হাদিস ৬৭১
আবু মা’মার (র.)………… আনাস ইবন মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী (করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) সালাত সংক্ষেপে এবং পুর্ণভাবে আদায় করতেন।
হাদিস ৬৭২
ইব্রাহীম ইবন মুসা (র.)………… আবু কাতাদা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, নবী (করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, আমি অনেক সময় দীর্ঘ করে সালাত আদায়ের ইচ্ছা নিয়ে দাঁড়াই। পরে শিশুর কান্নাকাটি শুনে সালাত সংক্ষেপ করি। কারন আমি পছন্দ করি না যে, শিশুর মাকে কষ্টে ফেলি। বিশর ইবন বাকর, বাকিয়্যা ও ইবন মোবারক আওযারী (র.) থেকে হাদীস বর্ণনায় ওয়ালীদ ইবন মুসলিম (র.) এর অনুসরণ করেছেন।
হাদিস ৬৭৩
খালিদ ইবন মাখলাদ (র.)………… আনাস ইবন মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত, আমি নবী (করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর চেয়ে সংক্ষিপ্ত এবং পুর্ণাঙ্গ সালাত কোন ইমামের পেছনে কখনো পড়িনি। আর তা এ জন্য যে, তিনি শিশুর কান্না শুনতে পেতেন এবং তার মায়ের ফিতনায় পড়ার আশঙ্কায় সংক্ষেপ করতেন।
হাদিস ৬৭৪
আলী ইবন আবদুল্লাহ (র.)………… আনাস ইবন মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী (করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ আমি দীর্ঘ করার ইচ্ছা নিয়ে সালাত শুরু করি। কিন্তু পরে শিশুর কান্না শুনে আমার সালাত সংক্ষেপ করে ফেলি। কেননা, শিশু কাঁদলে মায়ের মন যে অত্যন্ত বিচলিত হয়ে পড়ে তা আমি জানি।
হাদিস ৬৭৫
মুহাম্মদ ইবন বাশশার (র.)………… আনাস ইবন মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, নবী (করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ আমি দীর্ঘ করার ইচ্ছা নিয়ে সালাত শুরু করি এবং শিশুর কান্না শুনে আমার সালাত সংক্ষেপ করে ফেলি। কেননা, শিশু কাঁদলে মায়ের মন যে অত্যন্ত বিচলিত হয়ে পড়ে তা আমি জানি। মুসা (র.)………… আনাস (রাঃ) সূত্রে নবী (করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) থেকে অনুরূপ বর্ণনা করেন।
হাদিস ৬৭৬
সুলাইমান ইবন হারব ও আবু নু’মান (র.)………… জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, মু’আয (রাঃ) নবী (করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর সঙ্গে সালাত আদায় করে নিজ গোত্রে ফিরে গিয়ে তাঁদের ইমামতি করতেন।
হাদিস ৬৭৭
মুসাদ্দাদ (র.)………… আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী (করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) অন্তিম রোগে আক্রান্ত থাকা কালে একবার বিলাল (রাঃ) তাঁর নিকট এসে সালাতের (সময় হয়েছে বলে) সংবাদ দিলেন। নবী (করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেনঃ আবু বকরকে বল, যেন লোকদের নিয়ে সালাত আদায় করে। (আয়িশা (রাঃ) বললেন), আমি বললাম, আবু বকর (রাঃ) কোমল হৃদয়ের লোক, তিনি আপনার স্থানে দাঁড়ালে কেঁদে ফেলবেন এবং কিরাআত পড়তে পারবেন না। তিনি আবার বললেনঃ আবু বকরকে বল, সালাত আদায় করতে। আমি আবারও সে কথা বললাম। তখন তৃতীয় বা চতুর্থবারে তিনি বললেন, তোমরা তো ইউসুফের (আঃ) সাথী রমণীদেরই মত। আবু বকরকে বল, সে যেন লোকদের নিয়ে সালাত আদায় করে। আবু বকর (রাঃ) লোকদের নিয়ে সালাত আদায় করতে লাগলেন। ইতিমধ্যে নবী (করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) দু’জনের কাঁধে ভর করে বের হলেন। (আয়িশা (রাঃ) বললেন) আমি যেন এখনও সে দৃশ্য দেখতে পাই। তিনি দু’পা মুবারাক মাটির উপর দিয়ে হেঁচড়িয়ে যান। আবু বকর (রাঃ) তাঁকে দেখতে পেয়ে পেছনে সরে আসতে লাগলেন। নবী (করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ইশারায় তাঁকে সালাত আদায় করতে বললেন, (তবুও) আবু বকর (রাঃ) পেছনে সরে আসলেন। নবী (করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তাঁর পাশে বসলেন, আবু বকর (রাঃ) তাকবীর শুনাতে লাগলেন। মুহাযির (র.) আমাশ (র.) থেকে হাদীস বর্ণনায় আবদুল্লাহ ইবন দাউদ (র.) এর অনুসরণ করেছেন।
হাদিস ৬৭৮
কুতাইবা ইবন সায়ীদ (র.)………… আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) যখন পীড়িত হয়ে পড়েছিলেন, বিলাল (রাঃ) এসে সালাতের কথা বললেন। নবী (করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, আবু বকরকে বল, লোকদের নিয়ে সালাত আদায় করতে। আমি বললাম, ইয়া রাসূলুল্লাহ! আবু বকর অত্যন্ত কোমল হৃদয়ের ব্যক্তি। তিনি যখন আপনার স্থানে দাঁড়াবেন, তখন সাহাবীগণকে কিছুই শুনাতে পারবেন না। যদি আপনি উমর (রাঃ) কে নির্দেশ দেন (তাহলে ভালো হয়)। তিনি (রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আবার বললেনঃ লোকদের নিয়ে আবু বকরকে সালাত আদায় করতে বল। আমি হাফসা (রাঃ) কে বললাম, তুমি তাঁকে একটু বল যে, আবু বকর (রাঃ) অত্যন্ত কোমল হৃদয়ের ব্যক্তি। তিনি যখন আপনার পরিবর্তে সে স্থানে দাঁড়াবেন, তখন সাহাবীগণকে কিছুই শুনাতে পারবেন না। যদি আপনি উমর (রাঃ) কে নির্দেশ দেন (তাহলে ভালো হত)। এ শুনে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেনঃ তোমরা ইউসুফের সাথী রমণীদেরই মত। আবু বকর (রাঃ) কে লোকদেরকে নিয়ে সালাত আদায় করতে বল। আবু বকর (রাঃ) লোকদের নিয়ে সালাত আদায় শুরু করলেন। তখন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) নিজে একটু সুস্থ বোধ করলেন এবং দু’জন সাহাবীর কাঁধে ভর দিয়ে উঠে দাঁড়িয়ে মসজিদে গেলেন। তাঁর দু’পা মুবারক মাটির উপর দিয়ে হেঁচড়ে যাচ্ছিল। আবু বকর (রাঃ) যখন তাঁর আগমন আঁচ করলেন, পেছনে সরে যেতে উদ্যত হলেন। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তাঁর প্রতি ইশারা করলেন (পিছিয়ে না যাওয়ার জন্য)। তারপর তিনি এসে আবু বকর (রাঃ) এর বাম পাশে গেলেন। অবশেষে আবু বকর (রাঃ) দাঁড়িয়ে সালাত আদায় করছিলেন। আর সাহাবীগণ হযরত আবু বকর (রাঃ) এর সালাতের অনুসরণ করছিল।