হাদিস ৭৫৮
হাফস ইবনে উমর রহ………আয়িশা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রুকু ও সিজদায় এ দুআ পড়তেন سبحانك اللهم ربنا وبحمدك اللهم اغفرلي ‘হে আমাদের রব আল্লাহ ! আপনার পবিত্রতা বর্ণনা করছি এবং আপনার প্রশংসা করছি। হে আল্লাহ ! আপনি আমাকে ক্ষমা করে দিন।
হাদিস ৭৫৯
আদম রহ……….আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম سمع الله لمن حمده বলে (রুকু থেকে উঠতেন) তখন اللهم ربنا ولك الحمد বলতেন, আর তিনি যখন রুকুতে যেতেন এবং রুকু থেকে মাথা উঠাতেন, তখন তাকবীর বলতেন এবং সিজদা থেকে যখন দাঁড়াতেন, তখনالله أكبر বলতেন।
হাদিস ৭৬০
আবদুল্লাহ ইবনে ইউসূফ রহ………আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত যে, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন : ইমাম যখন سمع الله لمن حمده বলেন, তখন তোমার اللهم ربنا ولك الحمد বলবে। কেননা, যার এ উক্তি ফেরেশতাগণের উক্তির সঙ্গে একই সময়ে উচ্চারিত হয়, তার পূর্ববর্তী সকল গুনাহ মাফ করে দেওয়া হয়।
হাদিস ৭৬১
মুআয ইবনে ফাযালা রহ……..আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি অবশ্যই নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর সালাতের ন্যায় সালাত আদায় করব। আবু হুরায়রা রা. যুহর, ইশা ও ফজরের সালাতের শেষ রাকাআতে سمع الله لمن حمده বলার পর কুনুত পড়তেন। এতে তিনি মুমিন গণের জন্য দুআ করতেন এবং কাফিরদের প্রতি লানত করতেন।
হাদিস ৭৬২
আবদুল্লাহ ইবনে আবুল আসওয়াদ রহ………..আনাস রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, (নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর সময়ে) কুনুত ও মাগরিবের সালাতে পড়া হত।
হাদিস ৭৬৩
আবদুল্লাহ ইবনে মাসলামা রহ………..রিফাআ ইবনে রাফি যুহকী রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, একবার আমরা নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর পিছনে সালাত আদায় করলাম। তিনি যখন রুকু থেকে মাথা উঠিয়েسمع الله لمن حمده বললেন, তখন পিছন থেকে এক সাহাবীربنا ولك الحمد حمدا كثيرا طيبا مباركا فيه বললেন। সালাত শেষ করে তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, কে এরূপ বলেছিল ? সে সাহাবী বললেন, আমি। তখন তিনি বললেন, আমি দেখলাম ত্রিশ জনের বেশী ফেরেশতা এর সওয়াব কে আগে লিখবেন তা নিয়ে নিজেদের মধ্যে প্রতিযোগিতা করছেন।
হাদিস ৭৬৪
আবুল ওয়ালীদ রহ………সাবিত রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আনাস ইবেন মালিক রা. আমাদেরকে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর সালাতের বর্ণনা দিলেন। তারপর তিনি সালাত আদায় করে দেখালেন। তিনি যখন রুকু থেকে মাথা উঠাতেন, তখন (এতক্ষণ) দাঁড়িয়ে রইলেন, যে, আমরা মনে করলাম, তিনি (সিজদার কথা) ভুলে গেছেন।
হাদিস ৭৬৫
আবুল ওয়ালীদ রহ………বারা রা. থেকে বর্ণিত, বলেন, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর রুকু ও সিজদা এবং তিনি যখন রুকু থেকে মাথা উঠাতেন, এবং দু’সিজদার মধ্যবর্তী সময় সবই প্রায় সমান হত।
হাদিস ৭৬৬
সুলাইমান ইবনে হারব রহ………..আবু কিলাবা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, মালিক ইবনে হুওয়াইরিস রা. নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর সালাত কেমন ছিল তা আমাদের দেখালেন। তারপর রুকুতে গেলেন এবং ধীরস্থিভাবে রুকু আদায় করলেন, তারপর তাঁর মাথা উঠালেন এবং কিছুক্ষণ সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে থাকলেন। তারপর তিনি আমাদের নিয়ে আমাদের এই শায়খ আবু বুরাইদ রহ.-এর ন্যায় সালাত আদায় করলেন। আর আবু বুরাইদ রহ. দ্বিতীয় সিজদা থেকে মাথা উঠিয়ে সোজা হয়ে বসতেন, তারপর দাঁড়াতেন।
হাদিস ৭৬৭
আবুল ইয়ামান রহ………আবু বকর ইবনে আবদুর রহমান রহ. ও আবু সালামা ইবনে আবদুর রহমান রহ. থেকে বর্ণিত যে, আবু হুরায়রা রা. রমযান মাসের সালাত বা অন্য কোন সময়ের সালাত ফরয হোক বা অন্য কোন সালাত হোক, দাঁড়িয়ে শুরু করার সময় তাকবীর বলতেন, আবার রুকুতে যাওয়ার সময় তাকবীর বলতেন। তারপর (রুকু থেকে উঠার সময়) سمع الله لمن حمده বলতেন, সিজদায় যাওয়ার পূর্বে ربنا ولك الحمد বলতেন। তারপর সিজদার জন্য অবনত হওয়ার সময় আল্লাহু আকবার বলতেন। আবার সিজদা থেকে মাথা উঠানোর সময় তাকবীর বলতেন। এরপর (দ্বিতীয়) সিজদায় যাওয়ার সময় তাকবীর বলতেন এবং সিজদা থেকে মাথা উঠানোর সময় তাকবীর বলতেন। দু’রাকাআত আদায় করে দাঁড়ানের সময় আবার তাকবীর বলতেন। সালাত শেষ করা পর্যন্ত প্রতি রাকাআতে এইরূপ করতেন। সালাত শেষে তিনি বলতেন, যে সত্তার হাতে আমার প্রাণ তাঁর শপথ ! তোমাদের মধ্য থেকে আমার সালাত নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর সালাতের সাথে অধিক সাদৃশ্যপূর্ণ। দুনিয়া থেকে বিদায় নেওয়ার পূর্ব পর্যন্ত নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর সালাত এ রূপই ছিল। উভয় বর্ণনাকারী (আবু বকর ইবনে আবদুর রহমান ও আবু সালাম রহ. বলেন, আবু হুরায়রা রা. বলেছেন যে, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন রুকু থেকে মাথা উঠাতেন তখন سمع الله لمن حمده ربنا ولك الحمد বলতেন। আর কতিপয় লোকের নাম উল্লেখ করে তাদের জন্য দুআ করতেন। দুআয় তিনি বলতেন, ইয়া আল্লাহ ! ওয়ালীদ ইবনে ওয়ালীদ, সালামা ইবনে হিশাম, আইয়্যাস ইবনে আবু রাবীআ এবং অপরাপর দুর্বল মুসলমানদেরকে রক্ষা করুন। ইয়া আল্লাহ ! মুদার গোত্রের উপর আপনার পাকড়াও কঠোর করুন, ইউসুফ আ.-এর যুগে যেমন খাদ্য সংকট ছিল তাদের জন্যও অনুরূপ খাদ্য সংকট সৃষ্টি করে দিন। (রাবী বলেন) এ যুগে পূর্বাঞ্চলের অধিবাসী মুদার গোত্রের লোকেরা নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর বিরোধী ছিল।