হাদিস ৬৮৯
আমর ইবন খালিদ (র.)………… আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, নবী (করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেনঃ তোমরা তোমাদের কাতার সোজা করে নাও। কেননা, আমি আমার পেছনের দিক থেকেও তোমাদের দেখতে পাই। (আনাস (রাঃ) বলেন) আমাদের প্রত্যেকেরই তার পাশ্ববর্তী ব্যক্তির কাঁধের সাথে কাঁধ এবং পায়ের সাথে পা মিলাতাম।
হাদিস ৬৯০
কুতাইবা ইবন সায়ীদ (র.)………… ইবন আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, একরাতে আমি নবী (করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর সঙ্গে সালাত আদায় করতে গিয়ে তাঁর বামপাশে দাঁড়ালাম। তিনি আমার মাথার পেছনের দিক ধরে তাঁর ডানপাশে নিয়ে এলেন্তারপর সালাত আদায় করে শুয়ে পড়লেন। পড়ে তার কাছে মুয়াজ্জিন এলো। তিনি উঠে সালাত আদায় করলেন, কিন্তু (নতুনভাবে) উযু করেন নি।
হাদিস ৬৯১
আবদুল্লাহ ইবন মুহাম্মদ (র.)………… আনাস ইবন মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, একবার আমাদের ঘরে আমি ও একটি ইয়াতিম ছেলে নবী (করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর পেছনে দাঁড়িয়ে সালাত আদায় করলাম। আর আমার মা উম্মে সুলাইম (রাঃ) আমাদের পেছনে দাঁড়িয়ে ছিলেন।
হাদিস ৬৯২
মুসা (র.)………… ইবন আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, একরাতে আমি সালাত আদায়ের জন্য নবী (করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর বামপাশে দাঁড়ালাম। তিনি আমার হাত বা বাহু ধরে তাঁর ডানপাশে দাঁড় করালেন এবং তিনি তাঁর হাতের ইশারায় বললেন, আমার পেছনের দিক দিয়ে।
হাদিস ৬৯৩
মুহাম্মদ (ইবন সালাম) (র.)………… আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) রাতের সালাত তাঁর নিজ কামরায় আদায় করতেন। কামরার দেয়ালটি ছিল নিচু। ফলে একদিন সাহাবীগণ নবী (করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর শরীর মুবারক দেখতে পেলেন এবং (দেয়ালের অপর পার্শ্বে) সাহাবীগণ দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে তাঁর সহিত সালাত আদায় করলেন। সকালে তারা একথা বলাবলি করছিলেন। দ্বিতীয় রাতে তিনি (সালাতে) দাঁড়ালেন। সাহাবীগণ দাঁড়িয়ে তাঁর সাথে সালাত আদায় করলেন। দু’ বা তিন রাত তারা এরূপ করলেন। এরপর (রাতে) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বসে থাকলেন, আর বের হলেন না। ভোরে সাহাবীগণ এ বিষয়ে আলোচনা করলেন। তখন তিনি বললেনঃ আমার আশঙ্কা হচ্ছিল যে, রাতের সালাত তোমাদের উপর ফরয করে দেয়া হতে পারে।
হাদিস ৬৯৪
ইব্রাহীম ইবন মুনযির (র.)………… আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, নবী (করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর একটি চাটাই ছিল। তিনি তা দিনের বেলায় বিছিয়ে রাখতেন এবং রাতের বেলায় তা দিয়ে কামরা বানিয়ে নিতেন। সাহাবীগণ তাঁর পেছনে কাতার বন্দী হয়ে দাঁড়ান এবং পেছনে সালাত আদায় করেন।
হাদিস ৬৯৫
আবদুল আলা ইবন হাম্মদ (র.)………… যায়িদ ইবন সাবিত (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) রমযান মাসে একটি ছোট কামরা বানালেন। তিনি (বুসর ইবন সায়ীদ (রা.) বলেন, মনে হয়, (যায়িদ ইবন সাবিত (রাঃ) কাম্রাটি চাটাইর তৈরী ছিল বলে উল্লেখ করেছিলেন। তিনি সেখানে কয়েক রাত সালাত আদায় করেন। আর তাঁর সাহাবীগনের মধ্যে কিছু সাহাবীও তাঁর সঙ্গে সালাত আদায় করতেন। তিনি যখন তাঁদের সম্বন্ধে জানতে পারলেন, তখন তিনি বসে থাকলেন। পড়ে তিনি তাঁদের কাছে এসে বললেন, তোমাদের কার্যকলাপ দেখে আমি বুঝতে পেরেছি। হে লোকেরা! তোমরা তোমাদের ঘরেই সালাত আদায় কর। কেননা, ফজর সালাত ব্যতীত লোকেরা ঘরে যে সালাত আদায় করে তা-ই উত্তম। আফফান (র.)………… যায়িদ ইবন সাবিত (রাঃ) সূত্রে নবী (করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) থেকে অনুরূপ বলেছেন।
হাদিস ৬৯৬
আবুল ইয়ামান (র.)………… আনাস ইবন মালিক আনসারী (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, একবার রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ঘোড়ায় চড়েন। ফলে তাঁর ডান পাঁজরে আঁচড় লাগে। আনাস (রাঃ) বলেন, এ সময় কোন এক সালাত আমাদের নিয়ে তিনি বসে আদায় করলেন। আমরাও তাঁর পেছনে বসে সালাত আদায় করি। সালাম ফেরানোর পর তিনি বললেনঃ ইমাম নির্ধারণ করা হয় তাঁকে অনুসরণ করার জন্যই। তাই তিনি যখন দাঁড়িয়ে সালাত আদায় করেন তখন তোমরাও দাঁড়িয়ে সালাত আদায় করবে। আর তিনি যখন রুকু করেন তখন তোমরাও রুকু করবে। তিনি যখন সিজদা করেন তখন তোমরাও সিজদা করবে। তিনি যখন ‘সামিয়াল্লাহু লিমান হামিদাহ’ বলবে তখন তোমরা রাব্বানা লাকাল হামদ’ বলবে।
হাদিস ৬৯৭
কুতাইবা ইবন সায়ীদ (র.)………… আনাস ইবন মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ঘোড়া থেকে পড়ে গিয়ে আহত হন। তাই তিনি আমাদের নিয়ে বসে সালাত আদায় করেন। আমরাও তাঁর সঙ্গে বসে সালাত আদায় করি। তারপর তিনি ফিরে বললেনঃ ইমাম অনুসরণের জন্যই বা তিনি বলেছিলেন, ইমাম নির্ধারন করা হয় তাঁর অনুসরনের জন্য। তাই যখন তিনি তাকবীর বলেন, তখন তোমরাও তাকবীর বলবে, যখন রুকু করেন তখন তোমরাও রুকু করবে। যখন তিনি উঠেন তখন তোমরাও উঠবে। তিনি যখন ‘সামিয়াল্লাহু লিমান হামিদাহ’ বলবে তখন তোমরা রাব্বানা লাকাল হামদ’ বলবে এবং তিনি যখন সিজদাহ করেন তখন তোমরাও সিজদা করবে।