হাদিস ৭৩৭
মুসাদ্দাদ রহ…….ইবনে আব্বাস রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কয়েকজন সাহাবীকে সঙ্গে নিয়ে উকায বাজারের উদ্দেশ্যে রওয়ানা করেন। আর দুষ্ট জিনদের উর্ধলোকের সংবাদ সংগ্রহের পথে প্রতিবন্ধকতা দেখা দেয় এবং তাদের দিকে অগ্নিপিন্ড নিক্ষিপ্ত হয়। কাজেই শয়তানরা তাদের সম্প্রদায়ের নিকট ফিরে আসে। তারা জিজ্ঞাসা করল, তোমাদের কি হয়েছে ? তারা বলল, আমাদের এবং আকাশের সংবাদ সংগ্রহের মধ্যে প্রতিবন্ধকতা দেখা দিয়েছে এবং আমাদের দিকে অগ্নিপিন্ড ছুঁড়ে মারা হয়েছে। তখন তারা বলল, নিশ্চয়ই গুরুত্বপূর্ণ একটা কিছু ঘটেছে বলেই তোমাদের এবং আকাশের সংবাদ সংগ্রহের মধ্যে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হয়েছে। কাজেই, পৃথিবীর পূর্ব এবং পশ্চিম অঞ্চল পর্যন্ত বিচরণ করে দেখ, কী কারণে তোমাদের ও আকাশের সংবাদ সংগ্রহের মধ্যে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হয়েছে ? তাই তাদের যে দলটি তিহামার দিকে গিয়েছিল, তারা নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর দিকে অগ্রসর হল। তিনি তখন উকায বাজারের পথে নাখলা নামক স্থানে সাহাবীগণ কে নিয়ে ফজরের সালাত আদায় করছিলেন। তারা যখন কুরআন শুনতে পেল, তখন সেদিকে মনোনিবেশ করল। তারপর তারা বলে উঠল, আল্লাহর শপথ! এটিই তোমাদের ও আকাশের সংবাদ সংগ্রহের মধ্যে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছে। এমন সময় যখন তারা সম্প্রদায়ের সঙ্গে কাইকে শরীক স্থির করব না। এ প্রসঙ্গেই আল্লাহ তাআলা তাঁর নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর প্রতি قل أوحى إلى…………. সূরা নাযিল করেন। মূলত তাঁর নিকট জিনদের বক্তব্যই ওহী রূপে নাযিল করা হয়েছে।
হাদিস ৭৩৮
মুসাদ্দাদ রহ……..ইবনে আব্বাস রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যেখানে কিরাআত পড়ার জন্য নির্দেশ পেয়েছেন, সেখানে পড়েছেন। আর যেখানে চুপ করে থাকতে নির্দেশ পেয়েছেন সেখানে চুপ করে থেকেছেন। (আল্লাহ তাআলার বাণী) “নিশ্চয়ই তোমাদের জন্য নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর মধ্যে রয়েছে উত্তম আদর্শ।”
হাদিস ৭৩৯
আদম রহ………আবু ওয়াইল রহ. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, এক ব্যক্তি ইবনে মাসউদ রা.-এর নিকট এসে বলল, গতরাতে আমি মুফসসাল সূরাগুলো এক রাকাআতেই তিলাওয়াত করেছি। তিনি বললেন, তাহলে নিশ্চয়ই কবিতার ন্যায় দ্রুত পড়েছ। নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পরস্পর সমতূল্য যে সব সূরা মিলিয়ে পড়তেন, সেগুলো সম্পর্কে আমি জানি। এ বলে তিনি মুফাসসাল সূরা সমূহের বিশটি সূরার কথা উল্লেখ করে বলেন, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রতি রাকাআতে এর দুটি করে সূরা পড়তেন।
হাদিস ৭৪০
মূসা ইবনে ইসমাঈল রহ…….আবু কাতাদা রা. থেকে বর্ণিত যে, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যুহরের প্রথম দু’রাকাআতে সূরা ফাতিহা ও দুটি সুরা পড়তেন এবং শেষ দু’রাকাআতে সূরা ফাতিহা পাঠ করতেন এবং তিনি কোন কোন আয়াত আমাদের শোনাতেন, আর তিনি প্রথম রাকাআতে যতটুকু দীর্ঘ করতেন, দ্বিতীয় রাকাআতে ততটুকু দীর্ঘ করতেন না। এরূপ করতেন আসরে এবং ফজরেও।
হাদিস ৭৪১
কুতাইবা রহ………আবু মামার রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমরা খাব্বাব রা.-কে জিজ্ঞাসা করলাম, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কি যুহর ও আসরের সালাতে কিরাআত পড়তেন ? তিনি বললেন, হ্যাঁ। আমরা জিজ্ঞাসা করলাম, কি করে বুঝলেন ? তিনি বললেন, তাঁর দাঁড়ি মুবারকের নড়াচড়া দেখে।
হাদিস ৭৪২
মুহাম্মদ ইবনে ইউসুফ রহ………আবু কাতাদা রা. থেকে বর্ণিত যে, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যুহর ও আসরের সালাতের প্রথম দু’রাকাআতে সূরা ফাতিহার সাথে আরেকটি সূরা পড়তেন। কখনো কোন কোন আয়াত আমাদের শুনিয়ে পড়তেন এবং তিনি প্রথম রাকাআতে কিরাআত দীর্ঘ করতেন।
হাদিস ৭৪৩
আবু নুআইম রহ……….আবু কাতাদা রা. থেকে বর্ণিত যে, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যুহরের সালাতের প্রথম রাকাআতে কিরাআত দীর্ঘ করতেন ও দ্বিতীয় রাকাআতে সংক্ষিপ্ত করতেন এবং এরূপ করতেন ফযরের সালাতেও।
হাদিস ৭৪৪
আবদুল্লাহ ইবনে ইউসুফ রহ…….আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত যে, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন : ইমাম যখন ‘আমীন’ বলেন, তখন তোমরাও ‘আমীন’ বল। কেননা, যার ‘আমীন’ (বলা) ও ফেরেশতাদের ‘আমীন’ (বলা) এক হয়, তার পূর্বের সব গুনাহ মাফ করে দেওয়া হয়। ইবনে শিহাব রহ. বলেন, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও ‘আমীন’ বলতেন।
হাদিস ৭৪৫
আবদুল্লাহ ইবনে ইউসুফ রহ……….আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত যে, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন : যখন তোমাদের কেউ (সালাতে) ‘আমীন’ বলে, আর আসমানে ফেরেশতাগণ ‘আমীন’ বলেন এবং উভয়ের ‘আমীন’ একই সময় হলে, তার পূর্ববর্তী সব গুনাহ মাফ করে দেওয়া হয়।
হাদিস ৭৪৬
আবদুল্লাহ ইবনে মাসলাম রহ……..আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত যে, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন : ইমাম غير المغضوب عليهم ولا الضالين পড়লে তোমরা ‘আমীন’ বল। কেননা, যার এ (আমীন) বলা ফেরেশতাদের (আমীন) বলার সাথে একই সময় হয়, তার পূর্বের সব গুনাহ মাফ করে দেওয়া হয়। মুহাম্মদ ইবনে আমর রহ. আবু সালামা রহ. সূত্রে আবু হুরায়রা রা. -এর মাধ্যমে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে এবং নুআইম-মুজমির রহ. আবু হুরায়রা রা. থেকে হাদীস বর্ণনায় সুমাই রহ. এর অনুসরণ করেছেন।