হাদিস ৬০৯
মুসলিম ইবন ইব্রাহীম (র.) ………… আবু কাতাদা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ সালাতের ইকামাত হলে আমাকে না দেখা পর্যন্ত তোমরা দাঁড়াবে না।
হাদিস ৬১০
আবু নু’আইম (র.)…………… আবু কাতাদা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ সালাতের ইকামাত হলে আমাকে না দেখা পর্যন্ত তোমরা দাঁড়াবে না। ধীরস্থিরতার প্রতি লক্ষ রাখা তোমাদের জন্য একান্ত আবশ্যক। আলী ইবন মুবারাক (র.) হাদীস বর্ণনায় শায়বান (র.) এর অনুসরণ করেছেন।
হাদিস ৬১১
আবদুল আযীয ইবন আবদুল্লাহ (র.)………… আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, একবার রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আপন হুজরা থেকে সালাতের জন্য তাশরীফ নিয়ে আসলেন। এদিকে সালাতের ইকামাত দেওয়া হয়েছে এবং কাতার সোজা করে নেওয়া হয়েছে, এমন কি তিনি মুসাল্লায় দাঁড়ালেন, আমরা তাকবীরের অপেক্ষা করছি, এমন সময় তিনি ফিরে গেলেন এবং বলে গেলেন তোমরা নিজ নিজ স্থলে অপেক্ষা কর। আমরা নিজ নিজ স্থানে অপেক্ষা করতে লাগলাম। শেষ পর্যন্ত তিনি তাশরিফ নিয়ে আসলেন, তাঁর মাথা মুবারক থেকে পানি টপকে পড়ছিলো এবং তিনি গোসল করে এসেছিলেন।
হাদিস ৬১২
ইসহাক (র.)…………… আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, (একবার) সালাতের ইকামাত দেয়া হয়ে গেছে, লোকেরা তাদের কাতার সোজা করে নিয়েছে, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বেরিয়ে আসলেনএবং সামনে এগিয়ে গেলেন, তখন তাঁর উপর গোসল ফরজ ছিল। তিনি বল্লেনঃ তোমরা নিজ নিজ এলাকায় অপেক্ষা কর। এরপর তিনি ফিরে গেলেন এবং গোসল করলেন, তারপর ফিরে আসলেন, তখন তাঁর মাথা মুবারক থেকে টপটপ করে পানি পড়ছিল। এরপর সবাইকে নিয়ে সালাত আদায় করলেন।
হাদিস ৬১৩
আবু নু’আইম (র.)…………… জাবির ইবনে আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, খন্দকের যুদ্ধের দিন হযরত উমর ইবন খাত্তাব (রাঃ) নবী (করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর নিকট এসে বললেন, ইয়া রাসূলুল্লাহ! আল্লাহর কসম! আমি সালাত আদায় করতে পারিনি, এমন কি সুর্য ডুবতে লাগলো, (জাবির (রাঃ) বলেন,) যখন কথা হচ্ছিল তখন এমন সময়, যে সাওম পালনকারী ইফতার করে ফেলেন। নবী (করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেনঃ আল্লাহর কসম! আমিও সে সালাত আদায় করিনি। তারপর নবী (করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ‘বুহতান’ নামক উপত্যকায় গেলেন, আমিও তাঁর সঙ্গে ছিলাম। সেখানে তিনি উযু করলেন এবং সূর্য ডুবে যাওয়ার পরে তিনি (প্রথমে) আসরের সালাত আদায় করলেন, এরপর তিনি মাগ্রিবের সালাত আদায় করলেন।
হাদিস ৬১৪
আবু মা’মার আবদুল্লাহ ইবন আমর (র.)………… আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, সালাতের ইকামাত হয়ে গেছে তখনও নবী (করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) মসজিদের একপাশে একব্যক্তির সাথে একান্তে কথা বলছিলেন, অবশেষে যখন লোকদের ঘুম আসছিল তখন তিনি সালাতে দাঁড়ালেন।
হাদিস ৬১৫
আইয়্যাশ ইবন ওয়ালিদ (র.) ………… হুমাইদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, সালাতের ইকামাত হয়ে যাওয়ার পর কোন ব্যক্তির কথা বলা সম্পর্কে আমি সাবিত বুনানীকে জিজ্ঞাসা করলাম। তিনি আমাকে আনাস ইবন মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত একটি হাদীস শুনালেন। তিনি বলেন, সালাতের ইকামাত দেওয়া হয় এমন সময় এক ব্যক্তি নবী (করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর কাছে এলো এবং সালাতের ইকামাতের পর তাঁকে ব্যস্ত রাখল। আর হাসান বাসরী (র.) বলেন, কোন মা যদি তার সন্তানের প্রতি স্নেহবশত ইশার সালাত জামা’আতে আদায় করতে নিষেধ করে, তবে এ ব্যাপারে সন্তান তাঁর মায়ের আনুগত্য করবে না।
হাদিস ৬১৬
আবদুল্লাহ ইবন ইউসুফ (র.)…………… হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ যে মহান সত্তার হাতে আমার প্রাণ, তাঁর কসম! আমার ইচ্ছা হয়, জ্বালানি কাঠ সংগ্রহ করতে আদেশ দেই, তারপর সালাত কায়েমের নির্দেশ দেই, এরপর সালাতের আযান দেওয়া হোক, তারপর এক ব্যক্তিকে লোকদের ইমামতি করার নির্দেশ দেই। এরপর আমি লোকদের কাছে যাই এবং তাদের (যারা সালাতে শামিল হয় নাই) ঘর জ্বালিয়ে দেই। যে মহান সত্তার হাতে আমার প্রাণ, তাঁর কসম! যদি তাদের কেউ জানত যে, একটি গোশতহীন মোটা হাঁড় বা ছাগলের ভালো দুটি পা পাবে তাহলে অবশ্যই সে ইশার জামা’য়াতে হাযির হত।
হাদিস ৬১৭
আবদুল্লাহ ইবন ইউসুফ (র.)………… আবদুল্লাহ ইবন উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ জামা’আতে সালাতের ফযিলত একাকীএ আদায়কৃত সালাতের থেকে সাতাশ’ গুণ বেশি।
হাদিস ৬১৮
মুসা ইবন ইসমাইল (র.) …………… আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ কোন ব্যক্তির জামা’আতের সাথে সালাতের সাওয়াব, তাঁর নিজের ঘরে বাজারে আদায়কৃত সালাতের সাওয়াব দ্বিগুণ করে ২৫ গুন বাড়িয়ে দেয়া হয়। এর কারণে এই যে, সে যখন উত্তমরূপে উযু করল, তারপর একমাত্র সালাতের উদ্দেশ্যে মসজিদে রওয়ানা করল তখন তাঁর প্রতি কদমের বিনিময়ে একটী মর্তবা বৃদ্ধি করা হয় এবং একটি গুনাহ মাফ করা হয়। সালাত আদায়ের পর সে যতক্ষণ নিজ সালাতের স্থানে থাকে, ফিরিশতাগণ তার জন্য এ বলে দু’আ করতে থাকেন- “হে আল্লাহ্! আপনি তার উপর রহমত বর্ষণ করুণ এবং তার প্রতি অনুগ্রহ করুণ। “আর তোমাদের কেউ যতক্ষণ সালাতের অপেক্ষায় থাকে ততক্ষণ পর্যন্ত সে সালাতে রত বলে গণ্য হয়।