হাদিস ৬৩২
ইব্রাহীম ইবন মূসা (র.)………… আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) যখন একেবারে কাতর হয়ে গেলেন এবং তাঁর রোগ বেড়ে গেল, তখন তিনি আমার ঘরে সেবা-শুশ্রূষার জন্য তাঁর অন্যান্য স্ত্রীগণের কাছে সম্মতি চাইলেন। তাঁরা সম্মতি দিলেন। সে সময় দু’জন লোকের কাঁধে ভর দিয়ে (সালাতের জন্য) তিনি বের হলেন, তাঁর দু’পা মাটিতে হেঁচড়িয়ে যাচ্ছিলো। তিনি ছিলেন আব্বাসা (রাঃ) ও অপর এক সাহাবীর মাঝখানে। (বর্ননাকারী) উবায়দুল্লাহ (র.) বলেন, আয়িশা (রাঃ) এর বর্ণিত এ ঘটনা ইবন আব্বাস (রাঃ) এর নিকট ব্যক্ত করি। তিনি আমাকে জিজ্ঞাসা করলেন, তুমি কি জান, তিনি কে ছিলেন, যার নাম আয়েশা (রাঃ) বলেন নি? আমি বললাম, না। তিনি বললেন, তিনি ছিলেন আলী ইবন আবু তালিব (রাঃ)।
হাদিস ৬৩৩
আবদুল্লাহ ইবন ইউসুফ (র.)………… নাফি’ (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ইবন উমর (রাঃ) একবার প্রচন্ড শীত ও বাতাসের রাতে সালাতের আযান দিলেন। তারপর ঘোষণা দিলেন, প্রত্যেকে নিজ নিজ আবাসে সালাত আদায় করে নাও, এরপর তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) প্রচণ্ড শীত ও বৃষ্টির রাত হলে মুয়াজ্জিনকে এ কথা বলার নির্দেশ দিতেন – প্রত্যেকে নিজ নিজ আবাসে সালাত আদায় করে নাও।
হাদিস ৬৩৪
ইসমাইল (র.)………… মাহমুদ ইবন রাবী’ আল আনসারী (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ইতবান ইবন মালিক (রাঃ) তাঁর নিজ গোত্রের ইমামতি করতেন। তিনি ছিলেন অন্ধ। একদিন তিনি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) কে বললেন। ইয়া রাসূলুল্লাহ ! কখনো কখনো ঘোর অন্ধকার ও বর্ষণ প্রবাহ হয়ে পড়ে। অথচ আমি একজন অন্ধ ব্যক্তি। ইয়া রাসূলুল্লাহ ! আপনি আমার ঘরে কোন একস্থানে সালাত আদায় করুণ, যে স্থানটিকে আমার সালাতের স্থান হিসেবে নির্ধারন করবো। তারপর রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তাঁর ঘরে এলেন এবং বললেনঃ আমার সালাত আদায়ের জন্য কোন জায়গাটি তুমি ভালো মনে কর? তিনি ইশারা করে ঘরের জায়গা দেখিয়ে দিলেন। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) সেখানে সালার আদায় করলেন।
হাদিস ৬৩৫
আবদুল্লাহ ইবন আবদুল ওয়াহহাব (র.)………… আবদুল্লাহ ইবন হারিস (র.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, এক বৃষ্টির দিনে ইবন আব্বাস (রাঃ) আমাদের উদ্দেশ্যে খুৎবা দিচ্ছিলেন। মুয়াজ্জিন যখন ‘হাইয়া আলাস সালাহ’ পর্যন্ত পৌছলো, তখন তিনি তাঁকে বললেন, ঘোষণা করে দাও যে, সালাত যার যার আবাসে। এ শুনে লোকেরা একে অন্যের দিকে তাকাতে লাগল – যেন তারা বিষয়টিকে অপছন্দ করল। তিনি তাদের লক্ষ করে বললেন, মনে হয় তোমরা বিষয়টি অপছন্দ করছ। তবে, আমার চেয়ে যিনি উত্তম ছিলেন অর্থাৎ রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তিনিই এরূপ করেছেন। একথা সত্য যে জুমু’আর সালাত ওয়াজিব। তবে তোমাদের অসুবিধায় ফেলা আমি পছন্দ করি না। হাম্মাদ (র.)………… ইবন আব্বাস (রাঃ) থেকেও অনুরূপ বর্ণিত আছে। তবে এ সূত্রে এরূপ উল্লেখ আছে, আমি তোমাদের গুনাহর অভিযোগে ফেলতে পছন্দ করি না যে, তোমরা হাঁটু পর্যন্ত কাদা মাড়িয়ে আসবে।
হাদিস ৬৩৬
মুসলিম ইবন ইব্রাহীম (র.)………… আবু সালামা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি আবু সায়ীদ খুদরী (রাঃ) কে (শবে-কদর সম্পর্কে জিজ্ঞাসা) করলাম, তিনি বললেন, একখন্ড মেঘ এসে এমন ভাবে বর্ষণ শুরু করল যে, যার ফলে (মসজিদে নববীর) ছাদ দিয়ে পানি পড়া শুরু হল। কেননা, (তখন মসজিদের) ছাদ ছিল খেজুরের ডালের তৈরী। এমন সময় সালাতের ইকামত দেওয়া হল, আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) কে পানি ও কাদার উপর সিজদা করতে দেখলাম, এমন কি আমি তাঁর কপালেও কাদার চিহ্ন দেখতে পেলাম।
হাদিস ৬৩৭
আদম (র.) …………… আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি আনাস (রাঃ) কে বলতে শুনেছি, এক আনসারী (সাহাবী) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) কে বললেন আমি আপনার সাথে মসজিদে এসে সালাত আদায় করতে অক্ষম। তিনি ছিলেন মোটা। তিনি নবী (করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর জন্য কিছু খাবার তৈরি করলেন এবং তাঁকে বাড়িতে দাওয়াত করে নিয়ে গেলেন। তিনি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) কে এর জন্য এর জন্য একটি চাটাই পেতে দিলেন এবং চাটাইয়ের একপ্রান্তে কিছু পানি ছিটিয়ে দিলেন। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) সে চাটাইয়ের উপর দু’ রাকা’আত সালাত আদায় করলেন। জারুদ গোত্রীয় একব্যক্তি আনাস (রাঃ) কে জিজ্ঞাসা করল, নবী (করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) কি চাশতের সালাত আদায় করতেন নাকি? তিনি বললেন, সে দিন ব্যতীত আর কোন দিন তাঁকে তা আদায় করতে দেখিনি।
হাদিস ৬৩৮
মুসাদ্দাদ (র.)………… আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী (করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ যখন রাতের খাবার উপস্থিত করা হয়, আর সে সময় সালাতের ইকামত হয়ে যায়, তখন প্রথমে খাবার খেয়ে নাও।
হাদিস ৬৩৯
ইয়াহইয়া ইবন বুকাইর (র.)………… আনাস ইবন মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ বিকেলের খাবার পরিবেশন করা হলে মাগরিবের সালাতের আগে তা খেয়ে নিবে। খাওয়া রেখে সালাতে তাড়াহুড়া করবে না।