হাদিস ৫০২
আবুল ওয়ালীদ হেশাম ইব্ন আবদুল মালেক (র.)…..আবূ আমর শাবানী (র.) থেকে বর্ণিত, তিনি আবদুল্লাহ্ইব্ন মাসঊদ (রা.)- এর বাড়ীর দেকে ইশারা করে বলেন, এ বাড়ীর মালিক আমাদের কাছে বর্ণনা করেছেন, আমি রাসূলুল্লাহ্(সা.)- কে জিজ্ঞাস করলাম, কোন্আমল আল্লাহর নিকট অধিক প্রিয়? তিনি বললেন, ‘যথাসময়ে সালাত আদায় করা। ইবন্মাসঊদ (রা.) পুনরায় জিজ্ঞাসা করলেন, এরপর কোন্টি? তিনি বললেন, এরপর পিতা-মাতার প্রতি সদ্ব্যবহার। ইবন্মাসঊদ (রা.) আবার জিজ্ঞাস করলেন, এরপর কোন্টি? রাসূলুল্লাহ্(সা.) বললেন, এরপর জিহাদ ফী সাবীলিল্লাহ্(আল্লাহর পথে জিহাদ)। ইব্ন মাসঊদ (রা.) বলেন, এগুলো তো রাসূলুল্লাহ্(সা.) আমাকে বলেছেনই, যদি আমি আরও বেশী জানতে চাইতাম, তাহলে তিনি আরও বলতেন।
হাদিস ৫০৩
ইব্রাহীম ইব্ন হামযা (র.) …… আবূ হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি রাসূলুল্লাহ্(সা.) – কে বলতে শুনেছেন, “বলত যদি তোমাদের কারো বাড়ীর সামনে একটি নদী থাকে, আর সে তাতে প্রত্যহ পাঁচবার গোসল করে, তাহলে কি তার দেহে কোন ময়লা থাকবে?” তারা বললেন, তার দেহে কোনরূপ ময়লা বাকী থাকবে না। রাসূলুল্লাহ্(সা.) বললেনঃ এ হল পাঁচ ওয়াক্ত সালাতের উদাহরণ। এর মাধ্যমে আল্লাহ্তা’আলা (বান্দার) গুনাহসমূহ মিটিয়ে দেন।
হাদিস ৫০৪
মূসা ইব্ন ইসমায়ীল (র.)…..আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আজকাল কোন জিনিসই সে অবস্থায় পাই না, যেমন নবী (সা.) – এর যুগে ছিল। প্রশ্ন করা হল, সালাতও কি? তিনি বললেন, সে ক্ষেএেও যা হক নষ্ট করার তা-কি তোমরা করনি?
হাদিস ৫০৫
আমর ইবনে যুরারা (র.)……যুহরী (র.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি দামেশ্কে আনাস ইব্ন মালিক (রা.)-এর নিকট উপস্থিত হলাম, তিনি তখন কাঁদছিলেন। আমি তাঁকে জিজ্ঞাসা করলাম, আপনি কাঁদছেন কেন? তিনি বললেন, রাসূলুল্লাহ্(সা.)-এর যুগে যা কেছু পেয়েছি তার মধ্যে কেবলমাএ সালাত ছাড়া আর কিছুই বহাল নেই। কিন্তু সালাতকেও নষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। বাক্র (র.) বলেন, আমার কাছে মুহাম্মাদ ইব্ন বক্র বুরসানী (র.) উসমান ইবন্আবূ রাওওয়াদ (র.) সূএে অনুরূপ বর্ণনা করেছেন।
হাদিস ৫০৬
মুসলিম ইবন্ইব্রাহীম (র.) ……আনাস ইব্ন মালিক (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী (সা.) বলেছেনঃ তোমাদের কেউ যখন সালাতে দাঁড়ায়, তখন সে তার প্রতিপালকের সঙ্গে গোপনে কথা বলে। কাজেই, সে যেন ডানদিকে থুথু না ফেলে, তবে (প্রয়োজনে) বাম পায়ের নীচে ফেলতে পারে। তবে সায়ীদ (র.) কাতাদা (র.) থেকে বর্ণনা করেছেন, সে যেণ সামনের দিকে থুথু না ফেলে, কিন্তু বামদিকে অথবা পায়ের নীচে ফেলতে পারে। আর শু’বা (র.) বলেন, সে যেন কিব্লার দিকে অথবা ডান দিকে থুথু না ফেলে, কিন্তু বামদিকে অথবা পায়ের নীচে ফেলতে পারে। আর হুমাইদ (র.) আনাস (রা.) সূএে নবী (সা.) থেকে বর্ণনা করেন, সে যেন কিব্লার দিকে বা ডানদিকে থুথু না ফেলে, কিন্তু বামদিকে অথবা পায়ের নীচে ফেলতে পারে।
হাদিস ৫০৭
হাফ্সা ইব্ন উমর (র.)……আনাস ইব্ন মালিক (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী (সা.) বলেছেনঃ তোমরা সিজদায় মধ্যপন্থা অবলম্বন কর। তোমাদের কেউ যেন তার বাহুদ্বয় বিছিয়ে না দেয় কুকুরের মত। আর যদি থুথু ফেলতে হয়, তাহলে সে যেন সমনে বা ডানে না ফেলে। কেননা, সে তখন তার প্রতিপালকের সঙ্গে গোপন কথায় লিপ্ত থাকে।
হাদিস ৫০৮
আয়্যূব ইব্ন সুলাইমান (র.)……আবূ হুরায়রা ও আবদুল্লাহ্ইব্ন উমর (রা.) থেকে বর্ণিত যে, রাসূলুল্লাহ্(সা.) বলেছেনঃ যখন গরমের প্রচণ্ডতা বৃদ্ধি পায়, তখন গরম কমলে সালাত আদায় করবে। কেননা, গরমের প্রচণ্ডতা জাহান্নামের নিঃশ্বাসের অংশ।
হাদিস ৫০৯
মুহাম্মদ ইব্ন বাশা্শার (র.)…… আবূ যার্র (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্(সা.) – এর মুআয্যিন আযান দিলে তিনি বললেনঃ ঠান্ডা হতে দাও। আথবা তিনি বললেন, অপেক্ষা কর, অপেক্ষা কর। তিনি আরও বলেন, গরমের প্রণ্ডতা জাহান্নামের নিঃশ্বাসের ফলেই সৃষ্টি হয়। কাজেই গরম যখন বেড়ে যায় তখন গরম কমলেই সালাত আদায় করবে। এমনকি (বিলম্ব করতে করতে বেলা এতটুকু গড়িয়ে গিয়েছিল যে) আমরা টিলাগুলোর ছায়া দেখতে পেলাম।
হাদিস ৫১০
আলী ইব্ন আবদুল্লাহ্মাদীনী (র.)……আবূ হূরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী (সা.) বলেছেনঃ যখন গরম বৃদ্ধি পায় তখন তোমরা তা কমে এলে (যুহরের) সালাত আদায় করো। কেননা, গরমের প্রচন্ডতা জাহান্নামের উওাপের অংশ। (তারপর তিনি বলেন), জাহান্নাম তার প্রতিপালকের কাছে এ বলে নালিশ করেছিল, হে আমার প্রতিপালক! (দহনের প্রচণ্ডতায়) আমার এক অংশ আর এক অংশকে হ্রাস করে ফলেছে। ফলে আল্লাহ্তা’আলা তাকে দু’টি শ্বাস ফেলার অনুমতি দিলেন, একটি শীতকালে আর একটি গ্রীষ্মকালে। আর সে দু’টি হলো, তোমরা গ্রীষ্মকালে যে প্রচণ্ঠ উত্তাপ এবং শীতকালে যে প্রচণ্ড থান্ডা অনুভব কর তাই।
হাদিস ৫১১
উমর ইব্ন হাফস (র.)……আবূ সায়ীদ (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্(সা.) বলেছেনঃ যুহরের সালাত গরম কমলে আদায় কর। কেননা, গরমের প্রচন্ডতা জাহান্নামের উত্তাপ থেকে। সুফিয়ান, ইয়াহ্ইয়া এবং আবূ আওয়ানা (র.) আ’মাশ (র.) থেকে অনুরূপ বর্ণনা করেছেন।