হাদিস ৬১৯
আবুল ইয়ামান (র.) ………… আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) কে বলতে শুনেছি যে, জামা’আতের সালাত তোমাদের কারো একাকি সালাত থেকে পঁচিশ গুণ বেশি মর্তবা রাখে। আর ফজরের সালাতে রাতের ও দিনের ফিরিশতারা সম্মিলিত হয়। তারপর আবু হুরায়রা (রাঃ) বলতেন, তোমরা চাইলে (এর প্রমান স্বরূপ) ফজরের সালাতে উপস্থিত হয় (ফিরিশতাগণ) এ আয়াত পাঠ কর। শুয়াইব (র.) বলেন, আমাকে নাফি (র.) আবদুল্লাহ ইবন উমর (রাঃ) থেকে বর্ননা করে শুনিয়েছেন যে, জামা’আতের সালাত একাকী সালাতের থেকে সাতাশ গুণ বেশি মর্তবা রাখে।
হাদিস ৬২০
উমর ইবন হাফস (র.)……… উম্মে দারদা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, একদিন আবু দারদা (রাঃ) রাগান্বিত অবস্থায় আমার নিকট আসলেন। আমি জিজ্ঞাসা করলাম, কিসে তোমাকে রাগান্বিত করেছে? তিনি বললেন, আল্লাহর কসম মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) উম্মতের মধ্যে জামা’আতে সালাত আদায় করা ব্যতিত তাঁর তরীকার আর কিছুই দেখছি না। (এখন এতেও ত্রুটি দেখছি)
হাদিস ৬২১
মুহাম্মদ ইবন আলা (র.)…………… আবু মুসা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী (করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন (মসজিদ থেকে) যে যত বেশি দূরত্ব অতিক্রম করে সালাতে আসে, তার তত বেশি সাওয়াব হবে। আর যে ব্যক্তি ইমামের সাথে সালাত আদায় করা পর্যন্ত অপেক্ষা করে, তার সাওয়াব সে ব্যক্তির চাইতে বেশি, যে একাকী সালাত আদায় করে ঘুমিয়ে পড়ে।
হাদিস ৬২২
কুতাইবা (র.)…………… আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ এক ব্যক্তি রাস্তা দিয়ে চলার সময় একটি কাটাযুক্ত ডাল দেখে তা সরিয়ে ফেলল। আল্লাহ্তা’লা তার এ কাজ সাদরে কবুল করে তার গুনাহ মাফ করে দিলেন। এরপর রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ শহীদ পাঁচ প্রকার –
১. প্লেগে মৃত ব্যক্তি
২. কলেরায় মৃত ব্যক্তি
৩. নিমজ্জিত ব্যক্তি
৪. চাপা পড়ে মৃত ব্যক্তি
৫. আল্লাহর পথে (জিহাদে) শহীদ।
তিনি আরো বলেছেনঃ মানুষ যদি আযান দেওয়া, প্রথম কাতারে সালাত আদায় করার কী ফযিলত তা জানত, কুরআহর মাধ্যমে সিদ্ধান্ত গ্রহণ ছাড়া সে সুযোগ না পেত, তাহলে কুরআহর মাধ্যমে হলেও তারা সে সুযোগ গ্রহণ করত আর আওয়াল ওয়াক্ত (যোহরের সালাতে যাওয়ার) কী ফযিলত তা যদি মানুষ জানত, তাহলে এর জন্য তারা অবশ্যই সর্বাগ্রে যেত। আর ইশা ও ফজরের সালাত (জামা’আতে) আদায়ে কী ফযিলত, তা যদি তারা জানত তা হলে হামাগুড়ি দিয়ে হলেও তারা (জামা’আতে) উপস্থিত হতো।
হাদিস ৬২৩
মুহাম্মদ ইবন আবদুল্লাহ ইবন হাওশাব (র.)…………… আনাস ইবন মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ হে বনী সালিমা! তোমরা কি (স্বীয় আবাস স্থল থেকে মসজিদে আসার পথে) তোমাদের পদচিহ্নগুলোর সাওয়াবের কামনা কর না? ইবন মারিয়াম (র.) আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, বনী সালিমা গোত্রের লোকেরা নিজেদের ঘর-বাড়ী ছেড়ে নবী (করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর কাছে এসে বসতি স্থাপন করতে চেয়েছিল। আনাস (রাঃ) বলেন, কিন্তু মদীনার কোন এলাকা একেবারে শূন্য হওয়াটা নবী (করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) পছন্দ করেন নাই। তাই তিনি বললেনঃ তোমরা কি (মসজিদে আসা যাওয়ায়) তোমাদের পদচিহ্নগুলোর সাওয়াব কামনা কর না? কুরআনে উল্লেখিত ‘আসার’ শব্দের ব্যাখ্যা সম্পর্কে মুজাহিদ (র.) বলেন, ‘আসার’ অর্থ পদক্ষেপ। অর্থাৎ যমীনে পায়ে চলার চিহ্নসমূহ।
হাদিস ৬২৪
উমর ইবন হাফস (র.)…………… আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ মুনাফিকদের উপস ফজর ও ইশার সালাতের চাইতে অধিক ভারী সালাত আর নেই। এ দু’ সালাতের কি ফযিলত, তা যদি তারা জানত, তা হলে হামাগুড়ি দিয়ে হলেও তারা (জামা’আতে) উপস্থিত হতো। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেনঃ আমি সংকল্প করছিলাম যে, মুয়াজ্জিন কে ইকামত দিতে বলি এবং কাউকে লোকদের ইমামতি করতে বলি, আর আমি নিজে একটি আগুনের মশাল নিয়ে গিয়ে এরপর ও যারা সালাতে আসেনি, তাদের উপর আগুন ধরিয়ে দেই।
হাদিস ৬২৫
মুসাদ্দাদ (র.)…………… মালিক ইবন হুওয়াইরিস (রাঃ) সূত্রে নবী (করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, যখন সালাতের সময় হয়, তখন তোমাদের দু’জনের একজন আযান দিবে ও ইকামত বলবে। তারপর তোমাদের দু’জনের মধ্যে যে অধিক বয়স্ক সে ইমামতি করবে।
হাদিস ৬২৬
আবদুল্লাহ ইবন মাসলামা (র.)…………… আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ তোমাদের কেউ যতক্ষণ তার সালাতের স্থানে থাকে তার উজু ভঙ্গ না হওয়া পর্যন্ত তার জন্য ফিরিশতা গণ এ বলে দোয়া করতে থাকে যে, ইয়া আল্লাহ্! আপনি তাঁকে মাফ করে দিন, ইয়া আল্লাহ্! আপনি তার উপর রহম করুণ। আর তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি সালাতই তাকে বাড়ি ফিরে যাওয়া থেকে বিরত রাখে, সে সালাতে রত আছে বলে গণ্য হবে।