————
১. এ হুকুমের পরে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর মৃত্যু রোগের ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে রহিত হয়ে গেছে। কাজেই ইমাম বসে সালাত আদায় করলে সক্ষম মুক্তাদি দাঁড়িয়ে সালাত আদায় করবেন।
হাদিস ৬৫৫
আবদুল্লাহ ইবন ইউসুফ (র.)………… আনাস ইবন মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, একবার রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ঘোড়ায় সাওয়ার হন এরপর তিনি তা থেকে পড়ে যান, এতে তাঁর ডান পাশে একটু আঘাত লাগে। তিনি কোন এক ওয়াক্তের সালাত বসে আদায় করেছিলেন, আমরাও তাঁর পেছনে বসে সালাত আদায় করলাম। সালাত শেষ করার পর তিনি বললেন, ইমাম নির্ধারণই করা হয় তাঁর ইক্তিদা করার জন্য। কাজেই ইমাম যখন দাঁড়িয়ে সালাত আদায় করে তখন তোমরাও দাঁড়িয়ে সালাত আদায় করবে, সে যখন রুকু করে তখন তোমরাও রুকু করবে, সে যখন উঠে, তখন তোমরাও উঠবে, আরা সে যখন ‘সামিয়াল্লাহু লিমান হামিদাহ’ বলে তোমরাও তখন ‘রব্বানা ওয়ালাকাল হামদ’ বলবে। আর সে যখন বসে সালাত আদায় করবে, তখন তোমরা সবাই বসে সালাত আদায় করবে। আবু আবদুল্লাহ ইমাম বুখারী (র.) বলেন, হুমাইদী (র.) বলেছেন যে, যখন ইমাম বসে সালাত আদায় করেন, তখন তোমরাও বসে সালাত আদায় করবে। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর নির্দেশ ছিল পূর্বে অসুস্থকালীন। এরপর তিনি বসে সালাত আদায় করেন এবং সাহাবীগণ তাঁর পেছনে দাঁড়িয়ে সালাত আদায় করছিলেন, কিন্তু তিনি তাদের বসতে নির্দেশ দেননি। আর রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর আমলের মধ্যে সর্বশেষ আমলই গ্রহণীয়।
হাদিস ৬৫৬
মুসাদ্দার (র.)………… বারা’আ (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি মিথ্যাবাদী নন১ তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ‘সামিয়াল্লাহু লিমান হামিদাহ’ বলার পর যতক্ষণ পর্যন্ত সিজদায় না যেতেন, ততক্ষণ পর্যন্ত আমাদের কেউ পিঠ বাঁকা করতেন না। তিনি সিজদায় যাওয়ার পর আমরা সিজদায় যেতাম।
হাদিস ৬৫৭
আব নু’আইম (র.)………… সুফিয়ান (র.) সূত্রে আবু ইসহাক (র.) থেকে অনুরূপ বর্ণনা করেছেন।
হাদিস ৬৫৮
হাজ্জাজ ইবন মিনহাল (র.)………… আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, নবী (করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, তোমাদের কেউ যখন ইমামের আগে মাথা উঠিয়ে ফেলে, তহন সে কি ভয় করে না যে, আল্লাহ্তা’লা তাঁর মাথা গাধার মাথায় পরিণত করে দিবেন, তাঁর আকৃতি গাধার আকৃতি করে দেবেন।
হাদিস ৬৫৯
ইব্রাহীম ইবন মুনযির (র.)………… আবদুল্লাহ ইবন উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন যে, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর মদিনায় আগমনের পূর্বে মুহাজিরগণের প্রথম দল যখন কুবা এলাকার কোন এক স্থানে এলেন, তখন আবু হুযাইফা (রাঃ) এর আযাদকৃত গোলাম সালিম (রাঃ) তাঁদের ইমামতি করতেন। তাঁদের মধ্যে তিনি কোরআন সম্পর্কে অধিক অভিজ্ঞ ছিলেন।
হাদিস ৬৬০
মুহাম্মদ ইবন বাশশার (র.)………… আনাস ইবন মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত, নবী (করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ তোমরা শোন ও আনুগত্য প্রকাশ কর, যদিও তোমাদের উপর এমন কোন হাবশীকে আমীর নিযুক্ত করা হয় – যার মাথা কিসমিসের মতো।
হাদিস ৬৬১
ফাযল ইবন সাহল (র.)………… আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ তারা তোমাদের ইমামতি করে। যদি তারা সঠিকভাবে আদায় করে তা হলে তার সাওয়াব তোমরা পাবে। আর যদি তারা ত্রুটি করে, তাহলে তোমাদের জন্য সাওয়াব রয়েছে, আর ত্রুটি তাদের (ইমামের) উপরই বর্তাবে।
হাদিস ৬৬২
মুহাম্মদ ইবন আবান (র.)………… আনাস (ইব্ন মালিক) (রাঃ) থেকে বর্ণিত, নবী (করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আবু যার্ব (রাঃ) কে বলেন, শোন এবং আনুগত্য কর, যদিও কোন হাবশী আমীর হয়-যার মাথা কিসমিসের মতো।
আবু আবদুল্লাহ ইমাম বুখারী (র.) বলেন, আমাকে মোহাম্মদ ইবন ইউসুফ (র.) উবাইদুল্লাহ ইবন আদী ইবন খিয়ার (র.) থেকে বর্ণনা করেছেন যে, তিনি উসমান ইবন আফফান (রাঃ) অবরুদ্ধ থাকাকালে তাঁর নিকট গিয়ে বললেন, প্রকৃতপক্ষে আপনিই জনগনের ইমাম। আর আপনার বিপদ তো নিজেই বুঝতে পারছেন। আর আমাদের ইমামতি করছে কখনো বিদ্রোহীদের ইমাম। ফলে আমরা গুনাহগার হওয়ার আশঙ্কা করছি। তিনি বলেন, মানুষের আমলের মধ্যে সালাতই সর্বোত্তম। কাজেই লোকেরা যখন উত্তম কাজ করে, তখন তুমিও তাদের সাথে উত্তম কাজে শরীক হবে, আর যখন তারা মন্দ কাজে লিপ্ত হয়, তখন তাঁদের অপকর্ম থেকে বেঁচে থাকবে। যুবাইদী (র.) বর্ণনা করেন যে, যুহরী (র.) বলেছেন, যারা স্বেচ্ছায় নপুংসক সাজে, তাদের পেছনে একান্ত প্রয়োজন ছাড়া সালাত আদায় করা সঙ্গত বলে মনে করি না।
হাদিস ৬৬৩
সুলাইমান ইবন হারব (র.)………… ইবন আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, একদা আমি আমার খালা মায়মুনা (রাঃ) এর ঘরে রাত যাপন করলাম। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ইশার সালাত আদায় করে আসলেন এবং চার রাকাআত সালাত আদায় করে শুয়ে পড়লেন। কিছুক্ষণ পর উঠে সালাতে দাঁড়ালেন। তখন আমিও তাঁর বামপাশে দাঁড়ালাম। তিনি আমাকে তাঁর ডানপাশে নিয়ে নিলেন এবং পাঁচ রাকাআত সালাত আদায় করলেন। এরপর আরো দু’রাকাত সালাত আদায় করে নিদ্রায় গেলেন। এমনকি আমি তাঁর নাক ডাকার আওয়াজ শুনলাম। তারপর তিনি (উঠে ফজরের) সালাতের জন্য বেরিয়ে গেলেন।