হাদিস ৫৭৭
মাহমূদ ইর্বন গায়লান (র.)……নাফি (র.) থকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ইব্ন উমর (রা.) বলতেন যে, মুসলমানগন যখন মদীনায় আগমন করেন, তখন তাঁরা সালাতের সময় অনুমান করে সমবেত হতেন। এর জন্য কোন ঘোষণা দেওয়া হতো না। একদিন তাঁরা এ বিষয়ে আলোচনা করলেন। কয়েকজন সাহাবী বললেন, নাসারাদের ন্যায় নাকূস বাজানোর ব্যবস্থা করা হোক। আর কয়েকজন বললেন, ইয়াহূদীদের শিঙ্গার ন্যায় শিঙ্গা ফোকানোর ব্যবস্থা করা হোক। উমর(রা.) বললেন, সালাতের ঘোষণা দেওয়ার জন্য তোমরা কি একজন লোক পঠাতে পার না? তখন রাসূলুল্লাহ্(সা.) বললেনঃ হে বেলাল, উঠ এবং সালাতের জন্য ঘোষণা দাও।
হাদিস ৫৭৮
সুলাইমান ইব্ন হারব্(র.)……আনাস (রা.) থকে বর্ণিত, তিনি বলেন, বিলাল (রা.)- কে আযানের শব্দ দু’বার এবং ব্যতীত ইকামাতের শব্দগুলো বেজোড় করে বলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।
হাদিস ৫৭৯
মুহাম্মদ(র.)……আনাস ইব্ন মালিক (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, মুসলিমগণের সংখ্যা বৃদ্ধি পেলে তাঁরা সালাতের সময়ের জন্য এমন কোন সংকেত নির্ধারণ করার প্রস্তাব দিলেন, যার সাহায্যে সালাতের সময় উপস্থিত এ কথা বুঝা যায়। কেউ কেউ বললেন, আগুন জ্বালানো হোক, কিংবা ঘণ্টা বাজানো হোক। তখন বিলাল (রা.) – কে আযানের শব্দগুলো দু দু’বার এবং ইকামতের শব্দগুলো বেজোড় বলার নির্দেশ দেওয়া হলো।
হাদিস ৫৮০
আলী ইব্ন আবদুল্লাহ্(র.)……আনাস (রা.) থকে বর্ণিত, তিনি বলেন, বিলাল (রা.)-কে আযানের বাক্যগুলো দু’ দু’বার এবং ইকামতের শব্দগুলো বেজোড় বলার নির্দেশ দেওয়া হলো। ইসমায়ীল (র.) বলেন, আমি এ হাদীস আইয়্যূবের নিকট বর্ণনা করলে তিনি বলেন, তবে ‘কাদ্কামাতিস্সালাতু’ ব্যতীত।
হাদিস ৫৮১
আবদুল্লাহ্ইব্ন ইউসুফ (র.)……আবূ হুরায়রা (রা.) থকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্(সা.) বলেছেনঃ যখন সালাতের জন্য আযান দেওয়া হয়, তখন শয়তান হাওয়া ছেড়ে পলায়ণ করে, যাতে সে আযানের শব্দ না শোনে। যখন আযান শেষ হয়ে যায়, তখন সে আবার ফিরে আসে। আবার যখন সালাতের জন্য ইকামত বলা হয়, তখন আবার দূরে সরে যায়। ইকামত শেষ হলে সে পুনরায় ফিরে এসে লোকের মনে কুমন্ত্রণা দেয় এবং বলে এটা স্মরণ কর, ওটা স্মরণ কর, বিস্মৃত বিষয়গুলো সে স্মরণ করিয়ে দেয়। এভাবে লোকটি এমন পর্যায়ে পৌছে যে, সে কয় রাকাআত সালাত আদায় করেছে তা মনে করতে পারে না।
হাদিস ৫৮২
আবদুল্লাহ্ইব্ন ইউসুফ (র.)……আবদুল্লাহ্ইব্ন আবদুর রহমান আনসারী মাযিনী (র.) থকে বর্ণিত, যে আবূ সায়ীদ খুদ্রী (রা.) তাঁকে বললেন, আমি দেখছি তুমি বক্রী চরানো এবং বন-জঙ্গলকে ভালবাস। তাই তুমি যখন বক্রী নিয়ে থাক, বা বন-জঙ্গলে থাক এবং সালাতের জন্য আযান দাও, তখন উচ্ছকণ্ঠে আযান দাও। কেননা, জিন্, ইনসান বা যে কোন বস্তুই যতদূর পর্যন্ত মুয়াযযিনের আওয়ায শুনবে, সে কিয়ামতের দিন তার পক্ষে সাক্ষ্য দিবে। আবূ সায়ীদ (রা.) বলেন, একথা আমি রাসূলুল্লাহ্(সা.)-এর কাছে শুনেছি।
