হাদিস ৭৪৭
মুসা ইবনে ইসমাঈল রহ……..আবু বাকরা রা. থেকে বর্ণিত যে, তিনি নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে এমন অবস্থায় পৌছলেন যে, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তখন রুকতে ছিলেন। তখন কাতার পর্যন্ত পৌছার আগেই তিনি রুকুতে চলে যান। এ ঘটনা নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে ব্যক্ত করা হলে, তিনি বললেন, আল্লাহ তাআলা তোমার আগ্রহকে আরও বাড়িয়ে দিন। তবে এরূপ আর করবে না।
হাদিস ৭৪৮
ইসহাক ওয়াসিতী রহ……….ইমরান ইবনে হুসাইন রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বসরায় আলী রা.-এর সঙ্গে সালাত আদায় করলেন। তারপর বললেন, ইনি (আলী রা. আমাকে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সঙ্গে আদায়কৃত সালাতের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন। আর তিনি উল্লেখ করেন যে, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রতিবার (মাথা) উঠাতে ও নামাতে তাকবীব বলতেন।
হাদিস ৭৪৯
আবদুল্লাহ ইবনে ইউসুফ রহ………আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত যে, তিনি তাদের সঙ্গে সালাত আদায় করতেন এবং প্রতিবার উঠা বসার তাকবীর বলতেন। সালাত শেষ করে তিনি বললেন, তোমাদের মধ্যে আমার সালাতই নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সালাতের সাথে বেশী সাদৃশ্যপূর্ণ।
হাদিস ৭৫০
আবু নুমান রহ………..মুতাররিফ ইবনে আবদুল্লাহ রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি এবং ইমরান ইবনে হুসাইন রা. আলী ইবনে আবি তালিব রা.-বর পিছনে সালাত আদায করলাম। তিনি যখন সিজদায় গেলেন তখন তাকবীর বললেন, সিজদা থেকে যখন মাথা উঠালেন তখনও তাকবীর বললেন, আবার দু’রাকাআতের পর যখন দাঁড়ালেন তখনও তাকবীর বললেন। তিনি যখন সালাত শেষ করলেন তখন ইমরান ইবনে হুসাইন রা. আমার হাত ধরে বললেন, ইনি (আলী রা.) আমাকে মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর সালাত স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন বা তিনি বলেছিলেন, আমাদের নিয়ে মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর সালাতের ন্যায় সালাত আদায় করেছেন।
হাদিস ৭৫১
আমর ইবনে আওন রহ……..ইকরিমা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি মাকামে (ইবরাহীমের নিকট) এক ব্যক্তিকে দেখলাম যে, প্রতিবার উঠা ও ঝুকার সময় দাঁড়ানো ও বসার সময় তাকবীর বলছেন। আমি ইবনে আব্বাস রা. কে জানালে তিনি বললেন, তুমি মাতৃহীন হও, একি নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সালাত নয় ?
