হাদিস ৭০৯
ইবনে আবু মারইয়াম রহ……..আসমা বিনতে আবু বকর রা. থেকে বর্ণিত যে, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একবার সালাতুল কুসুফ (সূর্য গ্রহণের সালাত) আদায় করলেন। তিনি সালাতে দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকলেন। তারপর রুকুতে গেলেন এবং দীর্ঘক্ষণ থাকলেন। তারপর দাঁড়ালেন এবং দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকলেন। তারপর আবার রুকুতে গেলেন এবং দীর্ঘক্ষণ রুকুতে থাকলে। এরপর উঠলেন, পরে সিজদায় গেলেন এবং দীর্ঘক্ষণ সিজদায় থাকলেন। আবার সিজদায় গেলেন এবং দীর্ঘক্ষণ সিজদায় থাকলেন। এরপর আবার দাঁড়ালেন এবং দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকলেন। আবার রুকুতে গেলেন এবং দীর্ঘক্ষণ রুকুতে থাকলেন। এরপর রুকু থেকে উঠে আবার দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকলেন এবং আবার রুকুতে গেলেন এবং দীর্ঘক্ষণ থাকলেন। এরপর রুকু থেকে উঠে সিজদায় গেলেন এবং দীর্ঘক্ষণ সিজদায় থাকলেন। তারপর উঠে সিজদায় গেলেন এবং দীর্ঘক্ষণ সিজদায় থাকলেন। এরপর সালাত শেষ করে ফিরে দাঁড়িয়ে বললেন : জান্নাত আমার খুবই নিকটে এসে গিয়েছির এমনকি আমি যদি চেষ্টা করতাম তা হলে জান্নাতের একগুচ্ছ আঙ্গুর তোমাদের এনে দিতে পারতাম। আর জাহান্নামও আমার একেবারে নিকটবর্তী হয়ে গিয়েছিল। এমনকি আমি বলে উঠলাম, ইয়া রব! আমিও কি তাদের সাথে? আমি একজন স্ত্রী লোককে দেখতে পেলাম। আমি জিজ্ঞাসা করলাম, এ স্ত্রী লোকটির এমন অবস্থা কেন ? ফেরেশতাগণ জবাব দিলেন, সে একটি বিড়ালকে আটকিয়ে রেখেছিল, ফলে বিড়ালটি অনাহারে মারা যায়। উক্ত স্ত্রী লোকটি তাকে খেতেও দেয়নি এবং তাকে ছেড়েও দেয়নি, যাতে সে আহার করতে পারে। নাফি রহ. বলেন, আমার মনে হয়, (ইবনে আবু মুলায়কা রা. বর্ণনা করেছিলেন, যাতে সে যমীনের পোকা মাকড় খেতে পারে।
হাদিস ৭১০
মূসা রহ…….আবু মামার রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমরা খাব্বাব রা.-কে জিজ্ঞাসা করলাম, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আপনারা কি করে বুঝতে পারতেন ? তিনি বলনে, তাঁর দাঁড়িয়ে নড়াচড়া দেখে।
হাদিস ৭১১
হাজ্জাজ রহ…….বারা রা. থেকে বর্ণিত, আর তিনি মিথ্যাবাদী ছিলেন না, তাঁরা যখন নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সঙ্গে সালাত আদায় করতেন, তখন রুকু থেকে মাথা উঠিয়ে সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে দেখতেন যে, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সিজদায় গেছেন।
হাদিস ৭১২
ইসমাঈল রহ………আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর যুগে একবার সূর্যগ্রহণ হয়েছিল। তখন তিনি এজন্য সালাত আদায় করেন। সাহাবায়ে কিরাম রা. জিজ্ঞাসা করলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ ! সালাতে দাঁড়ানো অবস্থায় আপনাকে দেখলাম যেন কিছু একটা ধরতে যাচ্ছিলেন, কিন্তু পরে দেখলাম, আবার পিছিয়ে এলেন। তিনি বললেন, আমাকে জান্নাত দেখানো হয় এবং তারই একটি আঙ্গুরের ছড়া নিতে যাচ্ছিলাম। আমি যদি তা নিয়ে আসতাম, তাহলে দুনিয়ার স্থায়িত্বকাল পর্যন্ত তোমরা তা থেকে খেতে পারতে।
হাদিস ৭১৩
মুহাম্মদ ইবনে সিনান রহ…….আনাস ইবনে মালিক রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের নিয়ে সালাত আদায় করলেন। তারপর তিনি মিম্বরে আরোহণ করলেন এবং মসজিদের কিবলার দিকে ইশারা করে বললেন, এইমাত্র আমি যখন তোমাদের নিয়ে সালাত আদায় করছিলাম তখন এ দেওয়ালের সামনের দিকে আমি জান্নাত ও জাহান্নামের প্রতিচ্ছবি দেখতে পেলাম। আজকের মত এত মঙ্গল ও অমঙ্গল আমি আর দেখিনি, একথা তিনি তিনবার বললেন।
হাদিস ৭১৪
আলী ইবেন আবদুল্লাহ রহ……..আনাস ইবনে মালিক রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন : লোকদের কি হল যে, তারা সালাতে আকাশের দিকে চোখ তুলে তাকায় ? এ ব্যাপারে তিনি কঠোর বক্তব্য রাখলেন ; এমনকি তিনি বললেন : যেন তারা অবশ্যই এ থেকে বিরত থাকে, অন্যথায় অবশ্যই তাদের দৃষ্টিশক্তি কেড়ে নেওয়া হবে।
হাদিস ৭১৫
মুসাদ্দাদ রহ………আয়িশা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে সালাতে এদিক ওদিক তাকানো সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলাম। তিনি বললেন : এটা এক ধরণের ছিনতাই, যার মাধ্যমে শয়তান বান্দার সালাত ও কে অংশ বিশেষ কেড়ে নেয়।
হাদিস ৭১৬
কুতাইবা রহ…….আয়িশা রা. থেকে বর্ণিত, একবার নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একটি নকশা করা চাদর পরে সালাত আদায় করলেন। সালাতের পর তিনি বললেন : এ চাদরের কারুকার্য আমার মনকে নিবিষ্ট করে রেখেছিল। এটি আবু জাহমের কাছে নিয়ে যাও এবং এর পরিবর্তে একটি ‘আম্বজানিয়্যাহ’ নিয়ে এস।
হাদিস ৭১৭
কুতাইবা রহ……..ইবনে উমর রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম লোকদের সামনে দাঁড়িয়ে সালাত আদায় করছিলেন, এমতাবস্থায় মসজিদে কিবলার দিকে থুথু দেখতে পেয়ে তা পরিষ্কার করে ফেললেন। তারপর তিনি সালাত শেষ করে বললেন : তোমাদের কেউ যখন সালাতে থাকে, তখন আল্লাহ তার সামনে থাকেন। কাজেই সালাতে থাকা অবস্থায় কেউ সামনের দিকে থুথু ফেলবে না। মূসা ইবনে উকবা ও ইবনে আবু রাওয়াদ রহ. নাফি রহ. থেকেও হাদীসটি বর্ণনা করেছেন।