাত কিরূপ ছিল? তিনি (আবু কিলাবা রা.) বলেন, আমাদের এ শায়খ অর্থাৎ আমর ইবনে সালিমা রা.-এর সালাতের মত। আইয়ূব রহ. বললেন, শায়খ তাকবীর পূর্ণ বলতেন এবং যখন দ্বিতীয় সিজদা থেকে মাথা উঠাতেন তখন বসতেন, তারপর মাটিতে ভর দিয়ে দাঁড়াতেন।
হাদিস ৭৮৭
ইয়াহইয়া ইবনে সালিহ রহ……..সাঈদ ইবনে হারিস রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, একবার আবু সাঈদ রা. সালাতে আমাদের ইমামতি করেন। তিনি প্রথম সিজদা থেকে মাথা উঠানোর সময়, দ্বিতীয় সিজদা করার সময়, দ্বিতীয় সিজদা থেকে মাথা উঠানোর সময় দু’রাকাআত শেষে (তাশাহুদের বৈঠকের পর) দাঁড়ানোর সময় স্বশদ্ধে তাকবীর বলেন। তিনি বলেন, আমি এভাবেই নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে (সালাত আদায় করতে) দেখেছি।
হাদিস ৭৮৮
সুলাইমান ইবনে হারব রহ……….মুতাররিফ রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি ও ইমরান রা. একবার আলী ইবনে আবু তালিব রা. এর পিছনে সালাত আদায় করি। তিনি সিজদা করার সময় তাকবীর বলেছেন। উঠার সময় তাকবীর বলেন এবং দু’রাকাআত শেষে দাঁড়ানোর সময় তাকবীর বলেছেন। সালাম ফিরানোর পর ইমরান রহ. আমার হত ধরে বললেন, ইনি তো (আলী) আমাকে মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সালাত স্মরণ করিয়ে দিলেন।
হাদিস ৭৮৯
আবদুল্লা ইবনে মাসলামা রহ…….আবদুল্লাহ ইবনে আবদুল্লাহ রা. থেকে বর্ণিত, তিনি আবদুল্লাহ ইবনে উমর রা.-কে সালাতে আসন পিড়ি করে বসতে দেখেছেন। আবদুল্লাহ ইবনে আবদুল্লাহ রা. বলেন, আমি সে সময় অল্প বয়স্ক ছিলাম। আমিও সেরূপ করলাম। আবদুল্লাহ ইবনে উমর রা আমাকে নিষেধ করলেন এবং তিনি বললেন, সালাতে (বসার) সুন্নাত তরীকা হল তুমি ডান পা খাড়া করবে এবং বাঁ পা বিছিয়ে রাখবে। তখন আমি বললাম, আপনি এরূপ করেন ? তিনি বললেন, আমার দু’পা আমার ভার বহণ করতে পারে না।
হাদিস ৭৯০
ইয়াহইয়া ইবনে বুকাইর এবং লায়স রহ……….মুহাম্মদ ইবনে আমর ইবনে আতা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর একদল সাহাবীর সঙ্গে বসা ছিলেন। তিনি বলেন, আমরা নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সালাত সম্পর্কে আলোচনা করছিলাম। তখন আবু হুমাইদ সাঈদী রা. বলেন, আমিই তোমাদের মধ্যে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সালাত সম্পর্কে বেশী স্মরণ রেখেছি। আমি তাকে দেখেছি (সালাত শুরু করার সময়) তিনি তাকবীর বলে দু’হাত কাঁধ বরাবর উঠাতেন। আর যখন রুকু করতেন তখন দু’হাত দিয়ে হাটু শক্ত করে ধরতেন এবং পিঠ সমান করে রাখতেন। তারপর রুকু থেকে মাথা উঠিয়ে সোজা হয়ে দাঁড়াতেন যাতে মেরুদণ্ডের হাড়গুলো স্ব-স্ব স্থানে ফিরে আসত। এরপর যখন সিজদা করতেন তখন দু’হাত সম্পূর্ণভাবে মাটির উপর বিছিয়ে দিতেন না, আবার গুটিয়েও রাখতেন না। এবং তাঁর উভয় পায়ের আঙ্গুলীর মাথা কেবলামুখী করে দিতেন। যখন দু’রাকাআতের পর বসতেন তখন বাঁ পার-এর উপর বসে ডান পা খাড়া করে দিতেন এবং যখন শেষ রাকাআতে বসতেন তখন বাঁ পা এগিয়ে দিয়ে ডান পা খাড়া করে নিতম্বের উপর বসতেন।
লায়স রহ……..ইবনে আতা রহ. থেকে হাদীসটি শুনেছেন। আবু সালিহ রহ. লায়স রা. থেকে كل فقار مكانه বলেছেন। আর ইবনে মুবারক রহ……..মুহাম্মদ ইবনে আমর রহ. থেকে শুধুكل فقار বর্ণনা করেছেন।
হাদিস ৭৯১
আবুল ইয়ামান রহ………বনূ আবদুল মুত্তালিবের আযাদকৃত দাস এবং রাবী কোন সময়ে বলেছেন রাবীআ ইবনে হারিসের আযাদকৃত দাস, আবদুর রহমান ইবনে হুরমুয রা. থেকে বর্ণিত যে বনূ আবদে মানাফের বন্ধু গোত্র আযদ শানআর লোক আবদুল্লাহ ইবনে বুহাইনা রা. যিনি নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সাহাবী গণের অন্যতম। তিনি বলেছেন, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের নিয়ে যুহরের সালাত আদায় করলেন। তিনি প্রথম দু’রাকআত পড়ার পর না বসে দাঁড়িয়ে গেলেন। মুক্তাদীগণ তাঁর সঙ্গে দাঁড়িয়ে গেলেন। এ ভাবে সালাতের শেষভাগে মুকতাদীগণ সালামের জন্য অপেক্ষা করছিলেন। কিন্তু নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বসা অবস্থায় তাকবীর বললেন এবং সালাম ফিরানোর পূর্বে দু’বার সিজদা করলেন, পরে সালাম ফিরালেন।