হাদিস ৭৭০
ইয়াহইয়া ইবনে বুকাইর রহ……..আবদুল্লাহ ইবনে মালিক ইবনে বুহাইনা রা. তাঁর থেকে বর্ণিত, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন সালাত আদায় করতেন, তখন উভয় হাত এরূপ করতেন যে, তাঁর উভয় বগলের শুভ্রতা প্রকাশ হয়ে পড়ত। লাইস রহ. বলেন, জাফর ইবনে রাবীআ রহ. আমার কাছে অনুরূপ বর্ণনা করেছেন।
হাদিস ৭৭১
সালত ইবনে মুহাম্মদ রহ………হুযায়ফা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি এক ব্যক্তিকে দেখলেন, সে রুকু ও সিজদা পূর্ণরূপে আদায় করছে না। সে যখন তার সালাত শেষ করল, তখন হুযায়ফা রা. তাকে বললেন, তুমি তো সালাত আদায় করনি। আবু ওয়াইল রহ. বলেন, আমার মনে হয়, তিনি এও বলেছিলেন যে, এভাবে সালাত আদায় করে তুমি যদি মারা যাও, তাহলে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর তরীকা থেকে বিচ্যুত হয়ে মারা যাবে।
হাদিস ৭৭২
কাবীসা রহ………ইবনে আব্বাস রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাতটি অঙ্গের দ্বারা সিজদা করতে এবং চুল ও কাপড় না গুটাতে আদিষ্ট হয়েছিলেন। (অঙ্গ সাতটি হল) কপাল, দু’হাত, দু’হাটু ও দু’পা।
হাদিস ৭৭৩
মুসলিম ইবনে ইবরাহীম রহ…….ইবনে আব্বাস রা. থেকে বর্ণিত যে, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন : আমরা সাতটি অঙ্গের দ্বারা সিজদা করতে এবং চুল ও কাপড় না গুটাতে আদিষ্ট হয়েছি।
হাদিস ৭৭৪
আদম রহ……..বারা ইবনে আযিব রা. থেকে বর্ণিত, যিনি অবশ্যই মিথ্যাবাদী ছিলেন না। তিনি বলেন, আমরা নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর পিছনে সালাত আদায় করতাম। তিনি سمع الله لمن حمده বলার পর যতক্ষণ না কপাল মাটিতে স্থাপন করতেন, ততক্ষণ পর্যন্ত আমাদের কেউ সিজদার জন্য পিঠ ঝুকাত না।
হাদিস ৭৭৫
মুআল্লা ইবনে আসাদ রহ………ইবনে আব্বাস রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন : আমি সাতটি অঙ্গের দ্বারা সিজদা করার জন্য আদিষ্ট হয়েছি। কপাল দ্বারা এবং তিনি হাত দিয়ে নাকের প্রতি ইশারা করে এর অন্তর্ভূক্ত করেন, আর দু’হাত দু’হাটু এবং দু’পায়ের আঙ্গুলসমূহ দ্বারা। আর আমরা যেন চুল ও কাপড় না গুটাই।
হাদিস ৭৭৬
মূসা রহ……….আবু সালামা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি আবু সাঈদ খুদরী রা.-এর নিকট উপস্থিত হয়ে বললাম, আমাদের সঙ্গে খেজুর বাগানে চলুন, (হাদীস সংক্রান্ত) আলাপ আলোচনা করব। তিনি বেরিয়ে আসলেন। আবু সালামা রা. বলেন, আমি তাকে বললাম, লাইলাতুল কাদর সম্পর্কে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে যা শুনেছেন, তা আমার কাছে বর্ণনা করুন। তিনি বললেন, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রমযানের প্রথম দশ দিন ইতিকাফ করলেন। আমরাও তাঁর সঙ্গে ইতিকাফ করলাম। জিবরাঈল আ. এসে বললেন, আপনি যা তালাশ করছেন, তা আপনার সামনে রয়েছে। এরপর তিনি মধ্যবর্তী দশ দিন ইতিকাফ করলেন, আমরাও তাঁর সাথে ইতিকাফ করলাম। পুনরায় জিবরাঈল আ. এসে বললেন, আপনি যা তালাশ করছেন, তা আপনার সামনে রয়েছে। এরপর রমযানের বিশ তারিখ সকালে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম খুতবা দিতে দাঁড়িয়ে বললেন, যারা আল্লাহর নবীর সঙ্গে ইতিকাফ করেছেন, তারা যেন ফিরে আসেন (আবার ইতিকাফ করেন) কেননা, আমাকে স্বপ্নে লাইলাতুল কাদর অবগত করানো হয়েছে। তবে আমাকে তা (নির্ধারিত তারিখটি) ভুলিয়ে দেওয়া হয়েছে। নি:সন্দেহে তা শেষ দশ দিনের কোন এক বেজোড় তারিখে। স্বপ্নে দেখলাম যেন আমি কাদা ও পানির উপর সিজদা করছি। তখন মসজিদের ছাদ খেজুরের ডাল দ্বারা নির্মিত ছিল। আমরা আকাশে কোন কিছুই (মেঘ) দেখিনি, সালাত আদায় করলেন। এমন কি আমি নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর কপাল ও নাকের অগ্রভাগে পানি ও কাঁদার চিহ্ন দেখতে পেলাম। এভাবেই তাঁর স্বপ্ন সত্যে পরিণত হলো।
হাদিস ৭৭৭
মুহাম্মদ ইবনে কাসীর রহ……..সাহল ইবনে সাদ রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, সাহাবীগণ নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর সাথে সালাত আদায় করতেন। কিন্তু ইযার বা লুঙ্গী ছোট হওয়ার কারণে তা গলার সাথে বেঁধে নিতেন। আর মহিলাগণকে বলে দেওয়া হয়েছিল, তোমরা সিজদা থেকে মাথা উঠাবে না যতক্ষণ পর্যন্ত পুরুষগণ ঠিকমত না বসবে।
হাদিস ৭৭৮
আবু নুমান রহ……..ইবনে আব্বাস রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেছেন, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাতটি অঙ্গের সাহায্যে সিজদা করতে এবং সালাতের মধ্যে চুল একত্র না করতে এবং কাপড় টেনে না ধরতে আদিষ্ট হয়েছিলেন।
হাদিস ৭৭৯
মূসা ইবনে ইসমাঈল রহ…….ইবনে আব্বাস রা. থেকে বর্ণিত, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন : আমি সাত অঙ্গে সিজদা করার, সালাতের মধ্যে চুল একত্র না করার এবং কাপড় টেনে না ধরার জন্য আদিষ্ট হয়েছি।
হাদিস ৭৮১
আবু নুমান রহ………আবু কিলাবা রহ. থেকে বর্ণিত যে মালিক ইবনে হুয়াইরিস রা. তাঁর সাথীদের বললেন, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর সালাত সম্পর্কে আমি কি তোমাদের অবহিত করব না ? (রাবী) আবু কিলাবা রা. বলেন, এ ছিল সালাতের সময় ছাড়া অন্য সময়। তারপর তিনি (সালাতে) দাঁড়ালেন, তারপর রুকু করলেন, এবং তাকবীর বলে মাথা উঠালেন আর কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকলেন। তারপর সিজদায় গেলেন এবং সিজদা থেকে মাথা উঠিয়ে কিছুক্ষণ বসে পুনরায় সিজদা করলেন। তারপর মাথা উঠিয়ে কিছুক্ষণ অপেক্ষ করলেন। এভাবে তিনি আমাদের এ শায়খ আমর ইবনে সালিমার সালাতের মত সালাত আদায় করলেন। আইয়ুব রহ. বলেন, আমর ইবনে সালিমা রহ. এমন কিছু করতেন যা অন্যদের করতে দেখিনি। তা হল তিনি তৃতীয় অথবা চতুর্থ রাকাআতে বসতেন। মালিক ইবনে হুয়াইরিস রা. বর্ণনা করেন, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর নিকট এসে কিছু দিন অবস্থান করলাম। তিনি আমাদের বললেন, তোমরা তোমাদের পরিবার পরিজনদের মধ্যে ফিরে যাওয়ার পর অমুক সালাত অমুক সময়, অমুক সালাত অমুক সময় আদায় করবে। সময় হলে তোমাদের একজন আযান দেবে এবং তোমাদের মধ্যে বয়োজ্যেষ্ঠ ব্যক্তি ইমামতি করবে।