হাদিস ৬০০
মু’আল্লা ইবনে আসাদ রহ……….মালিক ইবনে হুয়াইরিস রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি আমার গোত্রের কয়েকজন লোকের সঙ্গে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে এলাম এবং আমরা তাঁর নিকট বিশ রাত অবস্থান করলাম। নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অত্যন্ত দয়ালু ও বন্ধু ছিলেন। তিনি যখন আমাদের মধ্যে নিজ পরিজনের কাছে ফিরে যাওয়ার আগ্রহ লক্ষ্য করলেন, তখন তিনি আমাদের বললেন : তোমরা পরিজনের কাছে ফিরে যাও এবং তাদের মধ্যে বসবাস কর, আর তাদের দীন শিক্ষা দিবে এবং সালাত আদায় করবে। যখন সালাতের সময় উপস্থিত হয়, তখন তোমাদের একজন আযান দিবে এবং তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি বয়সে বড় সে ইমামতি করবে।
হাদিস ৬০১
মুসলিম ইবনে ইবরাহীম (র.)…… আবু যার (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমরা এক সফরে নবী (করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর সঙ্গে ছিলাম। মুয়াজ্জিন আযান দিতে চাইলে তিনি বললেনঃ ঠাণ্ডা হতে দাও। কিছুক্ষন পর মুয়াজ্জিন আবার আযান দিতে চাইলে তিনি বললেন, ঠাণ্ডা হতে দাও। তারপর সে আবার আযান দিতে চাইলে তিনি বললেন, ঠাণ্ডা হতে দাও। এভাবে বিলম্ব করতে করতে টিলাগুলোর ছায়া তার সমান হয়ে গেল। পরে (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেনঃ উত্তাপের তীব্রতা জাহান্নামের নিঃশ্বাসের ফল।
হাদিস ৬০২
মুহাম্মদ ইবনে ইউসুফ (র.)……… মালিক ইবনে হুওয়ায়রিস (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, দু’জন লোক সফরে যাওয়ার ইচ্ছা ব্যক্ত করার জন্য নবী (করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর কাছে এল। নবী (করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তাদের বললেনঃ তোমরা উভয় যখন সফরে বেরুবে (সালাতের সময় হলে) তখন আযান দিবে, এরপর ইকামত দিবে এবং তোমাদের উভয়ের মধ্যে যে বয়সে বড় সে ইমামতি করবে।
হাদিস ৬০৩
মুহাম্মদ ইবনে মুসান্না (র.)……… মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমরা সমবয়সী একদল যুবক নবী (করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর কাছে হাযির হলাম। বিশ দিন ও বিশ রাত আমরা তাঁর নিকট অবস্থান করলাম। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) অত্যন্ত দয়ালু ও নম্র স্বভাবের লোক ছিলেন। তিনি যখন বুঝতে পারলেন যে, আমরা আমাদের পরিজনের কাছে ফিরে যেতে চাই বা ফিরে যাওয়ার জন্য উৎসুক হয়ে পড়েছি। যখন তিনি আমাদের জিজ্ঞাসা করলেন, আমরা আমাদের পিছনে কাদের রেখে এসেছি। আমরা তাঁকে জানালাম। তারপর তিনি বল্লেনঃ তোমরা তোমাদের পরিজনের কাছে ফিরে যাও এবং তাদের মধ্যে বসবাস কর। আর তাদের (দীন) শিক্ষা দাও এবং (সৎ কাজের) নির্দেশ দাও। (বর্ণনাকারী বলেন) মালিক (রাঃ) আরও কয়েকটি বিষয় উল্লেখ করেছিলেন যা আমার মনে আছে বা মনে নেই। তারপর নবী (করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছিলেনঃ তোমরা আমাকে যেভাবে সালাত আদায় করতে দেখেছ সেভাবে সালাত আদায় করবে। সালাতের সময় উপস্থিত হলে তোমাদের একজন যেন আযান দেয় এবং তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি বয়সে বড় সে যেন তোমাদের ইমামতি করে।
হাদিস ৬০৪
মুসাজ্জাদ (র.)……… নাফি’ (র.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, প্রচন্ড এক শীতের রাতে ইবন উমর (রাঃ) যাজনান নামক স্থানে আযান দিলেন। এরপর তিনি ঘোষণা করলেনঃ তোমরা আবাস স্থলেই সালাত আদায় করে নাও। পরে তিনি আমাদের জানালেন যে, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) সফরের অবস্থায় বৃষ্টি অথবা প্রচন্ড শীতের রাতে মুয়াজ্জিনকে আযান দিতে বললেন এওং সাথে সাথে একথাও ঘোষণা করতে বললেন যে, তোমরা আবাসে সালাত আদায় করে নাও।
হাদিস ৬০৫
ইসহাক (র.) ………… আবু জুহায়ফা (রাঃ)থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, একবার রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) কে আবতাহ নামক স্থানে দেখলাম, বিলাল (রাঃ) একটি বর্শা নিয়ে বেরুলেন। অবশেষ আবতাহে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর সামনে তা পূতে দিলেন, এরপর সালাতের ইকামত দিলেন।
হাদিস ৬০৬
মুহাম্মদ ইবনে ইউসুফ (র.)……… আবু জুহায়ফা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, তিনি বিলাল (রাঃ) কে আযান দিতে দেখেছেন। (এরপর তিনি বলেন) তাই আমি তাঁর (বিলালের) ন্যায় আযানের মাঝে মুখ এদিক সেদিক (ডানে-বামে) ফিরাই।
হাদিস ৬০৭
আব নু’আইম (র.)……… আবু কাতাদা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, একবার আমরা নবী (করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর সঙ্গে সালাত আদায় করছিলাম। হঠাত তিনি লোকদের (আগমনের) আওয়াজ শুনতে পেলেন। সাতাল শেষে তিনি জিজ্ঞাসা করলেন তোমাদের কি হয়েছিল? তারা বললেন, আমরা সালাতের জন্য তাড়াহুড়া করে আসছিলাম। (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেনঃ এরুপ করবে না। যখন সালাতে আসবে ধীরস্থিরভাবে আসবে (ইমামের সাথে) যতটুকু পাও আদায় করবে, আর যতটুকু ফাওত হয়ে যায় তা (ইমামের সালাম ফেরানোর পর) পূরা করে নিবে।
হাদিস ৬০৮
আদম (র.) …………… আবু হুরায়রা (রাঃ) সূত্রে নবী (করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, যখন তোমরা ইকামত শুনতে পাবে, তখন সালাতের দিকে চলে আসবে, তোমাদের উচিত ধীরস্থীরতা ও গাম্ভীর্যতা বজায় রাখা। তাড়াহুড়া করবেনা। ইমামের সাথে যতটুকু পাও তা আদায় করবে, আর ছুটে যায় তা পূরা করে নিবে।