হাদিস ৫২
আবদুল্লাহ্ ইব্ন মাসলাম (রঃ) ……… ‘উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেনঃ কাজ নিয়তের সাথে সম্পর্কিত এবং প্রত্যেক মানুষের প্রাপ্য তার নিয়ত অনুযায়ী। অতএব যার হিজরত হবে আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূলের উদ্দেশ্যে তার হিজরত আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের উদ্দেশ্যে হয়েছে বলেই গণ্য হবে। আর যার হিজরত হয় দুনিয়া হাসিলের জন্য বা কোন নারীকে বিয়ে করার জন্য, তার হিজরত সে উদ্দেশ্যেই গণ্য হবে যে উদ্দেশ্যে সে হিজরত করেছে।
হাদিস ৫৩
হাজ্জাজ ইব্ন মিনহাল (রঃ) ………. আবূ মাসউদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেনঃ মানুষ তার পরিবারের জন্য সওয়াবের নিয়তে যখন খরচ করে তখন তা হয় তার সদকা স্বরূপ।
হাদিস ৫৪
হাকাম ইব্ন নাফি’ (রঃ) …….. সা’দ ইব্ন আবূ ওয়াক্কাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ ‘তুমি আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের আশায় যা-ই খরচ কর না কেন, তোমাকে তার সওয়াব অবশ্যই দেওয়া হবে। এমনকি তুমি তোমার স্ত্রীর মুখে যা তুলে দাও, তারও।’
হাদিস ৫৫
মুসাদ্দাদ (রঃ) …….. জারীর ইব্ন আবদুল্লাহ আল বাজলী (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ আমি রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর হাতে বায়’আত গ্রহণ করেছি সালাত কায়েম করার, যাকাত দেওয়ার এবং সকল মুসলিমের কল্যাণ কামনা করার।
হাদিস ৫৬
আবূ নু‘মান (রঃ) ……… যিয়াদ ইব্ন ‘ইলাকা (রঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ মুগীরা ইব্ন শু’বা (রাঃ) যেদিন ইন্তিকাল করেন সেদিন আমি জারীর ইব্ন আবদুল্লাহ (রাঃ) এর কাছ থেকে শুনেছি, তিনি (মিম্বরে) দাঁড়িয়ে আল্লাহর হামদ ও সানা বর্ণনা করে বললেন, তোমরা ভয় কর এক আল্লাহ্কে যাঁর কোন শরীক নাই, এবং নতুন কোন আমীর না আসা পর্যন্ত শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখ, অনতিবিলম্বে তোমাদের আমীর আসবেন। এরপর জারীর (রাঃ) বললেন, তোমাদের আমীরের জন্য মাগফিরাত কামনা কর, কেননা তিনি ক্ষমা করা ভালবাসতেন। তারপর বললেন, একবার আমি রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর কাছে এসে বললাম, আমি আপনার কাছে ইসলামের বায়’আত গ্রহণ করতে চাই। তিনি (অন্যান্য বিষয়ের সাথে) আমার উপর শর্ত আরোপ করলেনঃ আর সকল মুসলমানের কল্যাণ কামনা করবে। তারপর আমি তাঁর কাছে এ শর্তের উপর বায়’আত গ্রহণ করলাম। এ মসজিদের রবের কসম! আমি তোমাদের কল্যাণকামী। এরপর তিনি আল্লাহর কাছে মাগফিরাত কামনা করলেন এবং (মিম্বর থেকে) নেমে গেলেন।
ইল্ম অধ্যায় (০৫৭-১৩৬)
missing