হাদিস ৭৫২
মূসা ইবনে ইসমাঈল রহ……… ইকরিমা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি মক্কা শরীফে এক বৃদ্ধের পিছনে সালাত আদায় করলাম। তিনি বাইশবার তাকবীর বললেন। আমি ইবনে আব্বাস রা.-কে বললাম, লোকটি তো আহমক। তিনি বললেন, তোমার মা তোমাকে হারিয়ে ফেলুক। এ যে আবুল কাসিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সুন্নাত। মূসা রহ. বলেন, আবান রহ. কাতাদা রহ. সূত্রেও ইকরিমা রা. থেকে এ হাদীসটি সরাসরি বর্ণনা করেছেন।
হাদিস ৭৫৩
ইয়াহইয়া ইবনে বুকাইর রহ……..আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সালাত আরম্ভ করার সময় দাঁড়িয়ে তাকবীর বলতেন। এরপর রুকুতে যাওয়ার সময় তাকবীর বলতেন, আবার যখন রুকু থেকে পিঠ সোজা করে উঠতেন তখন سمع الله لمن حمده বলতেন, তারপর দাঁড়িয়ে ربنا لك الحمد বলতেন। এরপর সিজদায় যাওয়ার সময় তাকবীর বলতেন। এবং যখন মাথা উঠাতেন তখনও তাকবীর বলতেন। আবার (দ্বিতীয়) সিজদায় যেতে তাকবীর বলতেন এবং পুনরায় মাথা উঠাতেন তখনও তাকবীর বলতেন। এভাবেই তিনি পুরো সালাত শেষ করতেন। আর দ্বিতীয় রাকাআতের বৈঠক শেষে যখন (তৃতীয় রাকাআতের জন্য) দাঁড়াতেন তখনও তাকবীর বলতেন। আবদুল্লাহ ইবনে সালিহ রহ. লাইস রহ. সূত্রে হাদীসটি বর্ণনা করতেولك الحمد উল্লেখ করেছেন।
হাদিস ৭৫৪
আবুল ওয়ালীদ রহ…….. মুসআব ইবেন সাদ রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, একবার আমি আমার পিতার পাশে দাঁড়িয়ে সালাত আদায় করলাম। এবং (রুকুর সময়) দু’হাত জোড় করে উভয় উরুর মাঝে রাখলাম। আমার পিতা আমাকে এরূপ করতে নিষেধ করলেন এবং বললেন, পূর্বে আমরা এরূপ করতাম; পরে আমাদেরকে এ থেকে নিষেধ করা হয়েছে এবং হাত হাঁটুর উপর রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
হাদিস ৭৫৫
হাফস ইবনে উমর রহ………যায়েদ ইবনে ওয়াহব রহ. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, হুযাইফা রা. এক ব্যক্তিকে দেখলেন যে, সে রুকু ও সিজদা ঠিকমত আদায় করছে ননা। তিনি তাকে বললেন, তোমার সালাত হয়নি। যদি তুমি (এই অবস্থায়) মারা যাও, তাহলে আল্লাহ কর্তৃক মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে প্রদত্ত আদর্শ হতে বিচ্যুত অবস্থায় তুমি মারা যাবে।
হাদিস ৭৫৬
বাদাল ইবনে মুহাব্বার রহ………বারা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, সালাতে দাঁড়ানো ও বসা অবস্থা ব্যতীত নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর রুকু এবং সিজদার মধ্যবর্তী সময় এবং রুকু থেকে উঠে দাঁড়ানো, এগুলো প্রায় সমপরিমাণ ছিল।
হাদিস ৭৫৭
মুসাদ্দাদ রহ………আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, একসময়ে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মসজিদে তাশরীফ আনলেন, তখন এক ব্যক্তি মসজিদে প্রবেশ করে সালাত আদায় করলো। তারপর সে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে সালাম করলো। নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার সালামের জবাব দিয়ে বললেন : তুমি ফিরে গিয়ে সালাত আদায় কর, কেননা, তুমি সালাত আদায় করনি। লোকটি আবার সালাত আদায় করল এবং পুনরায় এসে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে সালাম দিল। তিনি বললেন : আবার গিয়ে সালাত আদায় কর, কেননা, তুমি সালাত আদায় করনি। এভাবে তিনবার ঘটনার পূনরাবৃত্তি। তারপর লোকটি বলল, সে মহান সত্তার শপথ ! যিনি আপনাকে সত্যসহ প্রেরণ করেছেন, আমি এর চেয়ে সুন্দর সালাত আদায় করতে জানিনা। কাজেই আপনি আমাকে শিখিয়ে দিন। তখন তিনি বললেন : যখন তুমি সালাতে দাঁড়াবে, তখন তাকবীর বলবে। তারপর কুরআন থেকে যতটুকু তোমার পক্ষে সহজ পড়বে। এরপর রুকুতে যাবে এবং ধীরস্থিরভাবে রুকু আদায় করবে। তারপর রুকু থেকে উঠে সোজা হয়ে দাঁড়াবে। ধীরস্থিরভাবে সিজদা করবে। এরপর সিজদা থেকে উঠে স্থিরভাবে বসবে এবং পুনরায় সিজদায় গিয়ে স্থিরভাবে সিজদা করবে। তারপর পূর্ণ সালাত এভাবে আদায় করবে।