হাদিস ৫৮৩
কুতাইবা ইব্ন সায়ীদ (র.) আনাস (রা.) থকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ্(সা.) যখনই আমাদের নিয়ে কোন গোত্রের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে যেতেন, ভোর না হওয়া পর্যন্ত অভিযান পরিচালনা করতেন না বরং লক্ষ্য রাখতেন, যদি তিনি তখন আযান শুনতে পেতেন, তাহলে তাদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করা থেকে বিরত থাকতেন। আর যদি আযান শুনতে না পেতেন, তাহলে অভিযান চালাতেন। আনাস (রা.) বলেন, আমারা খায়বারের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হলাম এবং রাতের বেলায় তাদের সেখানে পৌছলাম। যখন প্রভাত হল এবং তিনি আযান শুনতে পেলেন না; তখন রাসূলুল্লাহ্(সা.) সাওয়ার হলেন। আমি আবূ তালহা (রা.)-এর পিছনে সাওয়ার হলাম। আমার পা, নবী (সা.) –এর কদম মুবারকের সাথে লেগে যাচ্ছিল। আনাস (রা.) বলেন, তারা তাদের থলে ও কোদাল নিয়ে বেরিয়ে আমাদের দিকে আসল। হঠাৎ তারা যখন নবী (সা.) কে দেখতে পেল, তখন বলে উঠল, ‘এ যে মুহাম্মদ (সা.), আল্লাহর শপথ! মুহাম্মদ (সা.) তাঁর পঞ্চ বাহিনী সহ!’ আনাস (রা.) বলেন, রাসূলুল্লাহ্(সা.) তাদের দেখে বলে উঠলেনঃ ‘আল্লাহু আকবর, আল্লাহু আকবর, খায়বার ধ্বংস হোক। আমরা যখন কোন কাওমের আঙ্গিনায় অবতরণ করি, তখন সতর্কীকৃতদের প্রভাত হবে কত মন্দ!’
হাদিস ৫৮৪
আব্দুল্লহাহ্ইব্ন ইউসুফ (র.)……আবূ সায়ীদ খুদরী (রা.) থকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ্(সা.) বলেছেনঃ যখন তোমরা আযান শুনতে পাও তখন মুয়ায্যিন যা বলে তোমরাও তার অনুরূপ বলবে।
হাদিস ৫৮৫
মু’আয ইব্ন ফাযালা (র.)……। ঈসা ইব্ন তালহা (রা.) থকে বর্ণিত, একদিন তিনি মু’আবিয়া (রা.)-কে (আযানের জবাব দিতে) শুনেছেন যে, তিনি ‘আশ্হাদু আন্না মুহাম্মাদার রাসূলুল্লাহ্’ পর্যন্ত মুয়ায্যিনের অনুরূপ বলেছেন।
হাদিস ৫৮৬
ইসহাক ইব্ন রাহওয়াই (র.)……ইয়াহ্ইয়া (র.) থকে অনুরূপ বর্ণিত আছে। ইয়াহ্ইয়া (র.) বলেছেন। আমার কোন ভাই আমার নিকট বর্ণনা করেছেন যে, মুয়ায্যিন যখন বলল, তখন তিনি (মু’আবিয়া (রা.)) বললেন। তারপর তিনি বললেন, তোমাদের নবী (সা.)-কে আমরা এরূপ বলতে শুনেছি।
হাদিস ৫৮৭
আলী ইব্ন আইয়্যাশ (র.)……জাবির ইব্ন আবদুল্লাহ্(রা.) থকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ্(সা.) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি আযান শুনে দু’আ করেঃ ‘হে আল্লাহ্এ পরিপূর্ণ আহবান ও সালাতের প্রতিষ্ঠিত মালিক, মুহাম্মাদ (সা.) –কে ওয়াসীলা ও সর্বোচ্চ মর্যাদার অধিকারী করুন এবং তাঁকে সে মাকেমে মাহমূদে পৌছিয়ে দিন যার অঙ্গিকার আপনি করেছেন’-কিয়ামতের দিন সে আমার শাফা’আত লাভের অধিকারী হবে।