উযূ অধ্যায় (১৩৭-২৪৫)
হাদিস ১৩৭
ইসহাক ইবন ইবরাহীম আল-হানযালী (র)… আবূ হুরায়রা (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ রাসূলাল্লাহ বলেছেনঃ ‘যে ব্যক্তির হাদস হয় তাঁর সালাত কবুল হবে না, যতক্ষন না সে উযূ করে। হাযরা-মাওতের এক ব্যক্তি বলেন, ‘হে আবূ হুরায়রা! হাদস কী?’ তিনি বলেন, ‘নিঃশব্দে বা সশব্দে বায়ু বের হওয়া।’
হাদিস ১৩৮
ইয়াহিয়া ইবন বুকায়র (র)… নু‘আয়ম মুজমির (র) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ আমি আবূ হুরায়রা (রা)- এর সঙ্গে মসজিদের ছাদে উঠলাম। তারপর তিনি উযূ করে বললেনঃ ‘আমি রাসূলুল্লাহ কে বলতে শুনেছি, কিয়ামতের দিন আমার উম্মাতকে এমন অবস্থায় ডাকা হবে যে, উযূর প্রভাবে তাদের হাত-পা ও মুখমণ্ডল থাকবে উজ্জ্বল। তাই তোমাদের মধ্যে যে এ উজ্জ্বলতা বাড়িয়ে নিতে পারে, সে যেন তা করে।’
হাদিস ১৩৯
‘আলী (র)… ‘আব্বাদ ইবন তামীম (র)- এর চাচা থেকে বর্ণিত, একবার রাসূলুল্লাহ- এর কাছে এক ব্যক্তি সম্পর্কে বলা হল যে, তার মনে হয়েছিল যেন সালাতের মধ্যে কিছু হয়ে হিয়েছিল। তিনি বললেনঃ সে যেন ফিরে না যায়, যতক্ষণ না শব্দ শোনে বা গন্ধ পায়।
হাদিস ১৪০
‘আলী ইবন আবদুল্লাহ (র)… ইবন ‘আব্বাদ (রা) থেকে বর্ণিত, একবার নবী ঘুমিয়েছিলেন, এমনকি তাঁর নিঃশ্বাসের শব্দ হতে লাহল। এরপর তিনি সালাত আদায় করলেন। সুফিয়ান (র) আবার কখনো বলেছেন, তিনি শুয়ে পড়লেন, এমনকি তাঁর নিঃশ্বাসের শব্দ হতে লাহল। এরপর তিনি সালাত আদায় করলেন। অন্য সূত্রে সুফিয়ান (র)ইবন ‘আব্বাদ (রা) থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেনঃ আমি এক রাতে আমার খালা মায়মূনা (রা)- এর কাছে রাত কাটালাম। রাতে নবী ঘুম থেকে উঠলেন এবং রাতের কিছু অংশ চলে যাবার পর রাসূলুল্লাহ একটি ঝুলন্ত মসক থেকে হাল্কা উযূ করলেন। রাবী ‘আমর (র) বলেন, তখন তিনি যেভাবে উযূ করেছেন আমিও সেভাবে উযূ করলাম এবং এসে তাঁর বাঁয়ে দাঁড়িয়ে গেলাম। সুফিয়ান (র) কখনো (বাম) শব্দের স্থলে বলতেন। তারপর তাসূলুল্লাহ আমাকে ঘুরিয়ে তাঁর ডান দিকে দাঁড় করালেন। এরপর আল্লাহর যতক্ষণ ইচ্ছা ততক্ষণ তিনি সালাত আদায় করলেন। এরপর কাত হয়ে ঘুমিয়ে পড়লেন, এমনকি তাঁর নাক ডাকতে থাকল। এরপর মুয়াযযিন এসে তাঁকে সালাতের কথা জানিয়ে দিলেন। তিনি তাঁর সঙ্গে সালাতের জন্য রওয়ানা হলেন এবং সালাত আদায় করলেন, কিন্তু উযূ করলেন না। আমরা ‘আমর (রা) –কে বললামঃ লোকে বলে যে, রাসূলুল্লাহ – এর চোখ ঘুমায় কিন্তু তাঁর অন্তর ঘুমায় না। তখন ‘আমর (রা) বলেন, ‘আমি উবায়দ ইবন ‘উমায়র (র) – কে বলতে শুনেছি, নবীগনের স্বপ্ন ওহী। এরপর তিনি তিলাওয়াত করেন- ‘আমি স্বপ্নে দেখেছি যে, তোমাকে যবেহ করছি। (৩৭ঃ১০২)